পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 SumitaBot (আলাপ) ০৮:২৯, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)സഹ বিদ্রোহ করিব না, কাহাকেও সাক্ষাং বা পরোক্ষভাবে বিদ্রোহী হইতে উত্তেজিত বা প্রবৃত্ত করিব না, কোন বিদ্রোহীর সাহায্য করিব না,” কংগ্রেস এই কথা অস্তরের সহিত বলিবেন। তাহার পর সরকারী লোকদের তুষ্টঅতুষ্টির প্রতি দৃকপাতও ন করিয়া নিজের কৰ্ত্তব্য করিবেন। তাহা যদি না করিতে পারেন, তাহ হইলে কংগ্রেসের নাম পৰ্য্যন্ত লুপ্ত হউক। বোম্বাইয়ের লোকের সার সত্যেন্ত্রপ্রসন্ন সিংহ মহাশয়কে সভাপতি করিতে চেষ্টা করিতেছেন। তিনি दिदान् অতি বুদ্ধিমান ও আইনজ্ঞ এবং ধীর ব্যক্তি। এই প্রকারের গুণ র্তাহার আরো অনেক আছে। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রীয় বিষয়ে দেশকে সচেতন করিবার জন্য, দেশের লোকদের রাষ্ট্রীয় অধিকার বৃদ্ধির জন্য বা এবম্বিধ কোন প্রচেষ্টার জন্য কখন কিছু করেন নাই। তাহার সময় ও শক্তি প্রধানত: ( সম্পূর্ণরূপে বলিলেও দোষ হয় না) অন্য প্রকারে যাপিত ও প্রযুক্ত হইয়াছে। অধিকন্তু তিনি পরিক সাধিল কমিশনের নিকট যে সাক্ষ্য দিয়াছিলেন, তাহাতে বুঝা যায় যে উচ্চ রাজকাৰ্য্য সম্বন্ধে কংগ্রেসের দাবীর তিনি সম্পূর্ণ সমর্থন করেন না। সম্পূর্ণ কেন, আধাআধিও করেন কিনা, সন্দেহ। যাহারা তাহার সভাপতিত্বের পক্ষপাতী, তাহারা এখন একবার সেই সাক্ষ্য মুদ্রিত করিয়া আমাদিগকে বুঝাইয়া দিউন যে ঐ সাক্ষ্যের সহিত কংগ্রেসের দাবীর ঐক্য আছে। কলিকাতায় যাহারা কমিশনের সমক্ষে সাক্ষ্য দিয়াছিলেন, উহাদের মধ্যে, গবর্ণমেন্টের চাকরী করা সত্বেও, অনেকে ভারতবাসীদের দাবী সিংহ মহাশয়ের চেয়ে অনেক বেশী সাহস ও দৃঢ়তার সহিত সমর্থন করিয়াছিলেন। যথা, শ্ৰীযুক্ত জানেন্দ্রনাথ গুপ্ত, ঐযুক্ত যামিনীমোহন মিত্র, বিজ্ঞানাচার্য জগদীশচন্দ্র বস্থ, বিজ্ঞানাচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। ভারতবাসীর বর্তমান যোগ্যতায় এবং ভবিষ্যতে অধিকতর যোগ্যতাঅর্জনের সম্ভাবনায়, ইহাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে-প্রকারে ইহঁদের সাক্ষ্যে ফুটিয়া বাহির হইয়াছিল, সিংহ মহাশয়ের সাক্ষ্যে এরূপ কোন বিশ্বাসের পরিচয় পাওয়া যায় নাই। কলিকাতায় যখন সাক্ষ্য লওয়া হইতেছিল, তখন আমরা শুনিয়াছিলাম যে কমিশনের একজন ইংরেজ সভ্য বলিয়াছিলেন যে [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সিংহ মহাশয়ের এবং আর একজন বাঙ্গালীর সাক্ষ্য ভারতবাসীদের কেস্ট ( case) একেবারে মাটি হইয়া গিয়াছে। একজন বা দুজন বাঙ্গালী বাংলার বা ভারতবর্ষের প্রতিনিধি নহেন স্বতরাং তাহদের সাক্ষ্যে সত্যসত্যই ভারতবাসীদের দাবী উড়িয়া যাইতে পারে না। কিন্তু সে সময়ে আমাদেরও এই ধারণা হইয়াছিল বটে যে সিংহ মহাশয়ের ও আর-একজনের সাক্ষ্যে ভারতবাসীদের কেস্ট কাচা হইয়া গেল । , সিংহ মহাশয় যখন বড়লাটের ব্যবস্থাসচিব নিযুক্ত হন, তখন আমরা প্রবাসী ও মডান রিভিউ পত্রিকায় তাহার যোগ্যতা যেরূপে সৰ্ব্বসাধারণের সমক্ষে উপস্থিত করিয়াছিলাম, আর কোন সম্পাদক সেরূপ করেন নাই বলিয়া আমাদের ধারণ। এখনও তাহার প্রতি আমাদের মনে কোন প্রতিকূল ভাব নাই। আমাদিগকে কেবলমাত্র কৰ্ত্তব্যের অনুরোধে মানসিক ক্লেশের সহিত ইহা প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিতে হইল, যে, তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হইবার যোগ্য নহেন। কিন্তু তাহার চরিত্র, ধীরত, বিদ্যা, বুদ্ধি ও পরিশ্রমশক্তি যেরূপ, তাহাতে তিনি, দেশের রাষ্ট্রীয় উন্নতিবিষয়ে মনোযোগী হইলে, ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই খুব যোগ্য হইতে পারিবেন। দুটি পঞ্জাবী মুসলমান বালকের সৎকাৰ্য্য। পঞ্জাবের কয়েকটি জেলায় কয়েক মাস পূৰ্ব্বে যে অরাজকতা হইয়া গিয়াছে, তাহ যে সমগ্র মুসলমান" সমাজের সহিত সমগ্র হিন্দুসমাজের ঝগড়া নয়, তাহ আমরা গত মাসে বলিয়াছি। তাহার প্রমাণস্বরূপ একটি ঘটনার উল্লেখ করিতেছি। আরও কোন কোন জায়গায় মুসলমানের দ্বারা হিন্দুর সাহায্য নিশ্চয়ই হইয়া থাকিবে। ঝাং জেলার বিণ্ডি পাটোআন খুর্দ, নামক মৌজায় কেবল একটি হিন্দুপরিবারের বাস। এই পরিবারের কৰ্ত্ত ডাকাতির ভয়ে মৌজার প্রধান মুসলমান অধিবাসী আমীর হাইদার শাহের বাড়ীতে নিজের জিনিষপত্র রাখিবার অনুমতি গ্রহণ করেন। তিনি নিজের সম্পত্তি এই নিরাপদ আশ্রয়-স্থানে সরাইবার উপক্রম করিতেছেন, এমন সময় ডাকাতর। তাহার দোকান ও বাড়ী আক্রমণ করিয়া সমস্ত লুটিয়া লইল। ইতিপূৰ্ব্বে, আমীর হাইদার শাহকেও | J SSASAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASAAA AAAA AAAA AAAA SAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS ডাকাতদের লোক, “আপনার অমুক অমুক আত্মীয়গণ বিপন্ন হইয়া আপনার সাহায্য চাহিতেছেন," এই বলিয়া জুলাইয়া দূরে লইয়া যায়। আমীর হাইদার শাহের বাড়ীতে হিন্দুপরিবারটির স্ত্রীলোকেরা আশ্রয় লইয়াছিলেন। ডাকাতর যখন তঁহাদের উপর অত্যাচার করিবার জন্য ঐ গৃহ আক্রমণ করিল, তপন আমীর মহাশয়ের দুটি ছোট ছেলে বাড়ীতে ছিল। ডাকাতদের সঙ্গে লড়িবার মত বয়স তাহাদের নয়। হঠাৎ একটি স্বকৌশল তাহাদের মাথায় আসিল । যে ঘরে হিন্দু স্ত্রীলোকের ছিলেন, এই দুই সাহসী ও সাধু বালক এক একখানি কোরান শরিফ মাথায় করিয়া সেই ঘরের দ্বারে দাড়াইয়া রহিল, এবং ডাকাতদিগকে বলিল, “কই, আমাদিগকে আক্রমণ কর দেখি ।” কোরানকে আক্রমণ না করিয়া কিছু করা যায় না দেখিয়া বাড়ীর সম্মুখের ডাকাতর। কিছু করিতে পারিল না। কিন্তু বাড়ীর পশ্চাৎদিকে যাহারা ছিল, তাহারা দেওয়াল কাটিয়া ঘরে ঢুকিতে চেষ্টা করিতে লাগিল। ইত্যবসরে বালক দুটির পিতা আমীর হাইদার শাহ ফিরিয়া আসিলেন, এবং ডাকাতদিগকে তাড়াইয়া দিলেন। ৫৫ জন লোককে ডাকাত বলিয়া গ্রেপ্তার করা হয়, ৩৬ জনের বিচার হয় । তার মধ্যে ১৫ জনের সাজা হইয়াছে। দলের সর্দার ছ জনের ৭ বৎসর করিয়া সশ্রম কারাবাস এবং বাকী ১৩ জনের ৫ বৎসর করিয়া সশ্রম