পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬৮ লতিক গর্জন করিয়া উঠিল “হ্যা গো হ্যা আমি করে অস্থখ বাড়াচ্ছি, যত দোষ সবই আমার। বেশ তাই তাই, তোমরা আমায় জালিও না, চলে যাও সব – দে नांद्देश-प्ले tि* দে-উঃ, আঃ! বাবা – লতিক किबिश तद्रेण । মাত আসিয়া গৃহদ্বারে দেখা দিলেন। হৃষ্টপুষ্ট স্থূলকায় দিব্য স্বন্দরী রমণী অতি নীরিহ রকমের ভালমাচুৰ্য ; উচ্চশিক্ষিতা নহেন, সংসর্গগুণে অনেকটা উন্নত হইয়াছেন, স্বভাব অতি ধীর। তাহাকে আসিতে দেখিয়া জ্যোৎস্না উঠিয়া খাটে ঠেস দিয়া দাড়াইল। ম৷ বলিলেন “কত জর দেখলি রে?” সরসী উত্তর দিবার পূৰ্ব্বেই লতিকা বলিল "একশো পাচ। মা তুমি বাবাকে টেলিগ্রাম কর, আমি আর বঁাচবে না।” মাতা অবাক হইয়া জ্যোংস্কার পানে চাহিলেন। জ্যোৎস্ব অনিচ্ছা সত্বেও গোপন ইঙ্গিতে জানাইল তেমন কিছু নহে। মাতা আশ্বাস পাইয়া লতিকার মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন "ডাক্তার বাবুকে ডেকে পাঠাই, তিনি আগে দেখুন, তারপর টেলিগ্রামের ব্যবস্থ৷ কচ্ছি,—” সরসী বলিল "বড়দাকে ডাকব মা, ডাক্তার বাবুর কাছে যেতে ?” কটমট করিয়া চাহিয়া লতিকা বলিল “ডাক্তার কি বলবে ? কতক্ষণে মরব ?" এ কথার কোন সদুত্তর না দিয়া সরসী ধীরে ধীরে চলিয়৷ গেল। সে দৃষ্টির বহিভূত হইলে মাতা ব্যথিতভাবে হাসিয়া বলিলেন “তুই বাছ, দুরন্ত রাগী।" | ঝঙ্কার দিয়া লতিকা বলিল "আমি দুরন্ত রাগী ! তোমার মেয়ে চিপটেন কেটে কথা কইবে, তাতে দোষ নেই, সে যে আছরে মেয়ে !" - কথা কহিলেই কথা বাড়িবে। কাজেই মাত চুপ করিলেন। এই বিসদৃশ রৌদ্রাভিনয়ের মধ্যে তাহার কি করা কর্তব্য ঠিক করিতে ন পারিয়া জ্যোৎস্ব অদূরে একটা চৌকী টানিয়া লইয়া বসিল। লতিকার আপত্তি টিকিল । ন। যথাসময়ে ডাক্তার আসিয়া নিজে থামিটার দিলেন, MMMMMMMMMMSJMS জর উঠল একশে ই ডাক্তার চালাগেলে রিলি “পাচ জর কে বল্পে, এ ত মোটে দুই—“ লতিকা মুখ বাকাইয়া বলিল "কে জানে ওরাই তো - বল্লে!” জ্যোংস্কার কানে কথাটা গেল, সে ক্ষুব্ধ হইল! কাহারে সহিত বাদামুবাদ করিতে সে বড় ভয় পাইত। তাই নির্দোষী হইলেও তাহার ঘাড়ে আকারণ অনেক দায় পড়িত, কিন্তু সে মুখ ফুটিয়া প্রতিবাদ করিতে পারিত না। সে স্বভাবতঃই তীরু, তাহাতে পরের বাড়ী আসিয়া ক্রমাগত অপ্রত্যাশিত রূঢ় ব্যবহার লাভ করিয়া করিয়৷ সে যেন বিষম সঙ্কটে পড়িয়াছে ! তাহাতে সে জানিত না, যে, লতিকার দুটি মূৰ্ত্তি আছে!