পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] কার দিনের কোনো পুরুষ চিত্রকর এমন করে চিত্র রচনা করতে পারত না। মেয়েদের হাতের স্বাভাবিক স্বশ্বচেতন, এবং নারীর নিজের মধ্যে অন্তগূঢ় জাতীয় জীবনের অখণ্ড ধারাবাহিকতার সহজ-বোধের দ্বারাই এটা সম্ভবপর হয়েচে । সেইজন্যেই এখনকার কালের অশিক্ষিত গ্রামবধুরা তাদের আলপনায় যেসব মোলায়েম গোল রেখার ধারা অঁাকে, তার মধ্যে আমরা সনাতন ভারতকলাপ্রচলিত প্রাণের গতি-রেখা দেখতে পাই। স্ননয়নী দেবী আর্টিস্ট্র পরিবারের মেয়ে। র্তার কোনো কোনে ভাই বহুকাল পূৰ্ব্বে অজস্তার গুহায় ছবি একেছিলেন, আবার তার কোনো কোনো ভাই আর কিছুকাল পরে ইটালিতে জন্মেছেন, যেমন, মার্গারিটোনে ডারেজো এবং গুইডোড়া সিয়েনা । এইসব ভাইদের মধ্যে কেউ কারো অনুকরণ করেন নি, এমন কি পরস্পরের অস্তিত্ব র্তাদের জানাই ছিল না। কিন্তু স্থষ্টির এমনই আশ্চৰ্য্য নিয়ম যে, মানুষের অন্তরের অভিজ্ঞতা যখন একটি বিশেষ ক্ষেত্র অবলম্বন করে চলে তখন দেশকাল নিৰ্ব্বিশেষে তা একই রূপ ধারণ করে । এই জন্তেই ত সকল কালের সকল দেশের যোগীদের জীবন ও উক্তি সম্বন্ধে এমন সাদৃশ্ব দেখা যায়। যে একটি দ্বিধাহীনতার জোরে স্বনয়নী দেবী তার তুলিতে রেখার টান দেন, সেই নিঃসংশয় বোধশক্তির অমুসরণ করেই তিনি রঙের মধ্যে লাল আর সবুজ বেছে নিয়েচেন । র্তার বৈচিত্র্যহীন বর্ণ-সমাবেশের মধ্যে একটি حجحتج-جـ يحتجتتحت تحتية আসা-যাওয়ার মাঝখানে (:86. AMAeMAeMAeMeS গাম্ভীৰ্য্য আছে। সোনালি আর কালো রং পরিমিতভাবে বাটোয়ারা করে দিয়ে তার ছবিতে তিনি ঘনতা দেখিয়েছেন ; আর মেয়েদের মুখের, দেয়ালের, পর্দার কোমল ধূসর (grey ) এবং পিঙ্গল (brown ) রঙের এক সমতলে তিনি লাল আর সবুজ রঙ মেলে ধরেছেন । এই রকম চিত্রকলার মধ্যে সে নিবিড়ত আছে সে নিজের মধ্যেই নিজে বদ্ধ থাকে, কেননা শিল্পীর অন্তর্নিহিত রীতিধারাই তার আশ্রয়। কোনো শিক্ষা, বাইরের কোনে প্রভাব তাকে পোষণ করতে পারে না ; বরঞ্চ তাকে মূলভ্রষ্ট করে দিয়ে নষ্টই কবৃতে পারে। আরও একটি বিপদ আছে, মাঝে মাঝে স্বনয়নী দেবীকে ত৷ আক্রমণ করে থাকে, সে হচ্চে মামুষের জীবনযাত্রা ও গল্পের সম্বন্ধে তার ঔৎসুক্য । তার নিজের স্বৰ্ণষ্ট যে-সমস্ত উপাদানকে ব্যবহার করে সেইগুলি যদি উীর দৃষ্ট বা কল্পিত পদার্থের অমুকুতি-চেষ্টায় খাটাতে হয় তাহলে তার সহজ স্বজনশক্তির উৎস এইসব জঞ্জালে রুদ্ধ হয়ে যেতে পারে, তাহলে তার দৃষ্টির ও লেখনী-চালনার ক্ষিপ্রতাই প্রবল হয়ে উঠবে এবং হৃদয়াবেগ ও ঘটনা-বর্ণনার ব্যস্ততায় তার রচনার স্বাভাবিক শাস্তি চলে’ যাবে। স্বনয়নী দেবীর নিজের অন্তরের মধ্যেই আর্টিস্টের সমস্ত ঐশ্বৰ্য্য আছে। তার আর কিছু দরকার নেই। তিনি যদি তার সেই ঐশ্বৰ্য্য ভাণ্ডারের অধিদেবতার গোপন সঙ্গীতে কান পেতে থাকেন, তাহলেই তার শ্রেষ্ঠ রচনা আপনিই প্রকাশিত হতে থাকৃবে। ষ্টেল ক্রামরিশ, আসা-যাওয়ার মাঝখানে আসা-যাওয়ার মাঝখানে একলা আছ চেয়ে কাহার পথ-পানে! আকাশে ঐ কালোয় সোনায় প্রাবণ-মেঘের কোণায় কোণায় আঁধার-আলোর কোন খেলা যে 羲 কে জানে, আসা-যাওয়ার মাঝখানে ! 委 শুকৃনে পাতা ধূলায় ঝরে, নবীন পাতায় শাখা ভরে । মাঝে তুমি আপন-হার, পুয়ের কাছে জলের ধারা যায় চলে ঐ অশ্র ভরা কোন গানে, আসা-ধাওয়ার মাঝখানে । ১৮ অলিটি, ১৩১৯ ཝི༽ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর