পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] মুক্তধারা JSDరి AJJSJJAJSAJJAJJMAJeeJJJJJJAMMMMMMAMAMAAeeeAJJAA AJSAAAJBAAAS “বালিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গ্রন্থাবলীর জাৰ্ম্মান অঙ্কুবাদক বলিয়া বিখ্যাত ডক্টর হেলমুট ফন্‌ গ্লাসেনাপ, আমাদের পত্রিকার লেখক। তিনি আমাদিগকে সংবাদ দিয়াছেন যে ভারত-কবির একটি নূতন নাটক প্রকাশিত হইয়াছে যাহ। এ পর্য্যন্ত কোনো যুরোপীয় ভাষায় অনুবাদিত হয় নাই। তিনি সেই নাটক সম্বন্ধে আমাদিগকে নিম্নলিখিত বিবরণটি श्रृंॉ*ांझेम्नांद्दछ्न “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নূতন নাটক “কলিকাতা হইতে প্রকাশিত মাসিকপত্র প্রবাসী ( অর্থাৎ বিদেশবাসী ) তার এপ্রেল (বৈশাখ ) সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত মূল বাংলা একখানি নূতন নাটক প্রকাশ করিয়াছে । “নাটকখানির নাম মুক্তধারা—অর্থাৎ বাধাহীন শ্ৰোন্ত, —ইহা একটি বড় ঝরণার রূপক নাম ; সেই ঝরণাটিই নাটকের ঘটনার কেন্দ্র এবং উহারই চারিদিকেই নাটকের সকল দৃশ্য সন্নিবেশিত । “কবির নাটকের ভিত্তীর্ভূত গল্পটি এই— “উত্তরকুটের রাজা রণজিতের ইঞ্জিনিয়ার ( যন্ত্ররাজ ) বিভূতি ২৫ বৎসর চেষ্টার পর মুক্তধারার জলস্রোত রুদ্ধ করিয়া একটি বাধ বাধিয়াছে, তাতে নাবাল দেশ শিব তরাইএর জলের যোগান বন্ধ হইয়াছে। শিবতরাইএর লোকেরা উত্তরকুটের অধীন, কিন্তু প্রায়ই তাহার বিদ্রোহী ও অবশীভূত হইয় উঠে। “রাজা রণজিত আশা করিতেছেন যে মুক্তধারার জলস্রোত রুদ্ধ করিয়া তিনি শিবতরাইএর লোকদের বশে রাথিতে পারিবেন । মুক্তধারার বাধ সম্পূর্ণ হওয়ার উৎসব অষ্টুষ্ঠিত হইবে। মুক্তধারার সন্নিহিত ভৈরবমন্দিরে সেইদিন এক মহৎ উৎসবের অনুষ্ঠান হইবে । “ভৈরব-মন্দিরের পুজারী ভৈরবপন্থী সন্ন্যাসীরা যখন তাদের ইষ্টদেবতা শিবের স্তোত্র গান করিয়া বেড়াইতেছে, তখন বিভিন্ন পাত্র পাত্রী রঙ্গভূমিতে উপনীত হইয় যন্ত্ররাজ বিভূতির ও তার যন্ত্র সম্বন্ধে বিবিধ মন্তব্য প্রকাশ করিতেছে। “কেউ কেউ তাকে মহৎ প্রতিভাশালী স্থির করিয়া প্রশংসা করিতেছে এবং তার যন্ত্রের মহিমা গান করিতেছে। অন্যেরা আবার তাকে তুচ্ছ করিতে চেষ্টিত, এবং বাধ বাধিতে যে কত লোক প্রাণ দিয়াছে তাহা স্মরণ করিয়া ক্ষুব্ধ। রাজবাড়ীর কেউ কেউ বিভূতিকে শিবতরাইএর লোকদের সর্বনাশ করিয়া মুক্তধারা একেবারে রুদ্ধ করা হষ্টতে বিরত করিতে