পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] দেখিতেছি, নানা প্রকার কাল্পনিক জিনিস দেখিতেছি । তখন আবার ঘুমাইবার চেষ্টা করিলাম। কিন্তু না, এ যে হা-লঙের উপসাগর । এস্থানের জাকার-প্রকার পৃথিবীর মধ্যে বেশ একটু অনস্তসাধারণ । মরিবার মত বেশী না হইলে, এই সর্গিগৰ্শ্বির আবেশ বেশীক্ষণ স্থায়ী হয় না । তার পর দিন, আবার কাজে প্রবৃত্ত হইতে পারিলাম ; এই দেশটা বাস্তব বলিয়া তখন আমার প্রতীতি হইল। তাহার পর এই নোঙ্গর স্থান ছাড়িয়া হয়ে নদীতে প্রবেশ করিবার জন্য যাত্রা করিলাম। এই হাড়ভাঙ্গ দুৰ্য্যের নীচে, ঘটনাগুলী দ্রুত চলিতে লাগিল । তিন দিনের গোলাবর্ষণের পর, যুদ্ধের পর খুয়ান আন দখলে আসিল । এবং এই সমস্ত প্রচেষ্টার পর, অামাদের প্রবাসের শাস্তি তুরান্‌-এ আরম্ভ হইল। এই শাস্তি, বিষাদময় প্রপর উত্তাপে অভিভূত ; আন্নামের কোন এক অজ্ঞাত কোণে, অনির্দিষ্ট সময়ের জষ্ঠ এই যে শাস্তি, ইহা নিৰ্ব্বাসিতের শাস্তি । বন্দরগুলাসমেত এই সমস্ত প্রদেশটা আগলাইবার জন্ত অমাদিগকে দেওয়া হইয়াছে। এখন এই আবহাওয়ার সহিত অভ্যস্ত হইতে হইবে ; বোধ হয় এই শীতকালটা এইখানেই কাটাইতে হুইবে । হায়! এক্ষণে ইহাই আমার বহুদূরস্থ অজানা সমাধিস্থান! যেখানে আমাদের জাহাজ নেঙ্গঃ করিয়াছে, এই বৃহৎ উপসাগরের চারিদিকে কতকগুলী উচ্চ কালে কালে পাহাড় । ওদিকে, দুব পশ্চাতে একটা নদীর মুগ—উহার প্রথম বঁীকেই পুরাতন ভগ্নদশাগ্ৰস্ত একটা গ্রাম শীর্ণকায় বঁাশঝাড়ের মধ্যে প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে। বঁাশগুলী বড় বড় পুপিত ছোলাগাছের মত দেখিতে । কিন্তু এখন এই গ্রামের সহিত আমি এত ভালরকম পরিচিত, উহার ভিতর দিয়া “ইস্পার উদপার” করিয় এতবার বেড়াইয়াছি, শেষপ্রান্ত পৰ্য্যন্ত সমস্ত স্থান তন্ন তন্ন করিয়৷ দেখিয়ছি, পোজ করিয়াছি যে এপন আমার কাছে উহা বসি বলিয়া মনে হয়, নিতন্তু সাদামাট বলিয়া মনে হয়। প্রথম কৌতুহলের আগ্রহটা চলিয়৷ গিয়াছে, এখন আর এই দেশ আমার কখনই ভাল লাগিবে না, এই বিষণ্ণ পীতবর্ণ জাতির লোকদিগকে ভাল লাগিবে না ; আমার পক্ষে এটা বাস্তবিকই নিৰ্বাসিতের দেশ ; এখানকার কিছুই আমাকে ধরিয়া রাখিতে পারে ন—আমাকে মুগ্ধকরিতে পারে না। এখন আমি এই হরিৎ স্যামল দ্বীপটিকে, এই মন্দিরের ছায়ায় বরণ করিয়া লইয়াছি। নিস্তব্ধ জীবন উপভোগ করিবার জন্ত, তরুলতার শৈত্য উপভোগ করিলার জন্ত, মধ্যাহের প্রখর উত্তাপের পর, যখন সুর্য্য অস্ত যায় সেই সন্ধ্যার সময় আমি এখানে আসিয়া থাকি । ডিঙ্গির নাবিকদের লইয়া আমি একৃলাই আসিয়া থাকি। উহাদেরও খুব আমোদ হয় –যদিও এই বনভূমে শুধু কতকগুল লতাগুল্ম ও যুধি জড়াজড়ি করিয়া আছে, আর বাসিন্দীর মধ্যে আছে কেবল কতকগুলা বানর । এই চিরপরিত্যক্ত মন্দিরের সহিত ইহারই মধ্যে আমরা খুব পরিচিত হইয়া পড়িয়াছি । বিশেষত মন্দিরটা আমাদের স্নানাগার হইয়৷ দাড়াইয়াছে। মন্দিরের অন্ধকারের মধ্যে যে-সকল ভূত প্রেত, যেসকল পুরাতন ক্ষুত্র ভীষণ বিকট জীব পাহার দিতেছে, আমাদের কাপড়চোপড় তাহীদের জিন্মায় রাখিয়া আমরা স্নান করিতে যাই । বাহাই হউক, এই সমস্ত সত্ত্বেও, এই বৌদ্ধ মন্দির আমাদের একটা শ্রদ্ধা আকর্ষণ করে। উহার কোন জিনিসই আমরা স্থানচ্যুত করি ন৷ এবং ঐখানে আমরা খুব মৃদুস্বরে কথা কহি । মন্দিরটা অন্ধকার ; এই-সব স্থানে কত কাল ধরিয়া কত লোকে পূজা-অৰ্চনা করিয়াছে, কত অপরিচিত ধূপ-ধুনার স্বগন্ধে চারিদিকৃ জামোদিত হইয়াছে। খুব প্রাচীন কালের “ব্ৰেটন" প্রদেশের গির্জার প্রবাসীর আত্মকথা S AAAAAA SAAAAA AAAAMMM AM eAMAee eeMeMMAMAAA SAAAAA SAAAAA SAAAAA M AA AMAMA AeMAeeMA MAMA MAMAMAeMMSAMS ○〉》 মধ্যে, পৃথিবীর সমস্ত পুরাতন ধৰ্ম্মমন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করিলেই একটা অতিপ্রাকৃতের ভাব আসিয়া আমার চিত্তকে পীড়ন করে । (o) কি গোলমালের কারখান। আমার এই জাহাজের কাম্রাট । নানাপ্রকার অভূত জিনিলে, লম্বোদর বুদ্ধমূৰ্ত্তিতে, হাতীতে, ঝিনুকেBBBB BBBS KSDS DBBBB BB S BS BB BB BBB ব্যাং - বেশ জীবস্তু কটুকটে ব্যাং একটা পঁাচার ভিতরে। ইছরগুল৷ আমার দস্তান ও বুটজুত আক্রমণ করিত ; ইদুর তাড়াইবার এই ফন্দিটা ইংরেজ নাবিকের আমাকে শিখাইয় দিয়াছে। ( রাত্রে সিলভেক্টর নাবিক এই পঁচাটা আমার কামরায় রাপিয়া দেয়। মনে হয়, ল্যাঙের ভয়ে ইদুর আর ঘরে ঢোকে না । ) সৰ্ব্বোপরি, কতক গুল ফুল, তোড়ার আকারে, আঁটি-বাধা । এইসব ফুল “পারীর" স্বন্দরীর তাহদের উষ্ণ উদ্ভিদগুহে কখনও চক্ষে দেখে নাই, উহাদের সৌরভ কখনও আত্মাণ করে নাই, ওরূপ ফুলের অস্তিত্ব আছে বলিয়া সন্দেহও করে নাই ; এই-সকল ফুল উহাদের নিকট একটা অপরিচিত ধারণ। বহন