পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] নিজের স্বাভাবিক জ্ঞান-গরিমা প্রকাশ করিবার প্রয়াস পায় এবং গভীর অন্তদৃষ্টির অধিকারী হইয়া নিজের মধ্যেই জাখার পবিত্ৰ-মূৰ্ত্তি দর্শন করে তখনই তাহ অন্তরাত্মা নামে অভিহিত হয় । আবার যখন অন্তরাত্মা সাধক-দশা হইতে সিদ্ধ অবস্থায় উপনীত হইয়া পরমাত্মার ভাবকে প্রকাশিত করিতে পারে ভূখনই তাহার নাম পরমাত্মা। এক্ষণে দেখা যাইতেছে যে, জীবাত্মাই আধ্যাত্মিক ৰিকাশের দ্বারা পরমাত্ম-পদ প্রাপ্ত হয় এবং পরমাত্মা শক্তি থাকা সত্ত্বেও তাহার আবির্ভাব না হইলে অর্থাৎ আধ্যাত্মিক বিকাশ না হইলে পরমাত্মা বহিরাত্মাই থাকিয়া যায়। এক্ষণে প্রশ্ন হইতে পারে এই অবস্থায় কি কি সাধনের দ্বারা আত্মার আধ্যাত্মিক-বিকাশ সম্ভব হইতে পারে। ইহার উত্তরে জৈন-দর্শন-মতে প্রথম অবস্থায় আত্মা সৰ্ব্বদা প্রবৃত্তিতে মগ্ন থাকে এবং যখন আত্মা বাসনা ও তযুৎপন্ন আপাত-তৃপ্তিতে মগ্ন থাকে তখনু আত্মার বিকাশ অসম্ভব। সেই অবস্থার আত্মার চিস্তাকে জৈন-দার্শনিকগণ অশুভ ধ্যান বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন । ইহাই আত্মার আধ্যাত্মিক বিকাশের অন্তরায় এবং পুনর্জন্মাদি দুঃখরাশির বৃদ্ধিকারক। কিন্তু যখন শুভধ্যান আরম্ভ হয় তখন বহিরাত্মার ভাব ক্রমশ হ্রাস হইতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে আত্মার আধ্যাত্মিক বিকাশের সূত্রপাত হয় । ফলতঃ জীবাত্মার শুভধ্যান অতিক্রম করিয়া শুদ্ধ-ধ্যান আরম্ভ হয়, তখনই আধ্যাত্মিক বিকাশের মাত্র অতিশয় বৰ্ধিত হইতে থাকে। অবশেষে এই শুদ্ধধ্যানের পূর্ণত হইবামাত্রই আত্মার আধ্যাত্মিক বিকাশের চরমোৎকর্ষ সাধিত হয় । ইহা হইতে স্পষ্টই অভূমিত হইতেছে যে মশুম্ভ-ধ্যান সংসার-বৃদ্ধির কারণ ; শুভ-ধ্যান সংসারiাসের কারণ ; এবং একমাত্র শুদ্ধ-ধ্যানই মোক্ষের কারণ । এই অশুভ-ধ্যানকে জৈন-দর্শনে আৰ্ত্ত ও রৌজ নামক ইভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে এবং শুভ-ধ্যানকে ধৰ্ম্মধ্যানপে ও শুদ্ধ-ধ্যানকে শুক্লধ্যানরূপে বর্ণনা করা হইয়াছে। কা, হিংসা, অসত্য, কাম, বাসন, ইষ্টবিয়োগজনিত শোক । অনিষ্ট-সংযোগ-জনিত খেদাদি মানসিক ৰিকার জাৰ্ত্ত রেীক্স ধ্যানের অন্তর্গত ; শাস্ত্ৰ-চিন্তন ও তাত্বিক চিারাদি শুক্ত-ধ্যান ধর্শ্ব-ধ্যানের অন্তর্গত ; এবং আত্ম بن عصيبسحم - জৈন-দর্শনে ‘ধ্যান’ MA MAMA MAeMeeMA M AMMAeee eeAee eeeMMAeAMSMMAMAeM eeMAMAAA AAAA AAAAMAeAAA AAASS 8ᏜᏄ SA A AS SAMAMAMM AMAA AMAMMAM AMMeMAMAeMMM নিরীক্ষণ ও নিৰ্ব্বিকল্পতাদি মানসিক ভাবগুলি শুক্লধ্যানের অন্তর্গত। প্রাকৃত মূল জৈন স্বত্র হইতে আরম্ভ করিয়া পরবর্তী শ্বেতাম্বরী ও দিগম্বরী উভয় সম্প্রদায়ের আচাৰ্য্যগণ ধ্যান সম্বন্ধে তাহাদিগের গ্রন্থের নানাস্থানে বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। তন্মধ্যে “স্থানাঙ্গ”-সুত্র নামক তৃতীয় অঙ্গ ও “ঔপপাতিক”-সুত্র নামক প্রথম উপাঙ্গ প্রধান উল্লেখযোগ্য। জিনভদ্রগণিক্ষমাশ্রমণ-কৃত ধ্যান-শতক নামক প্রাকৃত গ্রন্থে, যাহ আবশ্বক-স্বত্রের বৃত্তি-টীকায় পাওয়া যায়, তাহাতে, ধ্যানের স্বন্দর ব্যাখ্যা আছে ; তজ্জ্ব্যতীত উমাস্বাতী-কৃত “তত্ত্বার্থাধিগম-সুত্র” ও শুভচন্দ্রাচাৰ্য্য-কৃত “জ্ঞানার্ণব" আদি গ্রন্থে চারি প্রকার ধ্যানের বিস্তৃত বর্ণনা আছে। পাতঞ্জল যোগ-সুত্রের ব্যাস-ভাষ্যে চিত্তের ক্ষিপ্ত, মূঢ় এবং বিক্ষিপ্ত যে তিন ভূমিকা উল্লিখিত আছে তাহাই জৈন মতে আৰ্ত্ত ও রৌদ্র ধ্যান ; উক্ত ভাম্যে ষে চিত্তের একাগ্রভূমিকা বলা হইয়াছে তাহাই ধৰ্ম্ম-ধ্যান ; এবং তাহার যে নিরুদ্ধ-ভূমিকা তাঁহাই শুরু-ধ্যান । বৌদ্ধ-গ্রন্থ মজ্জিামনিকায়, দীঘ-নিকায় আদি পাঠ করিলে যে ধ্যানের বর্ণনা পাওয়া যায় তাহাই জৈন দর্শনের ধৰ্ম্ম- ও শুরু-ধ্যান এবং এই ধ্যানই প্রকৃত যোগ । মধ্যযুগে জৈনাচার্ধ্যেরা যোগের বিষয়ে যে গ্রন্থগুলি রচনা করিয়াছেন তন্মধ্যেও ধ্যান সম্বন্ধে বহুতর আলোচনা দেখা যায়। সচরাচর জৈন দার্শনিকগণ পূৰ্ব্বোক্ত অশুভধ্যান অর্থাৎ চিত্তের একাগ্রভাবে তুচ্ছ চিস্তাকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছেন—আৰ্ত্ত ও ও রৌদ্র, এই অৰ্ত্তি-ধ্যান চারি প্রকার। ১। ইষ্ট-বিয়োগ আৰ্ত্ত-ধ্যান । ইষ্ট অর্থাৎ প্রিয় বস্তুর বিয়োগ-জনিত চিন্তা, শোক বিলাপাদি অর্থাৎ পিতা মাতা, ভ্রাতা, ভগ্নী, স্ত্রী, পুত্র প্রভৃতি স্বজন অথবা বন্ধুবান্ধব-বিচ্ছেদ বা পশুপক্ষী প্রভৃতি গৃহপালিত প্রাণী বা অন্ত যে কোন বস্তু নষ্ট হইলে তজ্জন্ত যে মানসিক দুঃখ ও সদাসৰ্ব্বদা একমাত্র তষিয়ের চিন্তা, তাহা এই আৰ্ত্তধ্যানের বিষয়ীভূত । * . ২ । অনিষ্ট-সংযোগ আৰ্ত্ত-ধ্যান । অনিষ্ট অর্থাৎ অপ্রিয়, অমনোজ্ঞ বিষয়ের সংযোগ হইলে ইষ্ট-বিয়োগের ন্যায় সৰ্ব্বদাই তদগত চিন্তায় মগ্ন থাকাই দ্বিতীয় আর্ত-ধ্যান।