পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१०

  • ベーベーベ六ぶ

কিন্তু তাহার পরিবর্ষে একটু দ্বিধায় পড়িয়া বলিল “আজু গেল, সে সৰোঁতুকে ব্যগ্র দৃষ্টিতে ਸੋ কে? বিস্ফারিত চক্ষে চাহিয়া সরসী বলিল “কেন, আমাদের ড্রাইভার জাদু!—ওর নাম আন্দু নয়, আনোয়ার উদ্দীন, भवाई उॉड़े श्रीमू बाल-" “ও!” জ্যোৎস্না হাসিয়া ফেলিল, “সে বুঝি খুব ভাল?" “খুব ভাল! একদিন আকবরের সঙ্গে বাজি রেখে এই লোহার বেঞ্চিখান একলা ঘাড়ে করে সমস্ত বাগানটা ঘুরে আবার বেঞ্চিখান। এখানে এনে রেখে দিয়েছিল। গায়ে খুব জোর। কুস্তির আখড়ায় কুস্তি করতে যায় কি না—” সে সোৎসাহে তাহদের আব্দুর অদ্ভূত চরিত্রের ও অদ্ভূত পরাক্রমের কাহিনী বলিতে লাগিল। সে তাহাদের আখড়ার ওস্তাদকে আনিয় একদিন দাদাদের কিরূপ ভয়াবহ লাঠিখেলা, মন্ত্র-কৌশল ইত্যাদি দেখাইয়াছিল; এক একটা কাজে জাদুর কিরূপ বিস্ময়াবহ জেদ ; তাহার গল্প করিতে লাগিল। একদিন তাহার ডিলি' পুতুল, ডেজী নামক কুকুরটা মুখে করিয়া জলে ঝাপাইয়া পড়িয়ছিল, তাহাতে সে কিরূপ কাম কাদিয়াছিল, এবং পরিশেষে আন্দু যখন সেটা সীতার দিয়া পুকুর হইতে তুলিয়া আনিল, তখন বাটীস্থ সকলে কিরূপ চমৎকৃত হইল তাহ বলিল। সে কত লোকের কত্ব উপকার করে, পিতা তাহাকে কিরূপ ভাল বাসেন, সেইসব গল্প সবিস্তারে দীর্ঘকাল ধরিয়া অক্লান্ত উৎসাহে সরসী আবৃত্তি করিয়া চলিল। জ্যোৎস্না অন্যমনস্ক ভাবে ছ হাদিতে লাগিল । সরসী আনন্দোজ্জল মুখে মাথা নাড়িতে নাড়িতে ঈষৎ চুপে চুপে জ্যোংস্কাকে বলিল "সে আবার এমন সুন্দর গান গায়, একদিন আড়াল থেকে শোনাব আপনাকে, ভারি চমৎকার! আবার নিজে নিজে কেমন গান তৈরী করে, জানেন !” বিস্মিত ভাবে জ্যোৎস্ব বলিল “তাই নাকি, লেখাপড়াও জানে?--” ঘাড় কাত করিয়া সরসী সজোরে বলিল “ও ! খুব।" সে আবার নূতন গল্পস্রোত আবিষ্কার করিল। জ্যোংস্কার সদ্যলন্ধ অন্তৰ্দ্দাহের জালা কথাবার্তার মাঝখানে ডুবিয়া প্রবাসী-জ্যৈষ্ঠ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড ാ রহিল। - হঠাৎ সরসী চুপ করিল। জ্যোৎস্ব সবিস্ময়ে দেখিল, একখানা কালে৷ শাল গায়ে জড়াইয়া লতিকা ধীরে ধীরে তাহাদের দিকে আসিতেছে। জ্যোৎস্না ব্যস্ত হইয়া বলিল "ওকি ! জর ছাড় তেই উঠে এসেছ ?” - লতিকা বলিল “হোক্গে যাক, শুয়ে থাকৃতে আর ভাল লাগে না, তাই বাগানে একটু বসতে এলুম,বসন, তুমি বলা লতিকার স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর শুনিয়া জ্যোৎস্না আশ্বস্তু হইল। কিন্তু সরসী শঙ্কিত প্রাণে ভাবিল, এতটুকু ক্রটা হইলে এখনই দিদির ঘাড়ে ভৈরব চাপিবে। অতএব তাহার আগে পলায়নই শ্রেয়স্কর। সে উঠিয়া