করিয়া লইয়। যাইবে । কৃত্রিম রঙের নামহীন অনেক কাটাকুতি পরগাছা ; রং যথা : - ননি-ধবল, তাহতে একটু সবুজের আভা ; স্নান অরুণ-নীলে পৰ্য্যবসিত — চীনেদেশের এক প্রকার ক্রেপ কাপড়ের মত । তার পর পত্রপল্লব ও কতরকম ভুলভ স্বগন্ধ ! এই-সব সৌরভের মধ্যে, আমার নাবিক সিলভেষ্টার কোন এক প্রভাতে যখন আমাকে জাগাইতে আদিবে, তখন আসিয়া দেখিবে আমি মরিয়া কাঠ হইয় পড়িয়া আছি— আমার মত কৃপাপাত্র সাগর-পয্যটকের অন্তিম দশটা খুবই কবিত্বপূর্ণ হইবে সন্দেহ নাই । আমার নাবিকেরাই মিঠা জলের ধরে গিয়া প্রতিদিন আমার জন্ত এইসকল পুপগুচ্ছ তুলিয়া আনে। এখানকার পাহাড়ের ঝোপঝাড়ে এই সকল ফুল ফোটে। আমাদের দোভাৰী হেয়ে মহাশয় বলেন, এই পাহাড়ে অঞ্জস্বল্প বাধ “মহাশয়” আছেন, অনেক কুকুরু-মুখে বানর “মহাশয়”ও আছেন । গতকল্য, তুরাণ-এ উপর দিয়া একটা বড় রকম "টাইফুন ঝড় বহিয়া গিয়াছিল ; সমস্ত ওলটপালট্‌ করিয়া দিয়াছে, বৃক্ষসমেত গৃহের ছাদ প্রভূতি নীচে আছড়াইয় ফেলিয়াছে । অনেক লোক মারা গিয়াছে। সমস্ত স্থান উজাড় হইয়। গিয়াছে । অধিকাংশ গৃহই ভূপতিত হইয়াছে ; বুদ্ধমূৰ্ত্তি ও পুতুলগুলার ভাঙ্গ৷ টুক্র কুড়াইয়া লইয়া, লোকের ঘাসের উপর বাস করিতেছে। একটা বড় পাহাড়ের আড়ালে আমাদের জাহাজটা কোন রকমে টিকিয়া ছিল, কিন্তু কয়েক ঘণ্টাকাল, উহার অবস্থ শোচনীয় হইয়| উঠিয়ছিল ; মধ্যরাত্রে ঝড়টা চলিয় গেল ; তার পর আর কিছুই দেখা গেল না । কেবল একটা ভীষণ গৰ্জ্জন শুনা যাইতে লাগিল ; এবং সমুত্র, বায়ুর দ্বার বিক্ষোভিত ও চূর্ণীকৃত হইয়া তপ্ত ফুটন্ত জলের মত ধু রাইতে লাগিল । আজ আবার সব শান্ত হইয়া গিয়াছে। জলমগ্ন জীবজন্তু ও ধ্বংসাবশেষ বহন করিয়া নদী শাস্তভাবে সাগরাভিমুখে চলিয়াছে। এখন সন্ধ্যা : যখন রাত্রি হয়, তখন মনে হয় যেন এখানে জাসিয়া সবই হারাইয়াছি, চিরকালের মত নিৰ্ব্বাসিত হইয়াছি। হায়! এখান হইতে পৃথিবীর অবশিষ্ট দেশ কত-কত যোজন দূরে। এখানকার গোধূলিকালের রং অতি অপুৰ্ব্ব ও হিমপ্ৰধান দেশেরই মত ; এই উষ্ণ দেশে এইরূপ গোধুলি হওয়াই আশ্চর্ঘ্যের বিষয়। পীতাভ, সীসবৰ্ণ আকাশের গায়ে, ধূসর অথবা মসীকৃষ্ণ পাহাড়গুলা খুব উচ্চদেশে স্বীয় তীক্ষাগ্র কঠিন দপ্তপংক্তির কাট কাটা রেখা-ছবি আঁকিয়া দিয়াছে। এই সময়ে এই পাহাড়গুলাকে খুব প্রকাও বলিয়া মনে হয় ।