পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] "A^^^^ ヘヘヘヘン নীরব ভৎসন, না আছে পঞ্চায়েতের অলঙ্ঘ্য বিধান। আবার এই মত্ত আমোদ বা আসক্তি না থাকিলে সে বঁাচে না, কারণ কল যে তাহার চোখ কান হাত পা অবশ করিয়া দেয়। একটা উৎকট স্বায়বিক উত্তেজনা ভিন্ন সে পরিশ্রমের পর বিশ্রাম বা আনন্দ পায় না। তাহার পর ক্ষুদ্র সেতসেতে বস্তিতে বাস,—খড়, খোলা, কখনও বা শুধু হোগলাপাতার ঘর, অথচ ঘরের ভাড়া অত্যন্ত অধিক, সেখানে দিনের বেলায় আলো না জালিলে কিছুই দেখা যায় না । সঙ্কীর্ণ জায়গায় কোন রকমে পুরুষ স্ত্রী নিৰ্ব্বিশেষে মাথা গুজিয়া থাকা, না আছে লজ্জা, না শ্ৰী—সম্মুখেই অপরিষ্কার গলি, আবর্জনারাশির মত সেখানে সব সময়েই কুৎসিত আলাপ ও অকথ্য গালাগালির বিনিময়। নিকটে মদের দোকানে মজুর তাহার মজুরীর অৰ্দ্ধেকের উপর ব্যয় করিয়া সমস্ত দিনের কঠোর পরিশ্রমের ক্লেশ ভুলিতে চেষ্টা করে । দলবদ্ধ হইয়া আমোদ প্রমোদ করিয়া আপনাকে দলের মধ্যে ঠিক রাখে। মদের দোকানে তাহার শিশুর অনাহার নাই, তাহার ঘরের অন্ধকার পূতিগন্ধ নাই, সেখানে আছে একটু আরাম আমোদ ও আলো । কারখানার মালিকরা উপযুক্ত বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ, বিশুদ্ধ আমোদ প্রমোদ বা শিক্ষার ব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয়ে কোন দায়িত্ব স্বীকার করেন না। মালিক লাভ করিতেছে শতকরা ৫০০, কিন্তু মজুরের পারিশ্রমিক অতি অল্প হারে বৃদ্ধি পাইতেছে, শতকরা ১০। কুলিদের মানুষ করিবার কোন চেষ্টাই মাই। শ্রমজীবী-সংঘ ও সন্মিলন গঠিত হইতেছে, কিন্তু চিকিৎসা শিক্ষা ধৰ্ম্মঘট প্রভৃতির জন্য চাদার ব্যবস্থা নাই, নিয়মকানুন নাই, শিক্ষিত ধুবুন্ধর নাই, সংহতি-কাৰ্য্যসাধন-ব্যবস্থা নাই । শ্রমিক ও মালিকের বিরোধে ধৰ্ম্মঘট ও দাঙ্গাহাঙ্গামা ঘটিতেছে,— সঙ্গে সঙ্গে অনাহার ও ক্লেশ। বিরোধ মিটে খুব কষ্টে এবং শেষ মীমাংসার কোন আয়োজন নাই । কল তুলিয়া দেওয়া মজুরদিগের বর্তমান কাৰ্য্যরীতি আমূল পরিবর্তন না করিলে, নূতনভাবে, শিল্পপ্রণালী ন গড়িয়া “ তুলিতে পারিলে আমরা ইউরোপের গত শতাব্দীর ধনী ও শ্রম স্বদেশীর দ্বিতীয় যুগ ჯNo)) জীবীর সংঘর্ষ ও সমূহ-তন্ত্রের নিদারুণ ইতিহাস এদেশে পুনরাবৃত্তি করিব । কলের সহিত মানুষের নূতন সম্বন্ধস্থাপন একান্ত প্রয়োজন—কল মামুষের তৃত্য, কলকে যদি আমরা আয়ত্ত করিতে পারি, ধনী ও শ্রমজীবী মিলিয়া কলকে সমাজ-সেবায় নিয়োজিত করিতে পারি, তবেই কলের জীবন সার্থক হয় । তাহ করা যায়। অধিকন্তু ইহা অসম্ভব মনে করিয়া যদি আমরা রুশিয়ার সমূহবানীদিগের মত কল তুলিয়া দিই, তাহা হইলে আমাদের দুৰ্গতির সীমা থাকিবে না । .শুধু চরকা, তাত, কামারশাল, টেকিশাল, জাত, উদুখল লইয়া থাকিলে আমরা আর বঁাচিব না, . কারণ জাহাজে রেলগাড়িতে চড়িয়া বণিক যে তুলাদণ্ড হাতে লইয়া আসিয়াছে একবারে গ্রামের হাটের মাঝখানে । সে তুলাদও প্রাচীন ও নবীনের বিভিন্নতা বিচার করে না, সে ওজনে কম বেশী ছাড়া আর কিছু জানে না, তা জিনিষ-বিজ্ঞানের দ্বারাই হউক বা অজ্ঞানের দ্বারাই ইউক ! তাহাতে দেশের অশান্তি উপসর্গ আস্বক বা না আসুক, তার জিনিষ বিক্রয় হইলেই হইল । কল আয়ত্ত করা • কলকে আয়ত্ত করিবার একমাত্র উপায় তাহাকে মালিক ও বণিকের লোভ হইতে রক্ষা করা। কলকারখানা ও ব্যবসায়ে মাতুিক মজুরের সমবেত স্বামিত্ব, অন্তত সমবেত দায়িত্ব, চাই । তাহা নিৰ্ব্বিবাদে ও স্বাভাবিক ভাবে আসিবে যদি আমরা দিন দিন অধিকতর তাড়িতশক্তি কলকজা-চালনে লাগাই । বাষ্প ও তাড়িত শক্তির শিল্পে নিয়োগে তফাৎ এই—তাড়িত শক্তির ব্যবহারে ব্যবসায় কেন্দ্রীভূত ও এক কেন্দ্রে ক্রমশঃ বিরাট হইতে বিরাটতর হয় না। ব-দূর পর্য্যস্ত তাড়িত শক্তি লইয়া যাওয়া সহজ, তাহাতে গড় খরচ কমিবে, বাপচালিত কলের মত বাড়িবে না। এইরূপে তাতীদের গ্রামে, কামারশালায়, লোহার কারখানায়, তেলের কলে, দূরে চিনির বা চাউলের কলে তাড়িত শক্তি পৌছাইয়া দিয়া পল্লীগ্রামকে ੋ: আধুনিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায়ের ধর্বে দীক্ষিত করা যায়। নগরে বা কলকারখানায় বহু লোক একত্রে বাস ও কাজ করিবার জন্য যেসব অমঙ্গলের স্বটি করে তাহার প্রতিরোধ হইবে , অড়িতের সাহায্যে