পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার জীবনের আখ্যায়িকাগুলি বেশ লাগিয়াছিল। SMSMSMSMMSMMSMMSMSMS উদ্যম বিহনে কার পুরে মনোরথ ? কাটা হেরি গণন্ত কেন কমল তুলিতে, দুঃখ বিন স্বধলাভ হয় কি মইতে " তৈলচিত্র-উন্মোচন-সভায় বিখ্যাত সাহিত্যসেবীরা আরও অধিক সংখ্যায় উপস্থিত থাকিলে ভাল হইত । কারণ, কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার মানুষটি নমস্ত ছিলেন, কবি প্রতিভাতেও তিনি হীন ছিলেন না । "বিকশিত কামিনী-কুসুম-তরুতলে বসিলাম চিন্তাসী সহ কুতূহলে।” স্বৰ্গীয় কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার । সভাস্থলে অনেকে তাহার সম্বন্ধে বক্তৃতা করিয়াছিলেন। তাহার কবিত্বের প্রশংসা করিতে গিয়া ২১ জন বক্ত স্ববিবেচনা ও তাহার কবিতা সম্বন্ধে জ্ঞানের পরিচয় দেন নাই। কাহারও প্রশংসা করিতে হইলে অন্য কতকগুলি - লোকের নিন্দ করা একান্ত আবখ্যক নহে। ২১ জন প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩২২ SSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSS "কেন পান্থ ! ক্ষান্ত হও হেরে দীর্ঘ পথ ? S S S S S S S S SMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSS বক্ত কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার মহাশয়ের কবিতার দেশীয় ভাবের । প্রশংসা করিতে গিয়া আধুনিক ইংরেজীশিক্ষিত কবিদের । কাব্যে বৈদেশিক প্রভাবের অস্তিত্ব ঘোষণা ও তাহার নিন্দ করিয়াছিলেন। জীবিত প্রাণী যে অবস্থায় বাস করে, তাহার প্রভাব যেরূপ অনুভব করে এবং তদনুসারে নিজের জীবনে ও আচরণে যেরূপ পরিবর্তন ঘটায়, সেই অবস্থায় একটা পাথর তদ্রুপ ব্যবহার করে না। চারিদিকের অবস্থ৷ ও ঘটনার প্রভাবে পরিবর্তিত হওয়া এবং জ্ঞাতসারে নিজেকে । পরিবর্তিত করা, জীবনেরই লক্ষণ। সুতরাং ইংরেজীশিক্ষাপ্রাপ্ত কবিদের কাব্যে যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ও আধুনিক কালের প্রভাব অনুভূত হয়, ইহা নিন্দার কথা নয় ; তাহাতে ইহাই বুঝায় যে তাহার। জীবিত মাহুষ, পাথর নহেন। অবশ্য, বিদেশী জিনিষ গ্রহণ করিয়া তাহাকে নিজের প্রকৃতির সামিল করিয়া দেশী আকারে তাহাকে প্রকাশ করিতে পারা বাঞ্ছনীয়। বিদেশী চিনি, বিদেশী চাউল, কিম্বা বিদেশী বেদান আদি নানারকম ফল খাইয়৷ তাহা বমন করিয়া দিলে ভোক্তারও কোন শক্তিবৃদ্ধি হয় না, প্রতিবেশীদেরও ঘৃণা বোধ হয়। হজম করিতে পারিলে ভোক্তারও বল বাড়ে, প্রতিবেশীরাও একটি স্বস্থ মানুষের । সঙ্গমুখ ও সাহায্য পাইতে পারে। বিদেশী চিন্তা-ও-ভাব-রূপ মানসিক খাদ্যও হজম করিতে পার চাই । বাছিয়া বাছিয়। ভাল বিদেশী ভাব ও চিন্ত গ্রহণ করায় কোন দোষ নাই ; বহুশতাব্দী