পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিয়াছেন। এ-নাম তাহার সার্থক হইয়াছে। "এ দেশে যাহারা সত্য দর্শন করিতেন, তত্ব সাক্ষাং করিতেন, তাহাদিগের প্রাচীন নাম ছিল কবি। যিনি বৈদিক সত্যের আদি দ্রষ্ট, প্রাচীন শাস্থে তাহাকে আদি কবি বলে : তেনে ব্ৰহ্মহৃদয অাদি কবয়ে । আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্র সেই আদি কবির প্রতিচ্ছবি । তিনিও তত্ত্বন্দ্রষ্ট, সত্যের আবিষ্কৰ্ত্ত। অতএব তাহার সমক্ষে আমাদের শির আপনি প্রণত হইতেছে। ভগবান তাহাকে দীর্ঘজীবী করুন।" শিক্ষার বয়স । সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের ছাত্রসমাজ আচাৰ্য্য বস্ব ও তাহার সহধৰ্ম্মিণীকে যে সম্বৰ্দ্ধন করেন, তদুপলক্ষে বস্থ মহাশয় এই মৰ্ম্মের কথা বলেন, যে তাহার শরীরে জরার লক্ষণ দেখা দিলেও তিনি এখনও ছাত্র বাস্তবিক প্রকৃত জ্ঞানী ও জ্ঞানাম্বেীর চিরজীবন শিক্ষা করেন, তাহদের কৌতুহলের নিবৃত্তি হয় না, শিক্ষাও কথন সমাপ্ত হয় না। মুখেরাই মনে করে যে ছচারটা পাস করিলেই শিক্ষা সমাপ্ত श्ग्रां यांग्र । পূৰ্ব্ববঙ্গে দুর্ভিক্ষ। ইউরোপে যুদ্ধ হওয়ায় গত বংসর পাটের কার্টুতি কমিয়া যায়। তাহাতে কৃষকদিগকে পাট সস্তাদরে ছাড়িতে হইয়াছিল। ত্রিপুর ও নোয়াখালী এই দুই জেলার পাটচাষীরা এইকারণে আড়াই কোটি টাকা কম পাইয়াছে। পাট-উৎপাদক অন্যান্য জেলাতেও চাষীদের আয় এইরূপ কম হইয়াছে। তাহার উপর উফরা রোগে গত বৎসরের আমন ধানের খুব ক্ষতি হয়। গত বৎসর পাটের চাষে ক্ষতি হওয়ায় এবার লোকে পাটের আবাদ অনেক কম জমিতে করিয়াছে। তাহাতে ভূমিশন্ত মজুরদের অনেকের ক্ষেতে কাজ করিয়া রোজগারের পথ বন্ধ হইয়াছে। তাছার পর আবার বন্যায় লোকের ঘরবাড়ী কোথাও ভাসিয়া, কোথাও ডুবি, কোথাও ভাঙ্গিয়৷ গিয়াছে, অস্থাবর সম্পত্তি নষ্ট হইয়াছে ; শস্য কোথাও প্রবালী—ভাদ্র, ১৩২২ পাশ্চাত্য লেখক তাহাকে বৈজ্ঞানিক যাদুকর আধ্য wকরেন নাই। ইহার কারণ কি? [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সম্পূর্ণরূপে, কোথাও বা অংশতঃ নষ্ট হইয়াছে। এইরূপে হাজার হাজার লোক গৃহহীন, অন্নহীন, বক্সহীন হইয়াছে। গবর্ণমেণ্টের তরফ হইতে সাহায্য হইতেছে, কিন্তু তাহা যে যথেষ্ট নয়, তাহ সাহায্যকারী নানাদলের লোকদের কার্য্যবিবরণ হইতেই বুঝা যাইতেছে। এইসময়ে সৰ্ব্বসাধারণ মুক্তহস্ত হইয়া টাকা দিলে বিস্তর লোকের প্রাণ বাচিৰে। যিনি সাহায্যকারী যে দলের কার্ষোর বেশী পবর রাখেন, তিনি তাহাদিগকেই টাকা পাঠাইবেন। আমরা ভাল করিয়া জানি, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের পক্ষ হইতে