পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిట్రNు. —ভাই, তুমিই আমার চেয়ে সাচ্চ জহুরী, রত্বের সন্ধান আগে থেকেই পেয়েছিলে! একেবারে দুই হীরে, সাত রাজার ধন কোনটি ? —ও, আসতে না আসতেই খোজ পেয়েছে ! তুমি বোরিং না করেই খনির সন্ধান পাও বলে ? —না ভাই ! এখানে একটু বোরিং করতে হচ্ছে, তা বুড়োর টাকাকড়ির সন্ধান কিছু পেলে ? —কি করে জানি বল, retired I. C. S. কিছু বিশেষ নাও থাকৃতে পারে, আর ছবি অঁাকতে এসেছি— —বন্ধুর কাজটা একটু কর না। দেখ, তুমি একবার বলেছিলে, আমি যদি লাখপতি হই, আর তুমি যদি তোমার মানসীকে খুঁজে পাও, তবে আমি তোমার হিংসা করব—কথাটায় কিছু সত্য আছে মনে হচ্ছে। একটু অবাক হইয়া রজত বলিল—তাই নাকি, ওটা ত আমি তর্কের মুখে নিছক কবিত্ব করেছিলুম। যতীনের মনে আজ কি স্বপ্নের রং ধরিয়া গিয়াছে। সে বলিতে লাগিল—না হে, এই যে ভূতের মত ঘুরে বেড়াচ্ছি, সেটা ঠিক টাকার জন্য নয়, ভাবতে বস্লে এমন কি স্থখ ! কি জান, কি প্রাণের আগুন দেহে জলছে, ষ্টিম পাওয়ার তৈরী হচ্ছে, তার টানে কোথায় যে চলেছি—ই, কি কথাটা বলেছিলে—? —The girl of my heart's desire. —ই, সেই right girlকে না পেলে, বুঝলে – —তুমি কি বুঝতে আরম্ভ করছ নাকি ? এই দুই তরুণীর, ক্ষণিক দর্শনে বাস্তবিক যতীনের মনে কি নেশা লাগিয়া গিয়াছিল। এ যেন ইঞ্জিনবয়লারের ভিতর কয়লা পূরিয়া আগুন জালাইয়৷ ষ্টিম তৈরী করিতে স্বল্প না করিয়া কে সোনার তার জুড়িয়া সেতার বাজাইতে বসিল। একটা অক্ষুট ছ’ করিয়া যতীন সিগারেট টানিতে লাগিল । অৰ্বদগ্ধ সিগারেটটা ক্রোটন-গাছগুলির তলায় ফেলিয়া রজত বলিল—তুমি এই ছোটনাগপুরে সোনার খনি পেতে পার, কয়লার খনি খুঁড়তে খুঁড়তে হীরের খনি পেতে পার। কিন্তু right girl, বুঝলে, ওটা প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড কপাল, জীবনের সব চেয়ে বড় সৌভাগ্য। বিয়ে করাটা জানই ত জুয়াখেলার মত— —না ভাই, এখনও জানিনি,-বলিয়া যতীন উঠিয় দাড়াইল । —কি উঠলে যে ? --ভাই, সময়ত বেশী নেই, স্মিথের সঙ্গে engagement আছে, আধ ঘণ্টা বাদে । আবার মোটরটা ঠিক করতে হবে। 4 —তা হলেও যোগেশ-বাবুর সঙ্গে একবার দেখা করে’ যাও । —চলো । ড্রয়িংরুমে ফাসীপাঠ চলিতেছিল। যতীন সশব্দে প্রবেশ করিতেই যোগেশ-বাৰু মুখ . তুলিয়া চাহিলেন। রজত বলিল—ইনি আমার বন্ধু, যতীন্দ্রনাথ দত্ত । যোগেশ-বাবু বলিলেন- বস্থন আপনার, আপনার মোটরটাই কি—? —হঁl, আমার মোটরকার—আপনাদের এসে disturb কবুলুম, না ?—বলিয়া যতীন বক্রসৃষ্টিতে কাজী সাহেবের দিকে চাহিল। কাজীও এই বাঙ্গালী সাহেবটির দিকে প্রসন্ন নেত্ৰে চাহিলেন না। ন, না, একটু কবিতা পাঠ হচ্ছিলো, শুনবেন ? বলিয়া যোগেশ-বাবু বাধানে দাতগুলি বাহির করিয়া হাসিলেন । কাজীসাহেব যোগেশ-বাবুর কথায় একটু বিরক্ত চঞ্চল হইয়া উঠিলেন, এই লোকটিকে কবিতা শোনাইতে তিনি মোটেই রাজী নন। যতীন বলিল-ন, না, কবিতা আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না, ও রজতই ঠিক বুঝবে, আমরা কাজের লোক— সহসা তাহার মুখের কথা থামিয়া গেল, সন্মুখের দরজা দিয়া মাধবী প্রবেশ করিল, নিমেষের জন্ত মাধবীর চোখের কালো তারার উপর তাহার চোখ গিয়া পড়িল। মূৰ্ত্তিমতী কবিতা তাহার সম্মুখে দাড়াইয়। মাধবী কোনরূপ চাঞ্চল্য প্রকাশ না করিয়া পিতার চেয়ারের নিকট আলিয়৷ অতি মৃদুর্কণ্ঠে বলি-বাব, রজত-বাবুর বন্ধু কি চা খাবেন ? to