চেষ্টত । কিন্তু এঞ্জের চেষ্টা তেমনি বিফল হইল, যেমন নিফল হইয়াছিল রাজার কাছে ধনঞ্জয় বৈরাগীর নেতৃত্বে আগত শিবতরাইএর লোকদের আবেদন । “কিন্তু রাজা সবচেয়ে বড় বাধা পাইলেন যুবরাজ অভিজিং হইতে। এই কুমার বিশ্বমানবের বিচক্ষণ বন্ধু। তিনি এই কথা কিছুতেই স্বীকার করিতে পারিলেন না যে উত্তরকুট রাজ্যের রাষ্ট্রনীতির কাছে শিবতরাইএর সকল প্রজাকে বলি দেওয়া যাইতে পারে। “যুবরাজ অভিজিংকে তার পিতা রাজা রণজিত এই অধীন দেশ শিবতরাইএর শাসক নিযুক্ত করিয়৷ পাঠাইয়াছিলেন। অভিজিৎ যখন বিজেতা রাজার প্রতিনিধি রূপে সে দেশে ছিলেন, তখন তিনি স্বদেশবাসীর স্বার্থ অপেক্ষ সেই দেশবাসীর হিতসাধনেই অধিক চেষ্টিত ছিলেন। এজন্য নদীসঙ্কটের অবরুদ্ধ পথ খুলিয়া দিয়৷ তিনি বাণিজ্য চলাচলের সুবিধা করিয়া দেন । এই পরাধীন দুর্ভিক্ষপীড়িত রাজ্যের ভাঙ্গতে সুবিধা হইয়াছিল যথেষ্ট, কিন্তু বিজেতা উত্তরকুটের তাতে পরধন অপহরণে অন্তরায় উপস্থিত হইয়াছিল । “অভিজিং যন্ত্ররাজের ধন্থ ভগ্ন করিবার জন্য যে ব্যগ্রত প্রকাশ করিতেছিলেন তার উদ্দেশ্য কেবল মাত্র মানবহিত নয়, তার মধ্যে আধ্যাত্মিক কিছুও ছিল। যুবরাজ অকস্মাং জানিতে পারিয়াছিলেন যে তিনি বাস্তবিক রাজা রণজিতের পুত্র নন ; রাজা তাকে মুক্তধারার নিকট সদ্যোজাত শিশু অবস্থায় কুড়াইয়৷ পাইয়া পালন করিয়াছেন, কারণ রাজা এই শিশুর অঙ্গে রাজচক্ৰবৰ্ত্তীর লক্ষণ ও চিহ্ন দেপিতে পাইয়াছিলেন । “যুবরাজ এই সংবাদ জানার পর অনুভব করিতে লাগিলেন তিনি যেন অবাধ ব্যগ্রগতি মুক্তধারার সন্তান । সেই জলধারা তাকে মুগ্ধ আক্লষ্ট করিল। সেই জলধারা ও নিজের মধ্যে একটি আত্মিক সম্পর্কের টান তিনি অন্তরে অন্তরে অনুভব করিতে লাগিলেন । স্বতরাং মুক্তধারার প্রাণ ও স্রোতগতি যেন তার নিজেরই জীবনধারা বলিয়া অনুমিত হইতে লাগিল। এবং সেই মুক্তধারার অবাধ জলস্রোতের আশীৰ্ব্বাদ সৰ্ব্বমানবের উপভোগ্য করিয়া রাখাই তার পবিত্র কর্তব্য বলিয়া মনে হইতে লাগিল । “রাজ রপ্তজিতেব আদেশে যুবরাজ বন্দী হইলেন ; রাজা মনে করিয়াছেন যে শাস্তির ভয়ে অভিজিতের স্বভাব সংশোধিত হইবে। এদিকে উত্তরকুটের জনসঙ্ঘ চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে ; যুবরাজ অভিজিং শিবতরাইএর লোকদের পক্ষ হইয়া স্বদেশের বিপক্ষতা আচরণ করিতেছেন বলিয়া কেউ কেউ তাকে শাস্তি দিতে ব্যগ্র হইয়া উঠিয়াছে; কেউ কেউ তাকে মুক্তি দিতে ইচ্ছুক।