—সে এক মূৰ্ত্তিই লতিকার বরাবর দেখিয়াছে। . বোর্ডিংয়ের হাস্ত-মুখরিত, চাঞ্চল্য, উচ্ছসিত, অনর্গল তীক্ষকণ্ঠের দন্তময় পরিহাসবচন বিশ্বরিতা, অত্যন্ত সৌহৃদ্যশালিনী, প্রিয়সখী ঠাকুরাণীকে, বোর্ডিং ছাড়িয়া স্থানাস্তরে আসিয়া অকস্মাৎ অদ্ভূত ভাব স্তরে পরিবর্ধিত হইতে দেখিয়া সে যেন মহাফফরে পড়িস্বাছে। যে পরের কাছে অত হাসি হাসিতে পারে,-সে যে আত্মজনের নিকটে ক্রমান্বয়ে এমন রুগ্ম মূৰ্ত্তি কি করিয়া ধরিয়া থাকে, তাহ সে মোটে বুঝিতে পারিতেছিল না। যাহাই হউক নিজে যথেষ্ট জালাতন হইয়া এবং সকলকে যথেষ্ট জালাতন করিয়া সে-যাত্র লতিকার ব্যাধি-পৰ্ব্ব শেষ হইল। পরদিন বিকালে ঘাম হইয়া জর ছাড়িয়া গেল। কন্যার সংবাদ লইতে ঘরে আসিয়া মাতা দেখিলেন জ্যোৎস্ব ও সরসী সেখানে বসিয়া আছে। মা আসিয়া মেয়ের বিছানায় বসিয়া গায়ে হাত বুলাইতে লাগিলেন। কেন জানি না লতিকার মেজাজ তখন একটু ভাল ছিল, মাতার সহিত কথাবার্তা সরলভাবে কহিতে লাগিল। কিছু ক্ষণ পরে মাত বলিলেন "আহ জ্যোচ্ছনার বড় কষ্ট হয়েছে। তুই পড়ে রয়েছিল, বাছার আমার কথা কবার লোকটি নাই।” - লতিকা চোথ চাহিয়া শান্তভাবে বলিল “যা না খুকি, তোরা দুজনে একটু বেড়িয়ে আয়।" মৃদ্ধ আপত্তি করিয়া জ্যোংস্কা বলিল “থাক আজ ; তুমি ভাল হও, কাল বেড়াতে যাব।” [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড | ২য় সংখ্যা ] "াবেই বা কিসে? গাড়ী টাড়ি ছাই আছে—” কথাটা কেহ বুঝিল না, নিৰ্ব্বোধ সরসী বলিল “কেন? ব্রুহাম, ফিটন, ওগুলো তে রয়েছে।" প্রতি পদে ছুতা ধরিতে বাগ্ৰ, ঘোরতর অসন্তোষময়ী লতিকা তীব্রস্বরে বলিল, “ত যা না রে বাপু, আমোদ করে নেচে বেড়াতে কে তোদের বারণ কচ্ছে ?—আমার কাছে বসে থাকতে কে তোদের মাথার দিব্যি দিচ্ছে ?—” দাসী সাগুর বাটি লইয়া ঘরে ঢুকিল। অগ্নিতে স্থতাস্থতি পড়িল। লতিকা মনের যতটা ঝাল এক করিয়া অকস্মাৎ তাহাকে এমনি তাড়না করিয়া উঠিল, যে, সে * বেচারী পড়িয়া গিয়া ঘরময় সাগু ছড়াইল ! লতিকা তো ক্ৰোধে খুন ! মাত অনেক সাধ্য সাধনায় বহু কষ্টে তাহাকে খানিক শাস্ত করিলেন । কিন্তু সে আর কিছুতেই কিছু ধাইল না, মাথা নাড়িয়া দৃঢ়স্বরে বলিল, “আমায় ত্যক্ত কোরো না, আমি কিছু খাব না।" অসহ বিরক্তিতে জ্যোৎস্নার সারা চিত্ত ভরিয়া উঠিল। নীরবে দাসীর হাত ধরিয়া তুলিল, কিন্তু তাহাকে আহ। বলিতে পারিল না, কেননা তাহাদেরই অপরাধে নির্দোষের এ শাস্তি ; নিজেকে সে অত্যন্ত অপমানিত জ্ঞান করিল। লতিকা কি মনে করে, যে, জ্যোৎস্ব নিতাস্ত নিরাশ্রয়, গলগ্ৰহ হইয় তাহদের বাড়ীতে বাস করিতে আসিয়াছে ; তাই প্রতিপদে এমন নির্দয়, দন্তপূর্ণ, তাচ্ছিল্য ব্যবহার করে। ইহা তো স্বভাবজাত অভ্যাস নয়, ইহা যে ইচ্ছাকৃত অগ্নি-উদ্বোধন ! জ্যোংস্কার মুখ চোখ লাল হইয়া উঠিল, তাহার কপালে