শ্ৰীযুক্ত রায় সাহেব রাজমোহন দাস, শ্ৰীযুক্ত বিনোদবিহার রায়, শ্ৰীযুক্ত বীরেন্দ্রনাথ দেব প্রভৃতি বিশেষ পরিশ্রম ও যত্ন করিয়া কাজ করিতেছেন। রায়ুসাহেব নিজের তত্ত্বাবধানের অধীন সাহায্যদান-কেন্দ্র গুলিরই জন্য সপ্তাতে এক হাজার টাকা চাহিয়াছেন । আপাততঃ চাউল দিয়া মানুষগুলিকে বাচাইয়। রাথিতে হইবে । বর্ষার পর জল শুকাইয়া গেলে কাঞ্জিক মাস নাগাদ লোকের ঘরবাড়ী বাধিবার জন্য টাকার দরকার ইষ্টবে। তখন আর একবার সহৃদয় দানশীল ব্যক্তিগণকে অর্থসাহায্য করিতে হইবে । সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ যে কাৰ্যা করিতেছেন, যাহারা তাহার সাহায্য করিতে ইচ্ছুক, তাহার, শ্ৰীযুক্ত প্ৰাণকৃষ্ণ আচার্য, সম্পাদক, সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ, ২১১, কর্ণওয়ালিস্ ট্রীট, কলিকাতা, এই ঠিকানায় টাক পাঠাইবেন। পূৰ্ব্ববঙ্গের দুর্ভিক্ষক্লিষ্ট অধিকাংশ লোক মুসলমান। অথচ মুসলমানদিগকে সাহায্যদান-কার্য্যে বেশী অগ্রসর দেখিতেছি না। বন্ধান-যুদ্ধের সময় বিপন্ন তুর্কদের সাহায্যাৰ্থ বঙ্গের মুসলমানের অনেক টাকা তুলিয়াছিলেন। সুতরাং বুঝা যাইতেছে যে ইচ্ছা করিলে তাহার বিপক্সের সাহায্য করিতে পারেন। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে করিতেছেন না কেন? ইহার পূৰ্ব্বেও পূর্ববঙ্গে অন্নকষ্টের সময় লক্ষ্য করিয়াছি যে হিন্দুরা যেরূপ সাহায্য করিয়াছেন, মুসলমানের সেরূপ বিদ্যাসাগর স্মৃতি-সভা। প্রাতঃস্মরণীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় এত প্রকারে মনুষ্যত্বের উজ্জল দৃষ্টান্ত রাখিয়া গিয়াছেন, এন্ত প্রকারে জনসমাজের হিত করিয়া গিয়াছেন, যে সংক্ষেপে | ৫ম সংখ্য। ] বিবিধ প্রসঙ্গ-কুচবিহ JJJJJSJMMMS MSMMSMMSMMSMSMSMMS তাহার চরিত্রের মাহাত্মা কীৰ্ত্তন করা সম্ভবপর নহে। কিন্তু ইহা নিঃসংশয়ে বলা যাইতে পারে যে, বিধবা-বিবাহ প্রচলিত করিবার চেষ্টায় তাহার দয়, তাহার ন্যায়পরায়ণতা, তাহার সমাজহিতৈষিতা, তাহার স্বাৰ্থত্যাগ, তাহার নির্ভীকতা, তাহার অটল প্রতিজ্ঞ, এবং তাহার অধ্যবসায়ের যেরূপ পরিচয় পাওয়া যায়, তাহার অাৰু- কোন কার্ষ্যে সেরূপ পাওয়া যায় না। বিদ্যাসাগরের মহুষ্যত্বের যদি পূজা করিতে হয়, তাহ হইলে তাহার এই সৰ্ব্বপ্রধান কীৰ্ত্তিটিকে কোন মতেই বাদ দেওয়া যায় না। তাহ অপেক্ষ বড় লেখক বাংলা দেশে জন্মিয়াছে, তাহার মত স্কুল কলেজ স্থাপন ও অপরে করিয়াছে, তিনি যত টাকা দান করিয়া গিয়াছেন, আর কেহ তত টাকা দেয় নাই, এমন কথাও বলা চলে না। কিন্তু সমাজসংস্কারে তাহ অপেক্ষ বেশী পৌরুষ কেহ দেখাইতে পারেন নাই। অতএব