পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه ۰را ৩। তারানাথের ইতিহাসে পালরাজগণের যে নাম পাওয়া যায় তাহার অধিকাংশ কাল্পনিক। আমার পূর্ধ্বপ্রবন্ধে তারানাথ-প্রদত্ত পালরাজগণের তালিকা উদ্ধৃত করিয়াছি। গোপালের পরে এবং রামপালের পূৰ্ব্বে পালরাজবংশে ( ১ ) রসোপাল, (২) মহুরক্ষিত, (৩) বনপাল, (৪) শামুপাল (৫) শ্রেষ্টপাল, (৬) চণকপাল, (৭) বীরপাল (৮) অমরপাল, (৯) হস্তিপাল, ( ১০ ) শান্তিপাল প্রভৃতি যে দশজন রাজার নাম দেওয়া হইয়াছে, র্তাহারা যদি পালবংশজাত হইতেন, এবং গোপাল ও রামপালের রাজত্বের মধ্যবর্তী সমায়ে গৌড়-সিংহাসনে আরোহণ করিয়া থাকিতেন, তাহ হইলে মনহলির তাম্রশাসনে তঁহাদিগের নামোল্লেখ থাকিত। . এখন আর বোধ হয় রমাপ্রসাদবাবু অস্বীকার করিতে পরিবেন না যে তারানাথের ইতিহাসে বিশ্বাসযোগ্য এবং অবিশ্বাস্ত, দুই শ্রেণীর কথাই আছে। যে গ্রন্থে সত্য এবং কাল্পনিক উভয় প্রকার উক্তিই আছে, সে গ্রন্থের কথা ইতিহাস রচনাকালে অতি সাবধানে গ্রহণ করা উচিত। বিশ্বাসযোগ্য অন্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত ন হইলে এই শ্রেণীর গ্রন্থকারের অথব গ্রন্থের উক্তি প্রকৃত ইতিহাসে সত্য বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। গোপালের নিৰ্ব্বাচন, তাহার নিবাসক্ষেত্রের নাম, ধৰ্ম্মপালের রাজ্য বিস্তারের কাহিনী একাধিক তাম্রশাসন, শিলালিপি ও সমসাময়িক গ্রন্থ দ্বারা সমর্থিত হইয়াছে, সেই জন্যই এই সকল কথা ঐতিহাসিক সত্যরূপে গৃহীত হইয়াছে। কিন্তু ধীমান ও বীতপালের নাম তারানাথ ব্যতীত কোনও শিলালিপি তাম্রশাসন বা সমসাময়িক গ্রন্থে পাওয়া যায় নাই। তারানাথের ধীমান ও বীতপাল সম্বন্ধে উক্তির সমর্থক কোনও প্রমাণ এ পর্য্যস্ত আবিষ্কৃত হয় নাই । মৈত্রেয় মহাশয় এই সম্পূর্ণরূপ অবিশ্বাস্ত গ্রন্থের প্রমাণ, অন্ত প্রমাণ দ্বার অসমর্থিত দেথিয়াও সত্য বলিয়৷ গ্ৰহণ করিয়াছেন এবং এই গ্রন্থের প্রমাণের বলে ইতিহাস স্থষ্টি করিবার চেষ্ট৷ করিয়াছেন, ইহাই আমাদিগের আক্ষেপের কারণ। তারানাথের গ্রন্থ ব্যতীত অন্য কোনও স্থানে ধীমান ও বীতপালের নাম পৰ্য্যন্ত দেখিতে পাওয়া যায় না ; সুতরাং ধীমান ও বীতপালের নাম বাঙ্গাল দেশের অথবা প্রবাসী—ভাদ্র, SAMSM MS MS MSMSMMMMS [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড


ې س--

বাঙ্গালীজাতির ইতিহাসে স্থান পাইতে পারে না। প্রকৃত ইতিহার কঠোর ও নিষ্ঠুর সত্যের উপর প্রতিষ্ঠাপিত। প্রকৃত ইতিহাসের রাজ্যে বংশগরিমা, স্বজাতিপ্রিয়তা এবং local patriotism অর্থাং প্রদেশ-বংসলতার স্থান নাই। রমাপ্রসাদবাবু বলেন যে তাহদের কথা "scientific induction" আঙ্গুমোদিত । আমার বোধ হয় রমাপ্রসাদ বাবু বলিতে চাহেন যে তাহার এই শিল্পীদ্বয় সম্বন্ধে যে উপসংহারে উপনীত হইয়াছেন তাহা scientific method *q&l logical induction offs ot?' scientific induction বলিয়া কোনও কথা এ পর্য্যন্ত ইংরেজী, ফরাসী, জৰ্ম্মন বা ইতালীয় ভাষায় লিখিত