পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8૧8” (സുസ്സ്പ്രസ്സ് ওর পরকালটা স্বদ্ধ নষ্ট করছিল। তোরা সব মনে করেছিল কি বল ত ? - ভজা বলে উঠল—পুরুষমামুষের সঙ্গে মিশলেই যদি খারাপ হয়ে যাই তা হ’লে উচিত যে মেয়ের যাতে কোনো রকমেই পুরুষের সংস্পর্শে না আসে এই রকম করে হাত পা বেঁধে ঘরে ফেলে রাপ। আমার ত মনে হয় যে মেয়েরা যতই পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করবে যতই বাইরের সঙ্গে পরিচিত হবে ততই তারা নিজেদের আরো বেশী ক’রে ফুটিয়ে তুলতে পারবে। রমেশ-বাবুর স্ত্রী একটু শ্লেষের সঙ্গে বললেন-তোমার নিজেকে ফুটিয়ে তোল্বার যদি অত দরকার হয়ে থাকে ত তুমি গোল্লায় যাও । তাই বলে’ ওকে "ও-রকম করে উচ্ছল্পের পথে টেনে নিয়ে যেতে পাবে না । তোমার সঙ্গে ত আর পেরে উঠব না। বাপের আদুরে ধিঙ্গী মেয়ে! তোমার যা খুসি করোগে।—বলেই যুথিকাকে একটা ঘরের ভিতর ঠেলে’ ফেলে দিয়ে সেখান হ’তে চলে গেলেন। যুথিক। সেইখানে পড়েই র্কাতে লাগল। ভদ্র। এসে কাছে বসে তার গায়ে হাত দিতেই পে আরো উচ্ছ্বলিত হয়ে কেঁদে উঠল। এই দুই বালিকার অবস্থা দেখে আমার মন একটা অজানিত অব্যক্ত বেদনায় ভরে উঠল। কে যেন বলছিল এদের কষ্টের মূলত তুমিই। সঙ্গে সঙ্গে মনও এতে সায় দিয়ে উঠল। সত্যই ত। আমি যদি আজ যুথিকাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে না চাইতাম তা হ’লে ত আর তাকে এতদূর নিগ্রহ ভোগ করতে হত না । প্রতিজ্ঞ করলাম সাধ্যমত এদের বঁচিয়ে চলব। সেদিন রাত্রিটা অনিদ্রায় কেটে গেল। নৈশ বাতাস যখনই গভীর দীর্ঘনিশ্বাসের মত ঘরে ঢুক্ছিল তখনই মনটা আরো হু হু করে উঠছিল—চোখ দিয়েও তু’ এক ফোটা অশ্র গড়িয়ে পড়ছিল। মামুষের মনের অভিপ্রায় যদি সব সময়ে পূর্ণ হ’ত তা হ’লে সে বোধ হয় নিজেকে ঠিক রাখতে পারত না বলেই ভগবান , তা' হ'তে দেন না । ভোরের সঙ্গে সঙ্গেই ভারাক্রান্ত মনটাকে একটু হালকা করে নেবাস্থলন্তে বাগানে আসতেই দেখি ভদ্র। একটি প্রবাসী-শ্রিাবণ, ১৩৩e [ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড x^^^^^ ه"همه مساحبس مییسه مجریه বেদীর উপর বসে আছে। প্রভাতের আবীর-রাঙ{ প্রথম আলো,তার মুখের উপর পড়ে তাকে বড়ই স্বন্দর করে তুলেছে। বসন্তের প্রথম-সমীরণ-স্পর্শে ফুল যেমন আর নিজেকে সামূলে রাখতে পারে না, তার স্বরূপ ফুটিয়ে তুলে বাইরের সৌন্দর্ঘ্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চায়, ভদ্রার সৌন্দৰ্য্যও সেই রকম আর তার নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকৃতে পারছিল না, বাইরে ধরা দেবার জন্যে আকুলিবিকুলি করে তার সারা দেহে লাবণ্যের ঢেউ তুলে খেলা করে বেড়াচ্ছিল । ভদ্র অন্যমনস্ক হ’য়ে বসে’ ছিল--কি যেন একটা গভীর চিন্তায় নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে বাইরের সব কোলাহল হ’তে আলাদা হয়ে ছিল। হঠাৎ আমার চোখ পড়ল বাগানের এক কোণে এক শেফালী গাছের তলায়। যুথিকা হেঁট হ’য়ে ফুল কুডুতে ব্যস্ত ছিল । তাকে দেখেই আমার মনটাকে কে যেন একটা প্রচণ্ড হাতুড়ীর ঘা মেরে একেবারে গুড়িয়ে দিলে । এক রাত্রির মধ্যেই জানিন কোন ঐন্দ্রজালিকের মায়ার স্পর্শে তার মধ্যে এতথানি পরিবর্তনের ঝড় ব’য়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তার বয়সটাও কে যেন অনেকখানি এগিয়ে নিয়ে গেছে। একথানি শুভ্র থান তার পরনে। হাত দুখানি শূন্ত । তার মুখখানি দেখাচ্ছিল ঠিক যেনু একটি বেঁটা-ছোঁড়া রোদের-তাতে-আমলেপড়া ফুটন্ত পদ্মফুলের মত। এক রাতের মধ্যে যে মামুষের মনের এবং দেহের এতটা পরিবর্তন হ’তে পারে তা’ অামি ধারণা করতেই পারিনি। একরাশ শিশির-ভেজা শুভ্ৰ শেফালী-ফুলের মতই কিন্তু তাকে দেখাচ্ছিল এতখানি পরিবর্তনের মধ্যেও | - হঠাৎ তার দৃষ্টি পড়ল জামার দিকে । তার চোখ আমার উপর পড়তেই এলো চুলের গুচ্ছ দুলিয়ে দৌড়ে আমার কাছে এলে আমার হাতখানা খপ করে বেশ চেপে মুঠো করে ধরে হেসে সে বললে—কেমন দেখাচ্ছে বলুন ত আমাকে ? আমার কিন্তু এ ভারি ভাল লাগছে। বলে’ খুব হাসতে লাগল। তার মুখে এই হাসি কিন্তু বেদনার অশ্রু হ’য়েই ফুটে উঠল ।