পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88b 一へヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘし বৃটিশসাম্রাজ্যে আমাদের যতটুকু স্থবিধ ও অধিকার আছে বা ভবিষ্যতে থাকিবার সম্ভাবন,জাপান কোরিয়াবাণীদিগকে ততটুকুও দেয় নাই। রুশসাম্রাজ্যকে কতক ইউরোপীয় কতক এশিয়াটিক, বলা যাইতে পারে। অতএব এশিয়াটিক প্রবল জাতি দুটি, রুশ ও জাপানী। স্বতরাং সম্ভবতঃ এশিয়া লইয়া জাপানের ঝগড়া রুশিয়ার সহিত হইবে না, যে-সব জাতি সম্পূর্ণ ইউবোপীয় তাহদের সহিত হইবে। কুশিয়ার বিস্তৃতি লোকবল ও অন্য বল এত বেশী যে তাহার সঙ্গে জাপানের আঁটিয়৷ উঠাও খুব সহজ হইবে না। ১৯৯৫ খৃষ্টাব্দে কশিয়ার সহিত জাপানের যুদ্ধ আরও কিছু দিন চলিলে, রুশিয়া জিতিত, ইহা বিশেষজ্ঞের মত। বৰ্ত্তমান যুদ্ধে জাপান রুশিয়াকে তোপ, দৈনিকদের বুট আদি পরিচ্ছদ, গোলাগুলি, গোলন্দাজ এবং গোলন্দাজী-শিক্ষক জোগাইয়৷ সাহায্য করিতেছে। ভবিষ্যং মহাসংঘর্ষ ঘটলে উভয়দেশের এই বন্ধুত্ব, উভয়েরই স্বার্থমূলক বলিয়, টিকিবার স্থাপন । তাহাদের মধ্যে সম্ভবতঃ এই বন্দোবস্ত হইতে পারে, যে উত্তর ও পশ্চিম-এশিয়া রুশিয়ার এবং পূৰ্ব্ব ও দক্ষিণ-এশিয়া জাপ|নের কর্তৃত্ব স্বীকার করিবে। রুশিয়ার সাহায্য না পাইলেও জাপানীরা জাপান কোরিয়া ও চীন হইতে সৈন্য সংগ্ৰহ করিতে পরিবে। জাপানের লোকসংখ্যা ৫ কোটি, কোরিয়া প্রভৃতি অধীন দেশের দেড় কোটি চীনের ৪০ কোটি, রুশিয়ার সাড়ে ষোল কোটি । বৃটিশসাম্রাজ্যের শ্বেত আদিবাগীদের সংখ্যা ৬ কোট, তাহীও নান দুর দূর দেশে ছড়ান ; অশ্বেতদের সংখ্যা ৩৭ কোটি, তন্মধ্যে ভারতবাসী স্বাড়ে একত্রিশ কোটি। ইহা হইতে বেশ বুঝা যাইতেছে যে আমরা যদি জাপানের বা রুশ-জাপানের গ্রাস হইতে *iशिरड फ़ाई, उोश श्रज्ञ आभानिअरक८मभन ইউরোপীয় বিজ্ঞান ও যুদ্ধবিদ্যা শিখিতে হইবে, এবং আমরা বৃটিশসাম্রাজ্যভূক্ত বলিয় তাহ ইংরাজের সাহায্যে শিখিতে হইবে তেমনি অন্যদিকে ইংলণ্ডকে ভারতবর্ষ রক্ষা করিতে হইলে ভারতবর্ষের সকল প্রদেশ হইতে লক্ষ লক্ষ লোক লইয়া তাহাদিগকে যুদ্ধবিদ্যা শিক্ষা দিতে হইবে। আমাদের অহুমান অহসারে ভবিষ্যতে মহা সংগ্রাম হইলে ভারতবাসী জাপানের পক্ষ অবলম্বন করিবে প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড না; শুধু নিক্রিয় ইংরেজপক্ষাবলম্বী না হই। ইংরেজের সহিত একযোগে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়িতে চাহিবে। বেতনভোগী ভারতবাসী সিপাহীও শৌর্য্যে কাহারও নিকট হার মানে না। কিন্তু ভারতবাসীর যদি রাষ্ট্ৰীয় অধিকার পায়, সকল বিষয়ে ইংরেজের সমান ও সমকক্ষ বলিয়৷ গৃহীত হয়, তাহ হইলে তাহদের আন্তরিক উৎসাহ আরও বৃদ্ধি পাইবে, এবং তাহারা সভ্য স্বাধীনদেশের স্বেচ্ছা প্রবৃত্ত- ' সৈন্যগণ হইতে উৎসাহে ও বিক্রমে কোন অংশে शैम হইবে না। কোনদেশে বা তাহার সীমা যুদ্ধ ঘটলে দেশবাসী যেসকল পুরুষনার যুদ্ধে ব্যাপৃত হয় না, তাহদের নিকট হইতেও নানাপ্রকারে সাহায্য লওয়ার প্রয়োজন হয় । এইরূপ সাহায্য পূর্ণমাত্রায় পাওয়া যায় আদি অধিবাসীর রাষ্ট্রীয়-অধিকারভোগী, সন্তুষ্ট ও অনুরক্ত থাকে। ইহাও বিবেচ্য | ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে অনুমান করিয়া তাহার জন্য প্রস্তুত হওয়া আমাদের কৰ্ত্তব্য। যে মহাসংঘর্ষের আশঙ্কা আছে, তাহার জন্য ২১ মাসে বা বংসরে প্রস্তুত হওয়া যায় Fi দীর্ঘতর সময়ের প্রয়োজন। যদি কোন সংঘর্ষ না ঘটে, তাহা হইলে তাহ পরম আনন্দের বিষয় হইবে। আমরা চাই শাস্তির পথে সমুদয় জগতের উন্নতি । যুদ্ধের কারণসকল বিনষ্ট করিতে চেষ্টা করিয়া, ভিন্ন ভিন্ন জাতির মধ্যে ঈৰ্য্যান্বেষ দূর করিয়া, জাতিসকলের মধ্যে সাক্সিলৰবাড়াইতে যত্ন করিয়া, এবং বিবাদের কারণ ঘটিলে সালিসী দ্বারা তাহার মীমাংসা করিয়া, সৰ্ব্বত্র শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু যদি কেহ অশাস্তি ঘটায়, তাহার জন্যও প্রস্তুত থাকা উচিত । মাতৃভূমি । কয়েকমাস পূৰ্ব্বে বিলাতের অধ্যাপক গিলবার্ট মারে ইংলও প্রবাসী ভারতবর্ষীয় যুবকগণকে এক বক্তৃতায় এই মৰ্ম্মে উপদেশ দিয়াছিলেন, “তোমরা তোমাদের মাতৃভূমিকে ‘বন্দে মাতরম্ বলিয়া অভিবাদন কর। ইহা খুব ভাল। - কিন্তু ভারতভূমি অপেক্ষা বৃহত্তর জননী আছেন । তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। তাহাকে হৃদয়ের সহিত ‘বন্দেমাতরম্ I | ৪র্থ সংখ্যা ] বলিতে শিখিতে হইবে।” গত মাসে লর্ড কারমাইকেল কলিকাত ইউনিভার্সিটি ইনষ্টিটিউট গৃহের ভিত্তি স্থাপন উপলক্ষে যে বকৃত করেন, তাহাতেও বাঙ্গালী যুবকদিগকে তিনি ঐ প্রকারের কথা বলেন । তিনি এই আশা প্রকাশ করেন যে কালক্রমে ভারতভূমি অপেক্ষ বিস্তৃততর মাতৃভূমির ধারণা জন্মিবে। তখন স্বরাজের অর্থ সম্বন্ধে কোন সন্দেহ থাকিবে না। বৃটিশসাম্রাজ্যের সকল অধিবাসীর মধ্যে তখন কেবল এই এক ভাব থাকিবে, যে, সকলকেই এক সাম্রাজ্যের স্বাধীন ও সমান-রাষ্ট্ৰীয়-অধিকারসম্পন্ন অধিবাসী (citizen) হইতে হইবে । এই আদর্শ হইতে আমরা দুরে আছি, সন্দেহ নাই; কিন্তু ইহাকে সম্মুখে রাখিতে হইবে, এবং শিক্ষা দ্বারা এই লক্ষ্যের মূল্য বুঝিবার জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে । অধ্যাপক মারে এবং লর্ড কারমাইকেলের কথাগুলি ভালই। কিন্তু এ রকম কথা ভারতবাসীদের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থায় বলিলে তাহাদের মনে আনন্দের সঞ্চার না-হইতেও পারে,—যদিও তাহাদিগকে কষ্ট দেওয়া বক্তাদিগের একটুও অভিপ্রেত নহে। ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দে যখন মহারাণী ভিক্টোরিয়া সাক্ষাংভাবে ভারতশাসনের ভার গ্রহণ করেন, তখন তিনি এই বলেন যে র্তাহার সব প্রজা জাতিধৰ্ম্ম-বর্ণ-নিৰ্ব্বিশেষে সমান ব্যবহার পাইবে । তিনি অবখ "বন্দেমাতরম্ কথা দুটির উল্লেখ করেন নাই, এবং বৃহত্তর মাতৃভূমি সম্বন্ধেও কোন উপদেশ দেন নাই। কিন্তু র্তাহার মনোগত অভিপ্রায় ঘাহা ছিল, অধ্যাপক মারে ও লর্ড কারমাইকেল তদপেক্ষ বেশী কিছু বলেন নাই। যাহ। হউক, মহারাণী যাহা বলিয়াছিলেন, তাহার পুত্র এবং পৌত্রও তাহার সমর্থন করিয়াছেন । কিন্তু তাহদের কৰ্ম্মচারীরা তঁহাদের আদর্শকে বাস্তবে পরিণত করিবার জন্য বেশী ব্যগ্রতা দেখাষ্টয়াছেন, বলা যায় না। বৃটিশসাম্রাজ্যে ইংরেজ ও ভারতবাসী কোন বিষয়েই সমান বলিয়া বিবেচিত হয় না; ইহা আমরা বলি না ; কারণ তাহা সত্য নয়, কোন একান বিষয়ে বাস্তবিক সামা আছে। ভবিষ্যতে আরও কোন কোন বিষয়ে সাম্য হইতে পারে। কিন্তু খুব গুরুতর বিষয়সকলে ইংরেজের যে অধিকার আছে, ভারতবাসীর তাহা নাই। যেমন, ইংলও এবং বৃটিশ উপনিবেশগুলি বিবিধ প্রসঙ্গ—মাতৃভূমি 88s অধিবাসীদের মত-অতুসারে শাসিত হয়, অর্থাৎ তথায় প্রজাতন্ত্র-শাসনপ্রণালী প্রচলিত ; কিন্তু ভারতবর্ষে প্রত্যেক বিষয়ে রাজকৰ্ম্মচারীদেরই প্রভূত্ব। বিনা বিচারে কোন ইংরেজের নিৰ্ব্বাসন হইতে পারে না, ভারতবাসীর হইতে পারে। ইংরেজ ব্রিটিশসাম্রাজ্যের সর্বত্র ব্যবসাবাণিজ্য যাতায়াত করিতে পারে, ভারতবর্ষীয়েরা বৃটিশ উপনিবেশ-সকলে স্বচ্ছন্দ যাতায়াতের অধিকারী নহে । ইংরেজেরা সাম্রাজ্যের যে-কোন সরকারী চাকরী পাইতে পারে। কিন্তু জলযুদ্ধ এবং আকাশযুদ্ধ বিভাগের কোন কাজে কোন ভারতবাসী নিযুক্ত নাই। স্থলযুদ্ধ বিভাগে ভারতবাসী নিম্নতম কমিশনড সেনানায়কের কাজও পায় না। সকল প্রদেশের লোক সিপাহী হইতে পায় না। ভারতবাসীর ভলাটিয়ার হইতে পায় না। যুদ্ধের ব্যাপার ছাড়িয়া দিয়া সাধারণ শাসন, বিচার, পুলিশ, শিক্ষা, ভূতত্ত্ব, অরণ্য, লবণ, প্রভৃতি সমৃদয় বিভাগের বড় কাজগুলি অধিকাংশস্থলে ইংরেজদের একচেটিয়া। ফৌজদারী বিচারপ্রণালী সম্বন্ধে ইংরেজ ও ভারতবাসী আসামীর সমুদয় অধিকার এক রকম নহে। যে-সময়ে এত প্রভেদ রহিয়াছে, তখন, শ্বেত ও অশ্বেত আমরা সকলেই এক মায়ের সন্তান, এইরূপ মনে করিবার জন্য আমাদিগকে উপদেশ দিলে আমরা আনন্দিত না-হইতেও পারি। যদি সাম্রাজ্যের সকল অধিবাসীকে একই রকমের উচ্চ শিক্ষা ও অধিকার দিবার জন্য আন্তরিক, প্রবল, অবিরাম চেষ্টা করা হয়, এবং তাহার সঙ্গে সঙ্গে বৃহত্তর মাতৃভূমির আদর্শের বিষয় বলা হয়, তাহা হইলে সমালোচনার কোন কারণ থাকে না। কাজ অপেক্ষা কথার দৌড় বেশী হওয়া বাঞ্ছনীয় নহে। অতএব আমাদের অনুরোধ কথার সঙ্গে সঙ্গে কাজও হইতে থাকুক। অধ্যাপক মারে এবং লর্ড কারমাইকেল ভারতবর্ষীয় যুবকদের সমক্ষে যে আদর্শের কথা বলিয়াছেন, যুব, প্রৌঢ় বা বৃদ্ধ ইংরেজদের নিকট সেরূপ কথা কোন ইংরেজ বলেন নাই। উপদেশ উভয় পক্ষকেই দেওয়া উচিত। ইংরেজদিগকেও বলা উচিত, “তোমরা তোমাদের জননী ব্রিটানিয়াকে ভক্তি কর ও ভালবাস, তাহা খুব ভাল। কিন্তু