তাহার স্মৃতিসভায় বিধবা-বিবাহ প্রচলন চেষ্টার উল্লেখ না করা রামবিহীন রামায়ণ গান করার মত । বালিক। বিধবাদের বিবাহ দেওয়াই তাহদের মঙ্গলসাধনের একমাত্র উপায়, ইহা আমরা মনে করি না। কিন্তু দেশের বর্তমান অবস্থায় ইহাকেই সৰ্ব্বপ্রধান এবং স্বাভাবিক উপায় বলিয়া মনে করি । যিনি যাহা শ্রেষ্ঠ উপায় বলিয়া মনে করেন, কাজ করিয়া তাহা দেখান। কল্পনা দ্বারা কাহারও উপকার হয় না। হিন্দুবিধবাদিগকে “দেবী” বলিয়া প্রশংসা করিলেও কৰ্ত্তব্যের সমাপন হয় না । বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধে যাহার। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মতের সমর্থন করেন না, তাহারা তাহার স্মৃতিসভায় সে বিষয়ের উল্লেখ না করিলে তাহাদিগকে দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু তাহার একজন জীবনচরিতলেখক যে বিধবার বিবাহ দেওয়ার জন্য বিদ্যাসাগরের নরকবাসের ব্যবস্থা করিয়াছেন, তাহা গোড়ামির চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত। যমরাজ সম্ভবত: তাহা নামঞ্জুর করিয়াছেন। যমরাজের ছকুম যাহাই হউক, বিদ্যাসাগরের সহিত নরকবাস বাঞ্ছনীয়। যদি ঘটনাক্রমে বিদ্যাসাগর মহাশয় ও তাহার এই চরিতাখ্যায়ক একই লোকে হাজির হন, তাহা হইলে ঈশ্বরচন্দ্ৰ নিশ্চয়ই রাসাহেব যে লোক উজ্জল করিবেন, কাহা সভয়ে পরিত্যাগ করিবেন। đứ*


০৮:৩৯, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)~~

রের ভূতপূৰ্ব্ব দেওয়ান কুচবিহারের ভুতপুৰ্ব্ব দেওয়ান রায় কালিকাদাস দত্ত বাহাদুর, বি, এল ; সি, আই, ই । জন্মস্থান মেড়াল, জেলা বৰ্দ্ধমান। জন্ম ১৮৪১ খ্ৰী: অঃ । কাস্তিচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সংসারচন্দ্র সেন, রমেশচন্দ্র দত্ত, প্রভৃতির ন্যায় রায় কালিকাদাস দত্ত বাহাদুরও বাঙ্গালীর রাজ্যশাসন ক্ষমত। সপ্রমাণ করিয়া গিয়াছেন। ঐযুক্ত জানকীবল্লভ বিশ্বাস তাহার নিম্নে মুদ্রিত জীবনচরিতটি পাঠাইয়াছেন :– রায় কলিকদাদ দত্ত বাহাদুর। "যে মনস্বীর মহাপ্রস্থানে বঙ্গমাতা আজ রত্নহার, বৰ্দ্ধমান শোকাতুর, কুচবিহার বিষাদপুরীতে পরিণত, সংক্ষেপে তাহার বিশেষ পরিচয় প্রদান করা সম্ভব নহে। স্বৰ্গীয় রায় বাহাদুর স্বনামধন্য পুরুষ , উহার কীৰ্ত্তিকাহিনী সৰ্ব্বজনবিদিত ; বহুবার ইংরেজি বাজলা পত্রপত্রিকায় তাহার কার্যাবলী আলোচিত হইয়াছে ও ইতেছে। কিগুণে তিনি লোকপ্রিয় হইতে সমর্থ হইয়াছিলেন, কি মন্ত্রে তিনি কৰ্ম্মজীবনে সাফল্যের জয়মালো ভূষিত হইতে পারিয়াছিলেন, তাহ সম্পূর্ণরূপে হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ -