পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৯২ কান্তি বলিল, ‘অর্থাৎ এর পূৰ্ব্বে প্রতি সন্ধ্যায় স্বর্ঘ্য গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করে অস্ত যেত, আজ রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। এটা শ্ৰীমতী রাইকিশোরীর একটা মস্ত আবিষ্কার! কান্তির এই রসিকতায় শঙ্কর হাসিল না। সে সুর্যের দিকে তাকাইয়া সেই অতুলনীয় শোভা দেখিতেছিল। আমার দিকে দৃষ্টি ফিরাইয়া বলিল, ‘বাস্তবিকই সুন্দর। তাহার এই প্রশংসমান দৃষ্টিতে আমার শরীর রোমাঞ্চিত হইল, এবং তাহার সহিত আমার যে দূরত্ব ছিল তাহ যেন একটু কমিয়া গেল । কান্তি ছাড়িবার পাত্র নহে, সে বলিল, “কিশোরের দেখাদেখি তোমরা সবাই যে কবি হয়ে উঠলে-আমরা যাই কোথায় ? শঙ্কর এবার তাঁহাকে ধমক দিয়া বলিল—যাও ঐ চুলোয়। একটা স্বন্দর জিনিষ দেখে উপভোগ করবার কালচার তোদের নেই, এই ত তোদের শিক্ষা ? কাস্তি ধমক খাইয়া দৃষ্টি নত করিল। শঙ্করের মেজাজের ঠিক ছিল না, সে হাসিতে হাসিতে হঠাৎ রাগিয়া উঠিত। কান্তি জবা হওয়ায় বিভূতি যেন একটু খুণী হইল। সে তাহার মনের ভাব গোপন করিবার জন্য বলিল, “আচ্ছ বল তে, স্বৰ্য্য অস্ত গেলে কার মনে দুঃথ হয় ? শঙ্কর কাস্তিকে প্রসন্ন করিবার জন্য তাহার দিকে চাহিয়৷ বলিল বল না তুই • কান্তি মুখ ভার করিয়া বলিল—‘জানিনে, কিশোর গুড বয় ; তাকে জিজ্ঞেস কর।’ আমি বলিলাম, কেন, আজ পণ্ডিতমশায় ক্লাসে যে সংস্কৃত শ্লোকটি লিখিয়ে দিয়েছেন, তাতেই ত আছে স্বর্ষোর বন্ধু পদ্ম, আর চন্দ্রের বন্ধু কুমুদ– শঙ্কর বলিল-“শ্লোকটি বড় সুন্দর— “গিরেী কলাপী গগনে পয়োদঃ লক্ষান্তরেহর্বশ জলেষু পদ্মঃ। ইন্দোৰ্লিক্ষং কুমুদ্রস্ত বন্ধু যে যন্ত মিত্ৰং নহি তন্ত দূরং।” . বিস্তৃতি বলিল, “তোমার শ্লোক গুনলাম, এবার একটা গান হোক ৷” শঙ্কর কাজিকে বলিল, “তুই একটা গা না।" SOBO কান্তি বলিল, “না, ভাই, আমার গলা ভাঙা, আমি পারব না।’ শঙ্কর বলিল, “রাগ হয়েছে। অমিয়, তুই তোর সেই ‘সোনার গগনে গানটা গা।" তখন অমিয় সেই গানটি গাহিল। গান শেষ হইলে আমরা একসঙ্গে বাড়ির দিকে রওনা হইলাম। ૨ পরদিন যথাসময়ে স্কুলে গেলাম। প্রথম ঘণ্টায় এসিষ্টাণ্ট হেডমাষ্টার জনাৰ্দ্দনবাবু ইংরেজী পড়াইতে আসিলেন। তিনি বড় কড়া লোক ছিলেন. ছেলেরা তাহাকে বাঘের মত ভয় করিত। র্তাহার ঘণ্টায় কেহ টু শব্দটি করিতে পারিত না। তিনি ক্লাসে বসিয়াই আমাদিগকে একটি রচনা লিখিতে দিলেন। আমরা রচনা লিথিয় তাহার সম্মুখস্থ টেবিলে খাত রাখিলাম, তিনি একখানা খাত হাতে করিয় তাহ দেখিতে আরম্ভ করিয়াছেন, ঠিক এই সময়ে আমি যে-বেঞ্চে বসিয়াছিলাম তাহার সম্মুখের দিক হইতে একটা কাগজের মোড়ক আসিয়া আমার উপর পড়িল। এই কাৰ্য্যটি অতি সস্তপণে অনুষ্ঠিত হইলেও তাহ জনাৰ্দ্দনবাবুর দৃষ্টি এড়াইল না। তিনি আমনি ও কি হচ্ছে বলিয়া হুঙ্কার দিয়া উঠিলেন, এবং সেই কাগজের মোড়কটি আমার হাত হইতে কাড়িয়া লইলেন। আমি উহা খুলিয়াছিলাম—উহাতে পেনসিল দিয়া একটি পুরুষের ও একটি নারীর আকৃতি নিতান্ত অপটু হস্তে আঁকা ছিল, সেই নারীর পাশে লেখা ছিল 'রাইকিশোরী, আর ছবি দুটির নীচে লেখা ছিল যে যন্ত মিত্ৰং নহি তস্য দূরং । শিক্ষক মহাশয় উহা দেখিয়া চীৎকার করিয়া উঠিলেন, ‘কী ! ক্লাসে বসে ইয়ারকি দেওয়া হচ্ছে ? এ কাজ কে করেছে?. তাহার গর্জন শুনিয় ক্লাসের বালকবৃন্দ নিম্পদ হইল। কাহারও কোন উত্তর না পাইয়া তিনি আমাকে কাছে ডাকিলেন। আমি বলিদানের ছাগশিশুর মত কঁাপিতে কঁাপিতে র্তাহার সম্মুখে গিয়া দাড়াইলাম। তিনি আমাকে জেরা করিতে আরম্ভ করিলেন—“এ কাগজটা তোমার দিকে ছুড়ে মেরেছিল ? . ऍSखङ्ग -चांटल हैं । -