ঘৰ্ম্মবিন্দু দেখা দিল । কন্যার ক্রমাগত কর্কশতায় মাতাও মনে মনে কেমন সঙ্কুচিত হইয়া পড়িতেছিলেন। নিজের মেয়ের ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোন কথা বলিলে তাহার নিস্তার নাই অথচ পরের মেয়েটির নিঃশব্দে উৎপীড়ন সহ করাতেও তাহার প্রবল উৎকণ্ঠ বাড়িতে লাগিল। জ্যোৎস্নাকে সরাইবার জন্য তিনি বলিলেন “সরসী যা মা, তোরা ফুলবাগানে একটু বেড়িয়ে আয়, আমি এখানে বসছি।” সরসী তৎক্ষণাং জ্যোংস্কাকে টানিয়া ঘাড় নাড়িয়া বলিল “আমুন—” দিদির সান্নিধ্য হইতে পলাইতে সেখ আন্দু Sهن | श्ञा९ বার লি লতিকা “আর পারিলেই সে বঁাচে । জ্যোংস্কা নীরবে তাহার সঙ্গে চলিল । সরসী বাগানে গিয়া জ্যোৎস্বাকে অনেক দুষ্প্রাপ্য ফল ফুললিতা পাতা দেখাইয়া তাহদের পরিচয় সবিস্তারে বর্ণনা করিতে লাগিল। জ্যোৎস্ব তাহাকে উৎসাহ দিয়া । বিশেষ আগ্রহ দেখাইয়া সে-সব কথা শুনিতে লাগিল। আসলে কিন্তু সে বড় মৰ্ম্মাহত হইয়াছিল, তাহার কিছুতেই তৃপ্তি হইতেছিল না। শুধু সরসী মনঃক্ষুণ্ণ হইবার ভয়ে তাহার কথায় সায় দিয়া যাইতে লাগিল । ঘুরিতে ঘুরিতে তাহারা উভয়ে বাগানের মাঝে টিনের ছাউনীতে ঘেরা বিশ্রাম-কক্ষে আসিয়া সবুজ রং দেওয়৷ লোহার বেঞ্চিতে বসিল । সরসী গোট কতক গাঁদা ফুল তুলিয়া আনিয়াছিল, সেগুলো দুহাতে লুফিতে লুফিতে বলিল, “দিদিকে নিয়ে আপনারা যে কি করেই সেখানে বাস করেন তা জানি না। অামি হলে এক দিনও ওঁর কাছে টিকৃতে পারতাম না, বাবাঃ! খিচিয়ে খিচিয়ে আমায় মেরে ফেলত, নাকে কানে খং!” সে নাক কান মোচড়াইয়া উদ্দেশে নমস্কার করিল। জ্যোংস্কা হাসিয়া ফেলিল। উৎসাহিত হইয়া সরসী বলিল “দেখছেন তো কেমন নারা-কাতুরে মাহুষ, একটু যদি অস্বখ হল, তা হলেই বাড়ী মাথায় করেছে। দিদি ছুটিতে বাড়ী এলে আমি ত কাটা হয়ে থাকি, মনে হয় কত দিনে যাবে।” একটি বড় গাদা ফুল লইয়া জ্যোংস্কার জামায় গুজিয়া দিতে দিতে বলিল “আপনি বেশ মহিষ, আপনাকে আমার বড় ভাল লাগে। বাড়ীর মধ্যে শুধু আপনাকে, আর মাকে ভালবাসি, আর কাউকে নয়!” সরসীর সরলবুদ্ধিতে জ্যোৎস্ব নিজেকে তাহাম্বের বাড়ীর সামিল হইতে দেখিয়া আবার হাসিল। বলিল "আচ্ছা, দাদাদের ?" সবেগে মাথা নাড়িয়া সরসী বলিল “উহু ছোড়দাকে তো মোটেই নয়, ভারি খুনস্থটি করে, বরং বড় দাদাকে একটু ভালবাসি। আর বাড়ীর মধ্যে সব চেয়ে ভালবাসি, সকলের চাইতে বেশী—আলুকে " দীর্ঘটানে শেষের কথাগুলি উচ্চারণ করিয়া সে জ্যোংস্কার পানে এমনিভাবে চাহিল, যেন জ্যোৎস্ব তখনই তাহাকে পরীক্ষার পূরাসংখ্যা দিবে, কারণ সে এমনি একটা মস্ত প্রশ্নের অভ্রাস্ত উত্তরের সমাধান করিয়াছে। জ্যোৎস্ন৷