পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ប្រី | 腳 . to বাঙালীর আলস্য আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় কোন কালেই বেশ সুস্থ সবল ছিলেন না । এখন তাহার উপর তাহার বয়স ষাটের উপর হইয়াছে। এই বয়সে শারীরিক অসুস্থত। ও অবসাদ, রোদ বৃষ্টি ও কাদ, সবই অগ্রাহ করিয়া তিনি যে দেশের কল্যাণার্থ নানা স্থানে গিয়া দেশের লোককে, জাগাইতে চেষ্টা করিতেছেন, তজ্জন্য শতমুখে তাহার প্রশংসা করিতে হয় । কিন্তু তাহার ব্যক্তিগত প্রশংসা করিবার জন্য আমরা লিখিতে প্রবৃত্ত হই নাই । তাহার একটি কথা ও র্তাহার দৃষ্টাস্তের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা আমাদের..উদ্দেশ্য । তিনি অনেকবার লিখিয়াছেন ও অনেক জায়গায় বলিয়াছেন, যে, আলস্য বাঙালীর দারিদ্র্যের এবং নানাদিকে বাঙালীর অধঃপতনের একটি প্রধান কারণ । বাঙালীর চেযে পৃথিবীর কোন জাতি বেশী বুদ্ধিমান নয়। বাঙালীর মধ্যে খুব বলবান লোকও ছিল এবং আছে। তথাপি বাঙালী গরীব কেন, বাঙালীর পেটে অল্প নাই কেন, বাঙালী একটি একটি করিয়া রোজ গারের সকল ক্ষেত্র হইতে তাড়িত হইতেছে কেন ? তাহার একটি কারণ আলস্ত। অন্য কারণও আছে—যেমন, বাঙালীর পরস্পরকে অবিশ্বাস এবং নিজেদের মধ্যে পরশ্ৰীকাতরতা । এই অবিশ্বাসের কারণও আমরা । জাতির মধ্যে সত্যনিষ্ঠ ন্যায়পরতা ও কৰ্ত্তব্যপরায়ণতা যথেষ্ট পরিমাণে না থাকিলে, পরম্পরের উপর বিশ্বাস কেমন করিয়া জন্মিবে" যাহা হউক, আমাদের সব দোষের কথা না ভাবিয়া কেবল আলস্তের কথাই এখন ভাবি। দোষ-ক্ষালন ও আত্মপক্ষ-সমর্থন করিবার প্রবৃত্তি থাকিলে বলা যায়, আমাদের দেশের জলবায়ু পরিশ্রমের অনুকূল নহে, এখানে বড় ম্যালেয়ি য়ার প্রাদুর্ভাব, ইত্যাদি ; এইজন্য আমরা এত অলস। কিন্তু আগেও এদেশে এমনি গরম, এমনি বর্ষা, এমনি কাদা ছিল ; অথচ তখন ত আমাদের দৈহিক পরিশ্রমের সব কাজ ওড়িয়া, বিহারী, হিন্দুস্থানী, সাওতাল প্রভৃতির করিয়া দিত না। আমরাই করিতাম। ম্যালেরিয়াতে শরীর অবসাদগ্ৰস্ত হওয়ায় আলস্য উৎপাদন করে বটে ; কিন্তু আলস্য ম্যালেরিয়ার জনকও বটে। কারণ, দারিদ্র্য ম্যালেরিয়ার একটি কারণ ; যাহারা পরিশ্রমী ও উপাৰ্জক এবং যাহাদের শরীর পুষ্ট তাহদের চেয়ে অনশনক্লিষ্ট লোকদিগকেই ম্যালেরিয়া অধিক আক্রমণ করে । যাহার। নিজে পরিশ্রম করিয়া গ্রামের আগাছা ভঙ্গল কাটিয়া ফেলে, অনাবশ্যক খান ডোব বুজাইয় ফেলে, পুকুরের পঙ্কোদ্ধার করে, তাহীদের গ্রামে ম্যালেরিয়া অপেক্ষাকৃত কম হয়। পূৰ্ব্ব বঙ্গ অপেক্ষা পশ্চিম বঙ্গে ম্যালেরিয়া বেশী ; লক্ষ লক্ষ লোক মৃত্যুতে কমিয়াছে পশ্চিম বঙ্গের জেলা-সকলে। কিন্তু ধান কাটিবার জন্য পশ্চিম বঙ্গের লোকেরা স্থানান্তর হইতে তত মজুর আমদানী করে না, যত পূৰ্ব্ব বঙ্গের লোকেরা করে। ‘বিহারের অনেক জেলায় অনেক বৎসর হইতে ম্যালেরিয়ার খুব প্রাদুর্ভাব হইয়াছে। কিন্তু সেই-সব জেল হইতেও হাজার হাজাব লোক বঙ্গে আসিয়া দৈহিক শ্রম দ্বারা বিস্তর টাকা রোজগার করে । অতএব ম্যালেরিয়ার জন্যই আমরা অলস হইয় পড়িয়াছি, ইহা সত্য নহে। আলস্যের প্রধান কারণ এই, যে, আমাদের স্বভাব খারাপ হইয়াছে। আমরা পরিশ্রম, বিশেষতঃ শারীরিক পরিশ্রম, কবিতে চাহি না ; আমরা কষ্টসহিষ্ণু নহি, আমরা বাৰু। ষষ্টিপর বৃদ্ধ আচাৰ্য্য রায়ও ত ক্ষীণজীবী বাঙালী; তিনি সঙ্গতিপন্ন সন্ধান্ত বংশের সন্তান ; নিজেও বংসরে রোজগার করেন অনেক হাজার টাকা। তিনি