পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অসামান্য শ্ৰীপ্ৰবোধকুমার সান্তাল দুই দিকের প্রাস্তরের পরে বসন্তকালের মধ্যাহ্ন-রৌদ্র প্রখর হইয়া উঠিয়াছিল। ট্রেন চলিতেছে। দক্ষিণ দেশের গাড়ী, হাওড়া ষ্টেশন হইতে সকালে ছাড়িয়া আসিয়াছে। প্রথম শ্রেণীর ক্ষুদ্র কাম্রাথানিতে এতক্ষণ তিনজন যাত্রী ছিল। ইউরোপীয় ভদ্রলোকটি একটু আগে নামিয়া যাইবার পর এখন কেবল দুইজন পোষ্টাল স্বপারিন্টেণ্ডেণ্ট মিটার মুখার্জি ও র্তাহার স্ত্রী। মিষ্টার মুখার্জি কয়েক দিন ধরিয়া ডাকঘরগুলি পরিদর্শন করিয়া বেড়াইতেছেন, আরও দিন-দুই তাহার ডিউটি, তারপর স্বস্থানে ফিরিয়া যাইবেন। ‘তোমার এবার কষ্ট হচ্চে নীল, রোদে তোমার মুখ রাঙ হয়ে উঠেচে ? নীলা হাসিয়া কহিল, ‘তাই ত, উপায় ? ‘সত্যি ঠাট্ট নয়, মুখ রাঙা হয়েচে ? ‘আমার মুখ রাঙা হ’লে তুমি ত খুশী হও ? ধারালো তোমার বিদ্রুপ । কিন্তু রাগ করে না, আর মাত্র দু-দিন। তুমি সঙ্গে না থাকলে আমি কাজ করতে পারিনে নীলা ।” ‘কেন ? মিটার মুখার্জি উঠিয় একবার আলত ভাঙিয়া লইলেন, RSH's gifts ofton, ‘Woman’s beauty is the energy of a man.” থাকৃ, পুরুষমানুষের কাঙালপনা আমার সহ হয় না ? বলিয়া নীল তাহার জুতাপর পা দুইখানি স্বমুখের দিকে ছড়াইম্বা বসিল । ‘আ, এবার বাঁচলাম – মুখার্জি কহিলেন, ‘এত ছোট কাম্রায় বেশী লোক থাক...বাস্তবিক, লোকটা এতক্ষণ ই৷ ক'রে তাকাচ্ছিল তোমার দিকে ।” ‘কোন লোকটা ?” ‘এই ষে গে বসেছিল এখানে, সেই ফিরিদিটা...অসভ্য ? নীলা কহিল, “কই আমি ত লক্ষ্য করিনি ! তাকালেই বা, ক্ষয়ে ত যাক্টনি ? মিষ্টার মুখাজি বলিলেন, সে তুমি বুঝবে না কি রাগ হয় ? নীলা হাসিল । বলিল, ওট রাগ নয়, অন্য কিছু ’ ‘কি ? বিদ্বেষ ?’ ‘জানিনে। বলিয়া নীলা চুপ করিয়া রহিল। আবার কিংক্ষণ পরে কি একটা ষ্টেশনে আসিয়া গাড়ী দাড়াইল । অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসিয়া বসিয়া নীল ক্লাস্ত হষ্টম গেছে, এইবার সে গাড়ী হইতে নামিয়া একটুখানি ইটিমা বেড়াইতে লাগিল। আরদালি আসিয়া কিছু বরফ ও ফলমূল গাড়ীর ভিতরে ডিসের উপরে সাজাইম দিয়া গেল, পরে বাহিরে দাড়াইয়া সেলাম করিয়া জানিতে চাহিল, আর কিছু চাই কি না ! ‘নেহি ।” আরদালি চলিয়া যাইতেই বঁাশী বাজিল, নীলা আসিয়া উঠিল গাড়ীতে। দরজাট বন্ধ করিয়া মুখার্জি কহিলেন, ফুটবোর্ডে পা দিয়ে তুমি ওঠা-নাম করলেই আমার ভয় করে, কথন হয়ত যাবে পা ফকে. এসব ত তোমার অভেস নেই! তা ছাড়া শরীরও কাহিল, বড় ভাবনা হয় তোমার জস্ত নীল । মাথাটা ধরেচে একটু। নীল চোখ বুজিয়া কহিল। ‘তা ত ধরবেই—’ বলিয়া মুখার্জি ব্যস্ত হইয়া বরফ ও ফলের প্লেটুট আনিলেন । বলিলেন,-“তোমার শরীরের যত্ন হচ্চে না...এত ট্রাভল করা, চল ওখানে নেমেই ডাক্তারকে ডাকতে পাঠাৰ। কিছু নেবে এর থেকে ?” নীলা কেবল মাত্র এক টুকরা:বরফ তুলিয়া লইল । ‘তিন বছর হ’ল তোমাকে বিয়ে করেচি, কিন্তু আমি দেখচি তোমার শরীর তোমার মনের মতই ডেলিকেট, সেনসিটিভ ৷ কত যে ভাবি তোমার জন্তে ! অথচ একটুখানি আর