পূৰ্ব্বে আমাদের পূর্বপুরুষের ংে উহা গ্রহণ করিতেন, তাহার প্রমাণ প্রাচীন ভারতীয় নানা গ্রন্থে আছে । উহা গ্রহণ করিয়া নিজের প্রকৃতির অঙ্গীভূত করিতে পার চাই। যদি আধুনিক কোন কবি তাহ না পারিয়া থাকেন, তবে তাহ দোষের বিষয় বটে। - যাহারা কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের কবিতায় দেশীয় ভাবের প্রশংসা করিয়াছিলেন, তাহারা সম্ভাবশতক পড়িয়াছেন । কিনা, কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের জীবনচরিত পড়িয়াছেন কিনা ৷ জানি না। দেশীয় ভাব তাহার ছিল না, এমন কথা আমর বলিতেছি না ; কিন্তু তিনি বিদেশী জিনিষকে বেশ নিজের করিয়া লইয়াছিলেন। মজুমদার মহাশয় পারসীক কবি । সাদী ও হাফিজের নিকট বিশেষভাবে ঋণী ছিলেন । তাহার - অনেক কবিতা ফারসীর অনুবাদ, অনেকগুলি ফারসী । [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড । o জের ভণিত রহিয়াছে। নয়, ফরণী-সাহিত্য ও ভারতীয় সাহিত্য নয়। কোন কবি o ৩য় সংখ্যা ] SMSMSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSSS সাহিত্য হইতে প্রাপ্ত ভাব ও চিন্তা লইয়৷ রচিত । যিনি কেবল মাত্র সদ্ভাবশতক পড়িয়াছেন, তিনিও ইহা জানেন । সদ্ভাবশতকের ১ম, ২য়, ৩য়, ১৪শ, ১৬শ, ১৭শ, ১৯শ, ২৪শ, ২৭শ, ৩১শ, ৩৭শ, ৪•শ, প্রভৃতি বিস্তর কবিতায় হাফিপারস্য দেশ ভারতবর্ষের অন্তর্গত ফারসী হষ্টতে অনুবাদ করিয়া এবং ফারসী সাহিত্য দ্বারা সাক্ষাৎভাবে অল্প প্রাণিত হইয়া যদি কবিতা লেখেন, তাহা হইলে যদি তাহাতে দেশীয় ভাব আছে বলিয় তাহার প্রশংসা করা চলে, তবে ইংরেজী শিক্ষা ও সাহিত্যের প্রভাব কি অপরাধ করিল ? সত্য, কৃষ্ণচন্দ্র যাহা লিথিয়াছেন, তাহ বাঙ্গল ভাষায় লিথিয়াছেন, এবং তাহার বক্তব্যকে একটি দেশী রূপ দিয়াছেন। কিন্তু আধুনিক ইংরেজীশিক্ষাপ্রাপ্ত বাঙ্গালী কবিরাও ত বাঙ্গলায় লিথিয়াছেন, এবং উহাদের রচনার রূপও দেশী। যদি সৰ্ব্বত্র পূর্ণমাত্রায় দেশী না হয়, তাহাতেই বা দোষ কি ? আমাদের যে ঘরবাড়ী, তাহাও ত গথিক, গ্রীক, হিন্দুসারাসেনিক, কত স্থাপত্যরীতির খিচুড়ী। তাহাতে আমাদের বাসের অস্থবিধা হয় না, এরূপ অনেক অট্টালিক স্বন্দরও বটে। কামিজ, কোট, প্যান্টালুন, জুতা, বুট, সবই ত বিদেশী ধাচের, সাবেক রকমের যাহা তাহারও অনেকগুলা মোগল ও পারসীকদের অনুকরণ। তাহাতেও ত কাজ চলিতেছে। বাংলা সাহিত্যেও বিদেশ হইতে আমদানী চেহারা লইয়৷ চতুর্দশপদী কবিতা এবং বিদেশ হইতে আমদানী অমিত্রাক্ষর ছন্দ বেশ চলিয়া যাইতেছে । একজন বক্ত। কৃষ্ণচন্দ্রের দেশীয় ভাবের প্রশংসা করিতে করিতে বাংলা কথায় মনের ভাব প্রকাশ করিতে ন৷ পারিয়া ইংরেজী appeal কথাটি ব্যবহার করিতে বাধা হইলেন । আমরা ইহাকে একটা গুরুতর অপরাধ মনে করি না। কারণ বক্তা তাহার পর যে যে বাংলা কথা দ্বারা ঐ ভাবটি প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিলেন, তাহার কোনটি দ্বারাই appeal কথাটির মত তাহার মনোগত অভিপ্রায় ব্যক্ত হইল না । ইহা হইতে বক্তা মহাশয়ও বোধ হয় বুঝিতে পারিবেন, যে, আজকাল কেবল দেশী দ্বারা সব কাজ চলে না। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ বিবিধ প্রসঙ্গ-মনের দেশ বিদেশ


VවII SS MMMM MMSMSMSMSMSMMS শাস্ত্রী সভাপতি মহাশয়ও তাহার বাংলা বক্তৃতায় প্রভৃতি ইংরেজী কথা ব্যবহার করিলেন ; “আপনাকে জাহির করা,” “বিজ্ঞাপন দেওয়া" প্রভৃতি কথা তিনি ব্যবহার করিতে পারিতেন । । কিন্তু সম্ভবত: তাহার মনের ভাব প্রকাশ করার পক্ষে ইংরেজী কথাগুলিই বেশী উপযোগী মনে করিলেন, এবং হয় ত যে দোষের নিন্দ তিনি করিতেছিলেন তাহ তাহার মতে পাশ্চাত্য ও পাশ্চাত্যপ্রভাবাধীন সমাজেই বেশী , সুতরাং ইংরেজী কথাই সে স্থলে বেশী কাজে লাগে। আত্মার জাতি নাই। উচ্চ অঙ্গের তত্ত্বকথা, উচ্চ অঙ্গের ভাব, চিন্তা, কবিত্ব, এ সকলে দেশভেদ, জাতিভেদ, বর্ণভেদ নাই। তাহ থাকিলে পাশ্চাত্যের উৎকৃষ্ট হিন্দুসাহিত্যের রস গ্রহণ করিতে ও তাহার আদর করিতে পারিত না, আমরাও পাশ্চাত্য উৎকৃষ্ট সাহিত্যের সমজদার হইতাম না। ভাল লেখকের লেখা পড়িতে পড়িতে কত বার মুনে হয়, “ইনি ঠিক আমার প্রাণের কথা বলিয়াছেন " যিনি আমার প্রাণের কথা বলিতে পারেন, তিনি বিদেশী, ভিন্নধৰ্ম্মী, ভিন্নভাষাভাষী আমার নিজের লোক । - advertisement, advertise o - --- স্বদেশপ্রেম খুব ভাল জিনিষ। কিন্তু উহার বিকৃতি ব্যাধি ও ভাল নয়। বিদেশীর প্রতি বিদ্বেষ, অবজ্ঞা বা বিরাগ ভাল নয়। আমরা ইংরেজী শিথিয় বিকৃতমস্তিষ্ক হইয়া নৃতন করিয়া বিশ্বজনীনতা প্রচার করিতেছি না ; আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষেরাও বলিয়া গিয়াছেন— “উদারচরিতানাস্তু বস্থধৈব কুটুম্বকৰ্ম্ম।” - কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের কবিতাপাঠে হৃদয় আনন্দিত ও উন্নত হয় । তাহার জীবনচরিত হইতেও অনেক শিখিতে পারা যায়। তজ্জন্য শ্ৰীযুক্ত ইন্দুপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেপ “কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের জীবনচরিত" পাঠ করা উচিত । আমরা তাহার যে ছবি দিলাম, তাহা ইন্দুপ্রকাশ বাবুর পুস্তকের ছবির অম্বুরুতি। মনের দেশ বিদেশ । নানা দেশের লোকদের পাটীগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, ন্যায় বা তৰ্কশাস্ত্র পড়িলে দেখা যায়, যে, সৰ্ব্বত্রই মানুষের মনের চিন্তার নিয়ম, যুক্তির প্রণালী একই রকম।