ধীরে ধীরে অগ্রসর।' হইল, জ্যোৎস্না হাসিয়া তাহার হাত ধরিয়া বলিল “পালাচ্ছ কেন ? বসন, তোমার আন্দুর গল্পট বলে যাও।” দিদির সামনে আব্দুর গল্পের কথা প্রকাশ হইয়া পড়াতে সে ভারি ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত হইল। দিদি কিন্তু খুব প্রসন্ন সদাশয় ভাবে বলিল “বস না, যাচ্ছিস কেন ?” সে বসিল, কিন্তু দিদির আগমনে তাহার উৎসাহের আগুন একেবারে নির্বাপিত হইয়া গিয়াছিল, সুতরাং বচনের খই আর ফুটিল না, সে নীরব রহিল। তাহাকে নিস্তৰ দেখিয়া লতিকা, দয়া করিয়া নিজেই কথার স্বত্র আবিষ্কার করিল। বলিল “হ্যারে তোদের । টীচারের বে হবার কথা ছিল, হয়ে গেছে ?” সে মাথা হেলাইয়া বলিল “স্থ ।" “বের সময় তোরা গেছলি ?” “ছ, স্কুলের সব মেয়েই।” “টাচারের সাহেবটা দেখতে কেমন ?" “বেশ ফরসা |* লতিকা হাসিয়া উঠিল, “ফরসা তা জানি। বলি, মুখটা কেমন ? বাদরের মত, না উল্লুকের মত ?” ক্ষুণ্ণ হইয়া সরসী বলিল “না, বেশ।" ভয়ে সে বেশী কথা কহিতে পারিল না । - লতিকা বলিল “আমাদের সময় মিসেস হুইলার ছিল, মেম নিজে দেখতে বেশ ছিল, কিন্তু তার সাহেবটা স্থা ছিল, মেগ্যে: –একেবারে হতকুচ্ছিত " T ২য় সংখ্যা ] শিক্ষকের অাশা ও আশঙ্কা സഹSumitaBot (আলাপ) ০৮:১২, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)സസഹാ ് এই সময় বাগানের উড়ে মালী সুন্দরীদের জন্য দুইটি তোড়া আনিয়া সামনে ধরিল। জ্যোংস্ক তোড়া লইয়৷ মালীকে কিছু বখশীস দিল। যোড় হাতে ঝুটিমৃদ্ধ মাথ৷ নোয়াইয়। মালী চলিয়৷ যাইতেছিল, সরসী বলিল “মালী আমাকে অৰ্কিড ফুল টুল দিয়ে একটা ভাল রকম তোড়া বেঁধে দেবে চল, কাল টীচারকে সকাল বেল দিয়ে আসব।” জরুর তাগাদায় তোড়। আদায় করিবার অভিপ্রায়ে সে মালীর সহিত চলিয়৷ গেল। তোড়ার ফুলগুলিতে সস্তুপর্ণ কোমল অঙ্গুলী সঞ্চালন করিয়া করিয়া সরাইয়া সরাইয়। দেখিতে দেখিতে জ্যোংশ। বলিল "ডাক্তার সাহেবের চিঠির জবাব দিয়েছ ?" মুখ ফিরাইয়। লতিকা বলিল “ন৷ ” “কেমন আছেন ? ভাল আছেন তো।” “ন, লিখেছেন স্বাস্থ্য বড় খারাপ।” চিন্তিতভাবে জ্যোংস্ক বলিল “তাই তো, একজামিনেরও তে। খুব বেশী দেরী নেই। ডাক্তার-সাহেবের তে প্রায়ই অমুখের কথা শুনতে পাই । তিনি নিজে ডাক্তার অথচ তারই শরীর এত খারাপ ” বেঞ্চিতে ঠেস দিয়া সোজ হইয়া বসিয়া লতিকা বলিল "স্বাস্থ্য ভাল থাকবে কোথেকে, ব্যায়াম-চর্চা যে মোটে করেন না, একটু হাটুতে একটু খাটুতে মোটে চান না, কুড়ের বাদশ যে, শুয়ে শুয়ে দিনরাত পড়ছেন আর ঝুড়ি বুড়ি নোট লিখে আলমারি বোঝাই কচ্ছেন, কিন্তু হাসপাতাল এ্যাটেও করবার সময়, হাতে কলমে কাজ শেখবার সময়, একেবারে বেবাক ফাকি। তার পছন্দ শুধু পথিগত বিদ্যে, তাই করেই তো বছর বছর ফেল হচ্ছেন,—” বিরক্তিভরে লতিকা ঠোঁট দুটা বাকাইয়া মুখ ফিরাইল । জ্যোৎস্ব নিস্তন্ধ রহিল। লতিকা উত্তেজিত হইয়। বলিল “তোমরা বল শিক্ষিত শিক্ষিত,—শিক্ষিত কি ?