পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৬২ & নৈগম-সমাজতন্ধের পথে অগ্রসর হইয়াছে ও কালক্রমে আধুনিক fচস্তানায়কগণের এই মতবাদ সমাজে গৃহীত হক্টতে পারে। জাতি ৪ কৰ্ম্মভেদের উপর প্রতিষ্ঠিত হিন্দুসমাজে আহেল বিলাতী গণতন্থের অনুকরণ অপেক্ষ নৈগম-সমাজতন্ধের প্রতিষ্ঠা সহজতর কাৰ্য্য বলিয়৷ আমার মনে হয়। ভারতীয় রাষ্ট্র, রেল প্রভৃতি যানবাহন ও সংবাদ আদানপ্রদানের উপায়গুলি, বনসমূহ ও ভূমির স্বামিত্ব অর্জন করিয়াছে। কে বলিতে পারে যে, যদি কোন দিন বলশেভিক-বাদ সত্যসত্যঙ্গ ভারতে প্রবেশ করিতে চেষ্টা পায় তবে তাহার সহিত নৈগম-সমাজতন্থের আপোস হইয় আমাদের দেশের জনসাধারণের মনস্তত্ব ও প্রখাচুৰ্যায়ী এক নববিধ রাষ্ট্রের উদ্ভব হুইবে না ? ভারতবর্যে নিগমসভা এককালে খুবষ্ট প্রভাববিস্তার করিয়াছিল ; ভারতের অন্তর-পুরুষ যেদিন অনুকরণের মোহনিদ্র ত্যাগ করিয়া জাগ্রত ও আত্মস্থ হইবেন, সেদিন আবার যে নৈগম-সমাজতন্ত্রের উপর রাষ্ট্রব্যবস্থা স্থাপিত হইবে ইহা অসম্ভব কল্পনা না-ও হইতে পারে। লেনিনবাদ লেনিনের মতবাদ বিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্র গু সমাজকে প্রবলভাবে আন্দোলিত করিয়াছে। একদল লোক লেনিনের মতবাদকে বাস্তবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য যথাসৰ্ব্বস্ব পণ করিয়াছে। তাঁহাদের দৃঢ়বিশ্বাস, বিশ্বমানবের মুক্তিসাধনার জন্ত লেনিনবাদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করা একান্ত প্রয়োজন । অপর একদল লোকও অন্তরের সহিত বিশ্বাস করে যে, সমাজে উচ্ছ স্থলতা ও নৈতিক উন্মাগগামিতা আনয়ন করিবার জন্তই লেনিনবাদের উৎপত্তি। লেনিনের মতবাদ লইয়৷ সপক্ষে ও বিপক্ষে যেরূপ আন্দোলন ও মতদ্বৈধ দেখা গিয়াছে, সেরূপ বিতর্ক ও বিতণ্ড৷ অন্য কোন মতবাদ লইয়া কোন যুগে উপস্থিত হয় নাই। তাহার উপকারিতা বা অপকারিতা সম্বন্ধে মতভেদ যথেষ্ট থাকিলেও বিংশ শতাব্দীর চিন্তাজগতে লেনিনের যে একটি বিশিষ্ট স্থান আছে সে-কথা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। আমরা প্রথমে লেনিনের মতবাদের মূলস্থত্রগুলি বিবৃত করিয়৷ পরে রুষিয়ার রাজনীতির মধ্যে তাহা কিরূপে প্রযুক্ত হইয়াছে ও কিরূপ ফল উৎপাদন করিয়াছে তাহার বিচার করিব । 泷 SSDBO বিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আবহাওয়ার মধ্যে লেনিনের মতবাদের জন্ম হইয়াছে । বিংশ শতাব্দীর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ধন ও ধনিকের যে প্রাধান্ত দুষ্ট হয় তাহাকে ক্যাপিটালিজম্ বলে। ধনিকপ্রাধান্তই রাষ্ট্ৰক্ষেত্রে নব সাম্রাজ্যবাদকে জন্ম দিয়াছে। লেনিন সাম্রাজ্যবাদকে ধনিক প্রাধান্তের মুম্‌ধু অবস্থা বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। তাহার মতে ধনিক প্রাধান্তের মধ্যে অনেকগুলি বিরোধ দেখা যায় -সেই বিরোধের সংঘাতে বিপ্লব অবশ্যম্ভাবী হুইয়া উঠে । সাম্রাজ্যবাদ ধনিক ও শ্রমিকের মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধান আরও ব্যাপক করিম তুলিয়াছে। ধনিকরা উৎপাদনের উপায়গুলি ট্রাষ্ট, সিণ্ডিকেট প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঙ্ঘের দ্বারা নিজেদের একচেটিয়া অধিকারে রাথিয়াছে। শ্রমিকেরা ট্রেড ইউনিয়ন, সমবায় রাজনৈতিক দল প্রভৃতির দ্বারা তাহাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিয়া বিশেষ কোন স্ববিধ আদায় করিতে পারিতেছে না। লেনিন বলেন, এরূপ অবস্থায় শ্রমিকেরা হয় ধনীদের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়া কায়ক্লেশে জীবনধারণ করিবে, না-হয় অত্যাচারে সংক্ষুব্ধ হইয় বিপ্লব করিবে। ধনিক-শ্রমিকের বিরোধ সম্বন্ধে লেনিনের এই মত কতটা যুক্তিসহ আমরা পরে তাহার বিচার করিব । দ্বিতীয়তঃ, সাম্রাজ্যবাদী বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় শক্তির মধ্যে ভীষণ বিরোধ দেখা দিয়াছে। প্রত্যেক রাষ্ট্রক্ট কলে তৈরি জিনিষের জন্ত কঁাচ মাল পাইতে আগ্রহাম্বিত । কাচা মাল যে-সকল দেশে উৎপন্ন হয়, সেই সব দেশে একচেটিয়া অধিকার স্থাপনপূর্বক টাকা খাটাইম লাভবান হইবার ইচ্ছা সকল শক্তির মনেষ্ট প্রবল। সেই জন্যই এক শক্তির স্বার্থের সহিত অপর শক্তির বিরোধ বাধিয় উঠে। পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ধনিক প্রাধান্তের ভিত্তি শিথিল হইয়া যায় ও শ্রমিক বিদ্রোহের পথ পরিষ্কৃত হয়। ধনিক-প্রাধান্ত তথা সাম্রাজ্যবাদের তৃতীয় বিরোধ বাধে কতিপয় তথাকথিত স্বসভ্য জাতির সহিত জগতের লক্ষ লক্ষ অধীন দেশবাসীর সংঘর্ষে । বিজেতাগণ বিজিত দেশের ধন আহরণ করিবার জন্ত রেলপথ স্থাপন, কলকারখানা