পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ বিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্ৰীয় চিন্তাধারা 8დს&) প্রতিষ্ঠা ও শিল্পবাণিজ্যের কেন্দ্রস্থান নিৰ্ম্মাণ করিয়৷ থাকে। তাহার ফলে বিজিত দেশে একদল বিত্তহীন শ্রমিকের ও বুদ্ধিজীবী নেতার উদ্ভব হয়। তাহারা অবহেলিত ও অবমানিত হইয়া জাতীয়ভাবে প্রণোদিত হয় ও দেশের মুক্তিসাধনে আত্মনিয়োগ করে। লেনিনের মতে এই আন্দোলনে অধীন দেশগুলি শ্রমিক বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হইয় উঠে। ধনিক-প্রাধান্তের এই তিন মূল বিরোধ যখন প্রধলরূপে দেখা দিয়াছিল, তখনই লেনিনের মতবাদ প্রচারের স্বযোগ উপস্থিত হইল। রুমিয়ার জারের অনুষ্ঠত নীতির ফলে এই তিন প্রকার বিরোধই প্রবলতম আকারে দেখা দিয়াছিল বলিয়| তথায় পাশ্চাত্য জগতের মধ্যে সৰ্ব্বপ্রথমে লেনিনবাদের প্রতিষ্ঠা হইল । লেনিনের মতবাদ একদিনে গঠিত হয় নাই। অনেকে মনে করেন, ১৯১৬ সালে মহাযুদ্ধের সময়ে রুযিয়ার দুরবস্থা দেখিয়া লেলিন শ্রমিক-বিদ্রোহের বাণী ঘোষণা করেন। কিন্তু লেনিন ১৯১৬ খৃষ্টাব্দের অনেক পূৰ্ব্ব হইতেই শ্রমিকবিদ্রোহের কথা ঘোষণা করিয়া আসিতেছিলেন । রুষ-জাপান যুদ্ধের সময় রুধিয়ায় প্রথম বিদ্রোহের স্বত্রপাত হয়। সেই >fag (FfF The Provisional Govornment zifR* প্রবন্ধে বলেন--আমাদের দলের এমন ভাবে কাজ করা উচিত যে, রুমিয়ার বিপ্লব যেন কয়েক মাস মাত্র স্থায়ী না হয়— ইহা যেন বহুবর্ষব্যাপী ব্যাপারে পরিণত হয়। ইহার উদ্দেশ্য ধেন কেবলমাত্র কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে কয়েকটি সুবিধা আদায় করা না হয় ; কিন্তু একেবারে সমস্ত কর্তৃত্বের ধ্বংসসাধন করাই লক্ষ্য হয়। আমরা যদি সফলকাম হষ্ট তবে বিপ্লবের আগুন ইউরোপের সৰ্ব্বত্র ছড়াইয় পড়িবে। পশ্চিম-ইউরোপের শ্রমিকগণ মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের অত্যাচারে জর্জরিত হইয়া বিদ্রোহ ঘোষণা করিবে। তাঁহাদের বিদ্রোহে রুষিয়ার বিপ্লব আরও শক্তিশালী হইবে ও কয়েক বৎসরের বিপ্লব বহুযুগব্যাপী হইবে ( গ্রন্থাবলী ৬ষ্ঠ খণ্ড )। বিপ্লব সৰ্ব্বপ্রথমে কোথায় আবিভূর্ত হইবে ? এই সম্বন্ধে লেনিন বলেন, যে-দেশে কলকারখানার খুব প্রসার হইয়াছে, সেই দেশেই যে বিপ্লবের প্রথম আবির্ভাব হইবে এরূপ কোন কথা নাই। বরং যেখানে কলকারখানার শক্তি প্রবল হইয়া উঠে নাই, সেখানেই বিপ্লবের স্বচনা হওয়া বেশী সম্ভব । “The ಅಣ್ಣಿ front will be broken where the chain of Imperialism is weakest, and it is there that the prolitarian revolution (which follows upon the defeat of imperialism) must begin.” (Irminism by Stalin) রুযিয়াম উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে কলকারখানার প্ৰবৰ্ত্তন হয় ও বলশেভিক বিপ্লবের পূৰ্ব্বে তাহার প্রসার কেবল কয়েকটি নগরে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু জারের যুধামান সাম্রাজনীতির ফলে শ্রমিকশ্রেণীর মধ্যে অসন্তোষের মাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। ধনিক-প্রাধান্য ব| রুষিয়ার সমাজে অনুপ্রবিষ্ট হয় নাই বলিয়াই সেখানে বিপ্লব উপস্থিত করা সম্ভবপর হইয়াছিল। লেনিনবাদিগণ বিশ্বাস করেন, রুযিয়ার পর "ভারতবসে বিপ্লব উপস্থিত হুইবে । এ সম্বন্ধে ষ্টালিন লিখিয়াছেন - “Where is the front likely to he brokeu mext : Again at the weakest point, obviously. Perhaps that will be in British India, where there is young and combative revolutionary proletariat allied to the champions of the movement for national liberation—a movement which is certainly very powerful. In India, luoreover, the anti-revolutionary forces are incorporated in a foreign imperialism which has completely forfeited moral credit and has incurred, the general hatred of the oppressed and exploited masses.” অর্থাৎ,--রুসিয়ার পর কোণ দিকে বিপ্লৰ বাধিবে ? নিশ্চয়ই যেপানে কলকারপানার প্রভাব এখনও দুৰ্ব্বল। সম্ভবতঃ ব্রিটিশভারতে ইহা অনুষ্ঠত হইবে। সেপানে তরুণ ও যুধ্যমান বিপ্লবী বিস্তুহীনদের সহিত জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতাদের মিলনে যে আন্দোলন উপস্থিত হইয়াছে তাহা নিশ্চয়ই খুব প্রবল ও শক্তিশালী। অধিকন্তু ভারতে বিপ্লববিরোধী শক্তি বিটিশ সাম্রাজ্যবাণের সচিs fমন্তি হষ্টয়াড়ে, আর সেই সাম্রাজ্যবাদ সম্পূর্ণরূপে নৈতিক শ্রদ্ধা ফারাষ্টয়াছে ও নির্যাতিষ্ঠ ও অপন্সন্ত জনসাধারণের বিম্বেলভাজন হষ্টয়াছে। ভারতবর্ষের জনগণের মনোবৃত্তি বুঝিতে ধে লেনিনবাদিগণ কতদূর অক্ষম তাহার পরিচয় ষ্টালিনের এই উক্তি হইতে পাওয়া যায়। ভারতবর্গের নবজাগ্রত শ্রমিকশক্তির পিছনে জাতীয় আন্দোলনের নেতার আছেন এ-কথা নিঃসন্দেহে বল। যায়, দেশের জনসাধারণ শোষণনীতির বিষময় প্রক্রিয়ার রহস্য কিছু কিছু বুঝিতে পারিতেছে এ-কথাও ঠিক ; কিন্তু ভারতবাসী বিত্তহীন সম্প্রদায় ধে বলশেভিক বিপ্লববাদের আশ্রয় গ্রহণ করিয়া ধনিক-প্রাধান্তের উচ্ছেদসাধনার্থ দণ্ডায়মান হুইবে ইহা কিছুতেই বলা যায় না। ভারতবর্ষ রুসিয়ার ন্যায় নুতন সভ্য দেশ নহে, ভারতবর্ষের পিছনে আছে তাহার অতীত “apitalism