— শিক্ষার ভারে মনুষ্যত্বটুকু, রোলারের চাপে খোয়ার মত, গুড়িয়ে যাচ্ছে,—তারা শিক্ষিত স্বাধীনচিন্তাশক্তি, স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তি,—সবই পরস্ব মতের মোমজামায় মুড়ে এক কিস্তুতকিমাকার হয়ে দাড়াচ্ছেন,—এই তো শিক্ষার সার্থকতা ! ঝাট মার ! তোতা-পার্থীর মত থানকতক বই মুখস্থ করলেই মনুষ হয় না, মনুষ্যত্ব আলাদা জিনিস ।" x & লতিকার রুচিবৈচিত্র্য এবং মত পরিবর্তনের অদ্ভূত বৈষম্যের কথা জ্যোৎস্ব জানিত। সুতরাং প্রতিবাদ না করিয়া জ্যোংস্ক মৃদু মৃদু হাসিতে হাসিতে বলিল “শিক্ষিত- - দের ওপর তোমার আজন্মের ভক্তি হঠাৎ এমন মূৰ্ত্তিমান নাস্তিক হয়ে দাড়াল কেন ?” লতিক। গম্ভীর স্বরে বলিল "শিক্ষিতদের অপদার্থতা দেথে ।" - অদূরে ঘনসন্নিবিষ্ট বৃক্ষাচ্ছন্ন স্থানে—সমাগত সন্ধ্যার ঘনীভূত অন্ধকাররাশির পানে জ্যোৎস্ব নীরবে চাহিয়া রহিল। { ক্রমশ ) ঐশৈলবালা ঘোষজায়া। শিক্ষকের অাশা ও আশঙ্কা এবার অষ্টম সাহিত্যসম্মিলনের তথা সাহিত্যশাখার সভাপতি লন্ধাবসর শিক্ষক, বিজ্ঞান-শাখা ও ইতিহাস-শাখার - সভাপতি উভয়েই শিক্ষক, কেবল দৰ্শন-শাখার সভাপতি শিক্ষাবিভাগের লোক নহেন। সপ্তম সাহিত্যসম্মিলনে, দর্শন বিজ্ঞান উভয় শাখায়ই শিক্ষক সভাপতি ছিলেন এবং সাহিত্য-শাখায় সংস্কৃত শাস্ত্রের অধ্যাপক সভাপতি ছিলেন। বিজ্ঞান-শাখার স্বষ্টি অবধি কলেজের বিজ্ঞানশিক্ষকই সভাপতি হইয়া আসিতেছেন। শাখা-বিভাগের পূৰ্ব্বে দুইজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানশিক্ষক সাহিত্যসম্মিলনের সভাপতি হইয়াছিলেন । এ-সমস্ত নিতান্ত কাকতালীয়-স্যায়ে সঙ্ঘটিত হইতেছে না। দেশীয় ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে ক্রমেই শিক্ষক-সম্প্রদায়ের প্রসারবৃদ্ধি হইতেছে, ইহা বেশ স্পষ্টই বুঝা যায়। শিক্ষকগণ শুধু যে অজাতশ্বশ বালক বা অৰ্ব্বাচীন যুবকগণকে শিক্ষা দিবার অধিকারী তাহী নহে, পরন্থ অভিরূপভূমিষ্ঠ পরিষদে লোকশিক্ষকের গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করিতে সমর্থ, এই ব্যাপারে ইহা অনেকটা প্রমাণিত হইতেছে। এই-সব দেখিয়া শুনিয়া সমগ্র শিক্ষক-সম্প্রদায় বেশ একটু শ্লাঘাবোধ না করিয়াই পারেন না। - জগজননীর পূজার ন্যায় জননী বঙ্গভাষার পূজার তিন দিনের ব্যাপার সাহিত্যসম্মিলনেই যে কেবল শিক্ষকগণ নেতৃত্ব লাভ করিতেছেন তাহী নহে, সাহিত্য-পরিষৎ