পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ של הלווין& 866. সংলগ্ন উদ্যানে কয়েকটি মুস্থ ও বলিষ্ঠ বালক-বালিকা খেল করিতেছে। পূৰ্ব্বদিক হইতে দক্ষিণ ও পশ্চিমে ঘন শালের জঙ্গল,—বসন্ত-বাতাসে থাকিয়া থাকিয়| সেই জঙ্গলের ভিতর মৰ্ম্মর শব্দ হইতেছিল। অপরাঃ হুষ্টয়া আসিয়াছে, কিমৃংক্ষণ বিশ্রাম করিয়া ও জলযোগ সারিয়া মিষ্টার মুখার্জি বাহির হইলেন। বলিয়৷ গেলেন, “বেশীক্ষণ আমার লাগবে না, ঘণ্টাপানেক মাত্র, তুমি ততক্ষণ ওদের একটু দেখিয়ে শুনিয়ে দাও নীলা । নীল কহিল, ‘চমৎকার জায়গা, আমার বেশ লাগচে । আরদালি ও বেয়ারা মিলিয়া রান্নার আয়োজন করিল, থাটে বিছানা পাতিল, ডিনারের টেবিল সাজাইল, আলোর ব্যবস্থা করিল। বাহিরের বারানায় একটা ইঞ্জি-চেয়ারে নীল নীরবে বসিয়াই রছিল, তাহাকে কিছুষ্ট নির্দেশ করিয়া দিতে হইল না। আরদালি আসিয়া তাহার হাতের কাছে চা ও জলপাবার রাপিয়া দিয়া গেল । কি রায় করবি রে ভন্ডু ? ভৰ্ত্ত কহিল, আলু-পটলের দম, ভাঙ্গ, আর ডিমের‘ন না, ডিম নয় বাবা।” ‘তবে মাংস করব, মা ? ‘তাই কর, তবে আমাকে বাদ দিয়ে করিস। তোর বাবুর ত মাংস নইলে থাওয়াই হয় না। আমার ওসব কিছু দরকার নেই । যে আঙ্গে। বলিয়া ভৰ্ত্ত মাসের ব্যবস্থা করিতে গেল । ঘণ্টাপানেকের মধ্যেই মিষ্টার মুখার্জি আসিম পৌছিলেন। বলিলেন, শরীর একটু সুস্থ হয়েচে নীলা? মাথাধরাটা ছেড়েচে ? খবর পাঠিয়েছি ডাক্তারকে, রাতে আসবেন । নীল কহিল, ‘ডাক্তারের আর কি দরকার ? ‘তুমি বোঝ না নীল, তুমি বুঝতে পার না তোমার শরীর। এখন প্রত্যেক দিন তোমাকে একজন ডাক্তারের ম্যাটেও করা উচিত, মাথাধর জিনিষটা ভয়ানক খারাপ। ‘এখন মাথা ভাল হয়ে গেছে ।” “আবার ধরতে পারে, এখন থেকে যদি সাবধান হওয় যায়—’ বলিয়া মুখার্কি ভিতরে ঢুকিয় তাহার টুপি, জাম ও ট্রাউজার ছাড়িতে লাগিলেন। নিকটে শালবনের ধারে ধারে ,একটু বেড়াইয়া আসিবার কথা হইল। নীল পরিল একখানি জরির পাড়-দেওয়া নীলাম্বরী ; মিটার মুখার্জি কোট-পাণ্ট ছাড়া চলিতে পারেন ন, অনেক অনুরোধে ও উপরোধে তিনি ক্টোচানো ধুতি, পাঞ্জাবী ও চাদর চড়াইম্বা বাহির হইয়া আসিলেন। স্বর্ঘ্যের আলো তখনও একেবারে নিম্প্রভ হয় নাই, ইহারষ্ট মধ্যে শালবনের পারে চাদ উঠিয়াছে ; বোপ করি পূর্ণিমার কাছাকাছি একটা কোনো তিথি হইবে । মাঠ পার হইয়৷ তাহার। রাঙামাটির পথের উপর উঠিম| আসিল । গাছপালার ফাক দিয়া রেলপথের টেলিগ্রাফের তারগুলি দেপ যাইতেছে । আশপাশে অরণ্যপুষ্পের একরূপ সংমিশ্রিত বিচিত্র গন্ধে পথের এলেমেলে| বাতাস ভারাক্রাস্ত হুইয়৷ উঠিয়াছিল। ‘এই বুঝি এদেশের বেড়াবার জায়গা, এইটুকু ? মুখার্জি কহিলেন, না, ভাল জায়গা আছে, ষ্টেশনের পৃপারে, ওপারেই বেশী লোকজনের বাস।” নীলা কহিল, চলন। ওইদিকেই যাওয়া যাক্ । মুখার্জি একবার হাতঘড়ির দিকে তাকাইলেন, পরে তাকাষ্টলেন আকাশের দিকে । তারপর বলিলেন, যেতে আপত্তি নেই, তবে এখন সাড়ে-ছ’ট, একটু দেরি হয়ে গেছে, -তাড়াতাড়ি ফিরে আসা দরকার।’ ‘চল ঘুরেষ্ট আসি, এলাম ত সব দেপেষ্ট যাই। আলো হবে, পথে অসুবিধে হবে না।’ দুই জনে ষ্টেশনে আসিয়া প্লাটফরম হইতে নামিয়া ট্রেনের লাইন অতি সাবধানে অতিক্রম করিল। সাড়ে-ছয়ট বাজিলেও প্রাস্তরের পরে দিনাস্তকালের দীপ্তিহীন আলো তপনও ঝিকিমিকি করিতেছে । পথে আসিম নামিতেই এক পাশ হুষ্টতে দুই তিনটি লোক তাঙ্গদের নমস্কার জানাইয়া সরিয়া গেল। পথ মুন্দর ও মঙ্কণ, দুইধারের বন কাটিয়৷ এক একখানি পাক ঘর তৈরি হইতেছে। দূরে বা নিকটে গ্রাম নাই, কেবল এখানে-ওখানে দুই চারপানি পাক বাংলায় গৃহস্থবাসের চিহ্ন দেখ বাষ্টতেছিল। পথের কোলেই একটি শীর্ণ জলধারানিশকে বহিয়া চলিয়াছে,কেউ বলে খাল, কেউ বলে নদী, তাহারই পুলের উপর দিয়া স্বামিস্ত্রী পার হুইয়া গেল। দেখিতে দেগিতে অন্ধকার হইয়া আসিল, চজালোক উজ্জল হইয়া উঠিল। পথে আলে৷ কোথাও নাট, মাঠের জঙ্গলে টাদের