পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দীর্ঘমিয়াদী ঋণদান ও জমিবন্ধকী ব্যাঙ্ক শ্ৰীমুকুমাররঞ্জন দাশ, এম-এ, পিএইচ ডি কিছুদিন হইতে কৃষক-সম্প্রদায় ও ভূম্যধিকারিগণকে এই ভীষণ অর্থসঙ্কটের গত ইষ্টতে রক্ষা করিবার জন্য জমিবন্ধকী ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার কথা উঠিয়াছে। সম্ভবতঃ ভারতীয় ব্যবস্থ-পরিষদের আগামী অধিবেশনে এই বিষয়ের বিশদ আলোচন হুইবে । গত তিন-চার বৎসর ধরিয়া বাংলার তথা ভারতের রুযকসম্প্রদায়ের এবং সেই কারণে ভূম্যধিকারিগণেরও আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হুষ্টয় পড়িয়াছে। এই নিমিত্ত তাহুদিগের মধ্যে অতি সত্বর দীর্ঘমিয়াদী ঋণদানের ব্যবস্থা করিলার কথা চলিয়াছে। দুষ্টাট কারণে রুযকদিগের এইরূপ অবস্থা হুষ্টয়াছে। প্রথমতঃ, রুক্ষকগণ তাহাদিগের উৎপন্ন শঙ্গের যেরূপ মূল্যের আশা করিয়াছিল, দেশের ব্যবসায়বাণিজোর অবনত অবস্থার জন্য তাহার সেই আশানুরূপ মূল্য লাভ করিতে পারিতেছে না, এমন কি অনেক স্থলে অল্প মূল্যে উৎপন্ন শস্ত বিক্রয় করিতে বাধ্য হইতেছে। কিন্তু এই অত্যধিক মূলা-লাভের আশায় তাহারা পূৰ্ব্বে ঋণদান সমিতিগুলি হইতে কিংবা অন্যত্র হইতে যে-পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করিয়াছে, এখন উৎপন্ন শস্তের বিক্রয়লব্ধ অর্থ হইতে সেই ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করা দূরে থাকুক,স্থদের টাকাও কিছুমাত্র দিতে পারিতেছে না। এই অবস্থার জন্য কৃষকের অনেকাংশে দামী নহুে । উৎপন্ন শস্যের মূল্য ব্যবসায়-বাণিজ্যের অপঃপতনের নিমিত্ত যে এতটা হ্রাসপ্রাপ্ত হইবে, তাহা তাহার কেন, অনেক পণ্ডিত অর্থনীতিবিদেরাও বুঝিতে পারেন নাই। রুষকদিগের যখন এই অবস্থl, তখন তাহাদিগের অর্থেই ধনবান ভূম্যধিকারিগণেরও অবস্থা শোচনীয় হুইয়া পড়িতে বাধা , তাহারা প্রজাদিগের নিকট হইতে বিশেষ কিছু আদায় করিতে পারিতেছেন না, অথচ নিজেদের চালচলন বজায় রাখিতে এবং গবর্ণমেণ্টের কিস্তির টাকা দিতে অর্থের প্রয়োজন। স্বতরাং বিষয়-সম্পত্তি সব নীলামে উঠিতে চলিয়াছে। দ্বিতীয়তঃ, অনেক স্থলে বর্ধার প্লাবনে কাকদিগের উৎপন্ন শস্য নষ্ট হুইয়া গিয়াছে। সেই সকল স্থানের কৃষকগণ একেবারে সঙ্গলীন হুষ্টয় পড়িয়াছে ; ফলে জমিদারদিগেরও ভীষণ অর্থসঙ্কট উপস্থিত হুইয়াছে। রুযকগণ অধিকাংশ স্থলে সমবায়ু-ঋণদান সমিতি হইতে ঋণগ্রহণ করিয়াছে। এক্ষণে তাহার দুর্দশার চরমসীমায় উপস্থিত হওয়ায় ঋণদান-সমিতিগুলির অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন হইয়াছে। অল্প মূলধন বেশী দিন আটকাইয়া থাকিলে ঋণদান-সমিতিগুলির কার্য্য চালাইবার বিশেষ অসুবিধা হইয় পড়ে, কারণ ঋণদান সমিতিগুলিতে গচ্ছিত অর্থের মিয়াদ অল্প ; সেক্ট অর্থ দিয়া দীর্ঘমিয়াদী ঋণদান উহাদিগের পক্ষে অসম্ভব, কিন্তু অবস্থা এখন ধেরূপ দাড়াইয়াছে তাহাতে ঋণদান-সমিতিগুলি ঋণের অর্থ আদায় করিতে - পারিতেছে না। সমবায়-ঋণদান সমিতিতে তিন বৎসর মিয়াদে দীর্ঘমিয়াদী ঋণ দিবার বিধি আছে, কুমকদিগের বর্তমান অবস্থায় তিন বৎসরের মধ্যে ঐ ঋণ শোধ দেওয়া তাহাদিগের পক্ষে অসম্ভব। আবার যে দেন। কৃষকের অনেক সময়ে পূৰ্ব্বপুরুষদিগের আমল হইতে বহন করিয়া আসিতে থাকে, দেশীয় মহাজনকে স্বদ চালাষ্টয়া চালাইয়া দলিল পরিবর্তন করিয়া যাহ। এতদিন চলিম আসিতেছিল, তাহা এই অর্থসঙ্কটের সময়ে তিন বৎসরের মধ্যে স্বদ ও আসলে তাহারা পরিশোধ করির ফেলিবে ইহাও আশা করা যাইতে পারে না। সুতরাং ঋণদান সমিতিগুলির একমাত্র উপায়- ঋণগ্রস্ত কুযকদিগের সমস্ত সম্পত্তি নিলামে বিক্রয়ের দ্বার ঋণের টাকা আদায় করিয়া লওম্বা। অথচ ইহাতে এই আর্থিক সঙ্কটের দিনে বিশেষ সুবিধা হুইবে বলিয়া মনে হয় না। অনেক স্থলে নিলামে ক্রেতার অভাবে অতি অল্প মূল্যে ঋণগ্রস্ত সম্পত্তির বিক্রয় হইতে পারে, ইহার ফলে ঋণদান-সমিতিগুলি নিজেদের অর্থের সমুদয়অংশ আদায় করিতে পারিবে না এবং কৃষকদিগেরও সমস্ত সম্পত্তি নিলামে বিক্রমের নিমিত্ত তাহাদিগের বঁাচিয়া থাকিংয়ে কোনও উপায় থাকিবে না। এই সকল কারণে এই কথা