কোনও ন্যায় বা দর্শন গ্রন্থে পাওয়া যায় নাই। সাধারণ ভাবে বুঝিতে চেষ্টা করিলে ইহার কোনও অর্থই উপলব্ধি হয় না। আমার বোধ হয় রমাপ্রসাদ বাৰু দুইটা কথায় গোল করিয়া costaszúa ( S) scientific method, aqo (3) logical induction. এখন দেখা যাউক যে রমাপ্রসাদবাবু ও মৈত্রেয় মহাশয় যাহা বলিয়াছেন তা ন্যায়ের অধিরোহণ প্রণালীর (logical induction ) *vữI v{#cIIf#5 I c#Rs সাধারণ তথ্যে উপনীত হইতে হইলে কয়েকটি বিশেষ তথ্যের সত্য নিরূপণ করিতে হয়। এই বিশেষ তথ্যগুলি যদি সত্য বলিয়া প্রতিপন্ন হয়, তাহা হইলে সাধারণ তথ্যের সম্বন্ধে নি:সন্দিহান হইতে পারি। কিন্তু এই-সকল বিশেষ তথ্যগুলির কোনটি যদি অসত্য বলিয়া প্রমাণিত হয় তাহ হইলে আমাদের পূর্বকথিত সাধারণ তথ্যও অগ্রামাণ্য হইবে । ধীমান ও বীতপাল সম্বন্ধে বরেন্দ্র-অনুসন্ধানসমিতির উক্তির বিশ্লেষণ করিলে আমরা এই বুঝি যে উক্ত সমিতি ধরিয়া লইয়াছেন যে তারানাথ যাহা গ্রন্থে নিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন তাহ সম্পূর্ণ সত্য ও অকাট্য। কিন্তু ইহা pure assumption, logical induction oz હફે সাধারণ তথ্যের বিরুদ্ধে আমি কয়েকটি প্রমাণ উপরে প্রদান করিয়া দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছি যে সত্য-মিথ্যায় মিশ্রিত তারানাথের উক্তিসমূহের ঐতিহাসিকের মিকং কোনও মূল্য নাই। আর যে ইতিহাস-প্রণেত এই সকল উভিতে আস্থা স্থাপন করিয়া গ্রন্থ রচনায় প্রবৃত্ত হইবেন তাহার গ্রন্থ ৫ম সংখ্যা ] স্বলিপিত উপন্যাসসমূহের মধ্যে স্থান পাইতে পাীে, কিন্তু উহু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ( scientific method ) &নুসারে লিখিত ইতিহাস আখ্যা পাইবে না। রমাপ্রসাদ বাবু বলিয়াছেন, “তারানাথের গ্রন্থে গোপালের এবং ধৰ্ম্মপালের ইতিহাসের এতগুলি থাটি কথার উল্লেখ দেখিয়া অচুমান হয়—এই যুগের ঐতিহাসিক বৃত্তান্তের কোনও নির্ভরযোগ্য আকর – কোনও গ্রন্থ ব৷ লিপি-গ্রন্থ রচনার সময় তারনাথের হাতের কাছে ছিল। একখানি স্তত্তলিপির আভাস তারানাথ স্বয়ংই দিয়াছেন। তিনি ধীমান ও বীতপাল সম্বন্ধে যাহা লিপিয়াছেন, তাহ। অমূলক নাও হইতে পারে।" কিন্তু ইহাই কি বিজ্ঞানান্তমোদিত তথ্যানুসন্ধান ? এইরূপ যুক্তির বিরুদ্ধে দার্শনিক লিউইস (G. H. Lewes) তাহার দর্শনশাস্ত্রের ইতিহাস (History of Philosophy) as to so go foot. বলেন— - “To reach the unknown we must pass by the objective method through the avenues of the known ; we must not attempt to reach it through the unknown...... The philosophical mind is very little assected by guarantees of respectability......In the delicate and difficult question of science paroles d'honneur have a quite inappreciable weight.” তারানাথ দুই তিন খানি অধুনা-লুপ্ত গ্রন্থ অবলম্বনে তাহার ইতিহাস রচনা করিয়াছিলেন। তিনি তাহার ইতিহাসেই এই সকল গ্রন্থের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু এই-সকল গ্রন্থ যে “ঐতিহাসিক বৃত্তান্তের নির্ভরযোগ্য আকর” নহে তাহার প্রমাণ আমি পূর্বেই দিয়াছি। এই গ্রন্থগুলি যদি অভ্রান্ত হইত তাহা হইলে দেবপাল কখনও ধৰ্ম্মপালের পিতামহ বলিয়া উল্লিখিত হইতেন না, এবং মসুরক্ষিতের নাম পালরাজগণের তালিকায় স্থান পাইত না। তারানাথ খৃষ্টীয় ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর লোক, স্বতরাং তিনি অষ্টম শতাষ্ট্রর ইতিহাস রচনাকালে যেসকল ভুল করিয়াছেন-তাঁহা তাহার নিজের স্মৃতিশক্তির অথবা পর্যবেক্ষণ-শক্তির অভাবজনিত নহে, কারণ তিনি ত সমসাময়িক ঘটনার ইতিহাস লিখেন নাই। যেসকল ഹ:ഹ Nაe ა প্রমাণ বা ঐতিহাসিক গ্রন্থ অবলম্বনে তিব্বতদেশীয় ইতিহাসকার স্বীয় গ্রন্থ রচনা করিয়াছিলেন, এই সকল ভুল সেই-সকল গ্রন্থ বা প্রমাণের ভুল। সমর্থনের উপায় ন৷ পাইয়া তারানাথ পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী গ্রন্থকারগণের ভ্ৰমাত্মক উক্তি লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। তারানাথের গ্রন্থ রচনার সময়ে যে-সকল উপাদান তাহার গোচর হইয়াছিল, সেগুলিকে “নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক বৃত্তান্তের আকর" বলিলে অথবা "অতুমান” করিলে ঐতিহাসিক সত্যের অবমাননা করা হয়। তারানাথের উপাদানসমূহ সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসযোগ্য ছিল না বলিয়াই যতদিন পর্য্যন্ত ধীমান ও বীতপালের অস্তিত্ব সঙ্গন্ধে আবার প্রমাণ আবিষ্কার না হয় ততদিন পৰ্য্যন্ত র্তাহাদিগের নাম বা বৃত্তান্ত প্রকৃত ইতিহাসে স্থান পাইতে পারে না। “যিনি ধৰ্ম্মপালের খালিমপুরের তাম্রশাসন আবিষ্কারের পূৰ্ব্বে আমাদিগকে গোপালের নির্বাচনের কথা শুনাইয়াছিলেন, এবং নারায়ণ পালের ভাগলপুরের তাম্রশাসন আবিষ্কারের পূৰ্ব্বে চক্রাযুধের কথা শুনাইয়াছিলেন" সেই তারানাথই ধৰ্ম্মপালকে দেবপালের পৌত্র এবং মসুরক্ষিতকে দেবপালের পরবর্তী গৌড়েশ্বর বলিয়া তাহার ইতিহাসের সত্যমূলাভাব প্রমাণ করিয়াছেন, স্বতরাং "সেই তারানাথের কথার অনুসরণ করিয়া" "গৌড়ীয় শিল্পরীতির জন্মস্থান ধীমান ও বীতপালের কারখানা” এইকথা "আপাতত” বলাও বিজ্ঞানসম্মত" ঐতিহাসিক রচনাপ্রণালীর বিরুদ্ধ । রমাপ্রসাদবাৰু অনুগ্রহ করিয়া আমাকে মিথ্যাবাদী বলিয়াছেন, কারণ আমার পূর্ব প্রবন্ধে বলিয়াছিলাম "বরেন্দ্র-অনুসন্ধান-সমিতি স্থির করিয়াছেন যে তাহদের সংগৃহীত মূৰ্ত্তিসমূহের মধ্যে ধীমান-নিৰ্ম্মিত কতকগুলি প্রস্তর মূৰ্ত্তি আছে।" রমাপ্রসাদবাবু বলেন, “এখানে আছে, ১১, ১৪, ৩৪ এবং ৯৫ নং মূৰ্ত্তি নিৰ্ব্বিবাদে , safely ) ধীমান অথবা তাহার নিজ শিষ্যগণের নিৰ্ম্মিত বলিয়া মনে করা afēts "tt" ( may be attributed ); w szt: R:Hgঅনুসন্ধান-সমিতি কোনও মূৰ্ত্তি ধীমান-নিশ্বিত মনে করিয়াছেন একথা বলা ঠিক হয় নাই।" - "নিৰ্ব্বিবাদে ধীমান অথবা তাহার নিজ শিষ্যগণের নিৰ্ম্মিত" বলিলে বুঝিতে হইবে যে হয় "মূর্তিগুলি ধীমান