পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

' Ꮌ©br প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড ধৰ্ম্ম-পূজা (ভূমিক ) খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর গোড়ার দিকে s০৫–৪১১ ) চৈনিক পরিব্রাজক ফাহিয়ান ভারতবর্ষে আসেন । তিনি র্তার গ্রন্থে লিখেছেন যে ভারতের পূর্বাঞ্চলে বৌদ্ধধৰ্ম্মের অবস্থা পশ্চিমদিকের চেয়ে অনেক ভাল ছিল । সে যুগে তাম্রলিপ্তি বাংলাদেশের একটা মস্ত বন্দর বলে সুপরিচিত ছিল । সেখানে তপন বাইশট। বৌদ্ধ মঠ ছিল । ফাক্তিয়ানের কিঞ্চিদধিক দুই শ বছর পরে আসেন হয়েন সাং । তিনি বৌদ্ধধৰ্ম্মকে সৰ্ব্বত্রই নিম্প্রভ দেপে যান : তাম্রলিপ্তিতে দঙ্গ-বারটার বেশী মঠ তিনি দেখেন লি ; ভিক্ষুর সংখ্যা সেখানে হাজারের বেশী ছিল না। প্রায় ৫০টা দেবমন্দির দুই শ বৎসরের মধ্যে গড় হয়েছিল, আর ঐ নগরে বৌদ্ধ ও অবৌদ্ধ একত্র বাস করতে। মোটের উপর সমস্ত ংলা দেশে খুব কম করে দশহাজার সঙ্ঘারাম ছিল ও প্রায় এক লক্ষ ভিক্ষু সেইসব আরামে বাস করতেন । এষ্ট চুই চৈনিক পরিব্রাজকের বর্ণনা পাঠ করলে জানা যায় যে ৭ম শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশে বৌদ্ধধৰ্ম্মের অধোগতি স্থরু হয়েছে । কিন্তু অধোগতি স্বরু হলেও লোপ পাবার পূৰ্ব্ব পয্যন্ত এই বাংলাদেশেই বৌদ্ধধৰ্ম্ম টিকে ছিল । শ্ৰীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় শযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বস্থর “Modern Buddhism” orzo of Rio on যে বাংলাদেশের এই এক লক্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভরণপোষণের জন্য খুব কম করে এক কোটি পরিবারের প্রয়োজন । তার মত, সভা বলে মানতে হলে বাংলাদেশে দেড় হাজার বছর আগে চার কোটি বৌদ্ধ বাস করত। এবং আর দুই কোটি হিন্দু ও ছিল । স্বতরাং ৭ম শতাব্দীতেই ৬ কোটি লোক বাংল। দেশে ছিল এরূপ অনুমান করতে হয় । কিন্তু সংখ্যানির্ণায়ক রীতি ( Statistical Inethod ) NRTH-I FQA’ এ অনুমান শ্রদ্ধেয় বলে মানতে পারি না । আমর জানি যে ভারতের সর্বত্র ৬ষ্ঠ-৭ম শতাব্দী থেকে ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্মের পুনরভু্যদয় স্থর হয় । বাংলাদেশেও সেই প্রতিক্রিয়া মুরু হযেছিল। আদিখরেব ঐতিহাসিকত্ব সস্থা কি ন৷ खामछ। জানি না ; তবে আদিশূরের পঞ্চব্রাহ্মণ আমদানী করার প্রবাদের মধ্যে বাংলা দেশে ব্রাহ্মণ্য আভিজাত্যের সূত্রপাত হয়েছিল সেটা নিশ্চিত কথা । কিন্তু বৌদ্ধধৰ্ম্ম মরে নি । সে নানা আকারে দেশের নানা জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিল। মাঝখানে পাল-রাজাদের আমলে বৌদ্ধধৰ্ম্ম বেশ জেগে উঠেছিল । সে কথা আমরা যথাস্থানে আনবো । বৌদ্ধধৰ্ম্মের মধ্যে যে শাখাকে আমরা মহাযান আখ্যা দিয়ে থাকি তার সম্বন্ধে লোকের একট। গোড়ার ভুল আছে । মহাধান বলতে কোনো ধৰ্ম্মমত বুঝায় না, বুঝায় কতকগুলি শাখার দর্শনশাস্ত্র । সেই মহাধান নানা বিরুত আকার ধারণ করে চীন জাপান কোরিয়া তিব্বত নেপাল প্রভৃতি স্থানে যেমন বিচিত্র ধৰ্ম্মমত সষ্টি করেছে, তেমনি ভারতের পূর্বাঞ্চলে মহাসান বৌদ্ধমত্ত বিলুপ্ত হবার আগে অনেক-রকম ধৰ্ম্মসম্প্রদায় গড়ে তুলেছিল। সেইসব ধৰ্ম্মসম্প্রদায়গুলি বৰ্ত্তমানে ক্রমে ক্রমে হিন্দুধৰ্ম্মের অন্তর্গত হয়ে পড়েছে । কিন্তু সাহিত্যের ইতিহাসে দেখা যায় মধ্যযুগে তাদের পৃথক অস্তিত্ব ছিল, হিন্দুধর্মের সহিত তাদের বিরোধ ছিল, এবং সেই বিরোধ মিটাবার জন্য ধৰ্ম্মমঙ্গলকারগণের চেষ্টাও ছিল । আমরা এই প্রবন্ধে বৌদ্ধধৰ্ম্মের একটি শাখা ধৰ্ম্মঠাকুরের বিষয় আলোচনা করব । নাথপন্থ ও সহজযান সম্বন্ধে ভবিষ্যতে আলোচনা করবার আশা রাখি । ধৰ্ম্মপূজা সম্বন্ধে সৰ্ব্বপ্রথম শ্ৰীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বাংলাদেশে আলোচনা করেন। তবে তিনি এ বিষয় আলোচন করুল্লার পরে শস্যপুরাণ, ধৰ্ম্মপূজাবিধান ও অন্যান্ত গ্রন্থ আবিষ্কৃত ও প্রকাশিত হয়েছে। * এইসব গ্রন্থ এ পর্য্যন্ত ভাল করে আলোচিত হয় নি । ‘ধৰ্ম্মপূজা বুদ্ধেরই পূজা। কেহ কেহ বলেন—এই ধৰ্ম্ম বৌদ্ধত্রি-রত্বের দ্বিতীয়-রত্ন । কিন্তু সে ধৰ্ম্ম নারীমূৰ্ত্তিতে পরিকল্পিত । ধৰ্ম্ম ও সঙ্ঘ উভয়ের চারি চারি হস্ত, কিন্তু

  • সম্প্রতি শাস্ত্রী মহাশয় এ সম্বন্ধে এক প্রবন্ধ লিখেছেন– Huddhism in Bengal, li ice, Ireview son Octuber. 1921.