কারাদণ্ড হইয়াছে। _এই বালক দুটির ছবি সংগ্রহ করা উচিত এবং নাম জানা উচিত। ইহাদের কীৰ্ত্তি শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে মুদ্রণযোগ্য। ভবিষ্যৎ মহাসংঘর্ষ। রুশিয়ার সহিত যুদ্ধ করিয়া জাপান নিজের শক্তির প্রমাণ পাইয়াছে। পৃথিবীর সকল জাতি এখন জাপানকে আপনাদের সমকক্ষ বলিয় গ্রহণ করিয়াছে । জাপান নিজের দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে অনিচ্ছুক, এবং বহুবিস্তৃত সাম্রাজ্য স্থাপনে অভিলাষী। ইউরোপের শক্তিশালী জাতিরা যে যে কারণে সাম্রাজ্য ও উপনিবেশ Tচায়, জাপানও সেই সব কারণে সাম্রাজ্য ও উপনিবেশ চায়। সে-সব কারণ প্রধানত: দুটি। জাপানের লোক বাড়িতেছে ; স্বদেশে সকলের স্থানই বা কোথায়, জীবিকা বিবিধ প্রসঙ্গ—ভবিষ্যৎ মহাসংঘর্ষ 88t নিৰ্ব্বাহই বা হয় কেমন করিয়া ? অতএব বিদেশে যাওয়া দরকার। আমেরিকায় অনেক জায়গা আছে বটে ; সেখানে অনেক হাজার জাপানী গিয়াছেও বটে। কিন্তু আমেরিকার সম্মিলিত-রাষ্ট্রের লোকেরা ইউরোপের অতি ওঁছ লোকদিগকেও জায়গা দিতে রাজী, কিন্তু এশিয়ার লোকদিগকে স্থান দিতে রাজী নয়। স্বতরাং যে-সব দেশ কোন শক্তিশালী জাতির সম্পত্তি নয়, তাহার উপরই জাপানীদের লোভ বেশী। সেইজন্য তাহারা কোরিয়া দখল করিয়াছে এবং তাহার নামটা পৰ্য্যস্ত বদলাইয়া দিয়৷ নাম রাখিয়াছে "চোসেন।" ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জের উপর তাহাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়িয়াছে বলিয়া আমেরিকানর মনে করে। কিন্তু আমেরিকানরা যতদিন উহার শাসনকাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহ করিতেছে ও উহা রক্ষা করিতেছে, ততদিন সম্ভবত: জাপানীরা কিছু করিবে না। আপনাদের অঙ্গীকার অমুসারে ফিলিপিনোদিগকে স্বাধীন করিয়া দিয়া যখন আমেরিকানর। চলিয়া যাইবে, তখন হয়ত জাপানীরা উহার প্রভূ হইবার চেষ্টা করিবে। সম্প্রতি জাপান চীনকে যে-সকল সৰ্ত্তে আবদ্ধ করিয়াছে, তাহাতে কোন ইউরোপীয় জাতির আর চীনে প্রভাব বা প্রভূত্ব বিস্তার করা সম্বৰ হইবে না ; কিন্তু জাপান তথায় খুব কর্তৃত্ব করিতে পারিৰে। চাই কি, কালে উহাকে নিজের সাম্রাজ্যভূক্তও করিতে পারে। - আর যে একটি কারণে ইউরোপীয় জাতির সাম্রাজ্য বিস্তারের চেষ্টা করিয়া আসিতেছে এবং যাহা বৰ্ত্তমানইউরোপীয় যুদ্ধের নিগৃঢ় কারণ, জাপানে তাহাও বিদ্যমান। কলকারখানার স্বারা নানারকম জিনিষ প্রস্তুত করিতে যে-সব জাতি স্বনিপুণ, তাহার এত জিনিষ প্রস্তুত করে যে স্বদেশে সে-সমুদ্ৰয়ের কাটতি হওয়া অসম্ভব, এবং কেবল স্বদেশে জিনিষ বেচিয়। মামুষের অর্থপিপাসা মিটে না। এই জন্য বাজার চাই, বিক্রয়ের জায়গা চাই। কিন্তু পররাজ্যে বিক্রয়ের সম্পূর্ণ সুবিধা হয় না। এই দেখুন না, ভারতবর্ষে জামেনীর জিনিষ কেমন বিক্ৰী হইতেছিল, কাটুতি ক্রমশ: বাড়িয়া চলিতেছিল, চীন প্রভৃতি দেশেও এইরূপ জামেন জিনিষের কাটুতি বাড়িতেছিল। কিন্তু তাহাতে জামেনী সন্তুষ্ট থাকিতে পারিল না। কারণ কি ?