পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৪৪ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩২২

  • ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ

আন্দু একবার চারিদিকে তাকাইল,-কিন্তু ব্যাগ হরাইবার উপযুক্ত পাত্রের কিছুমাত্রই সদ্ধান পাইল না। আন্দু ভাবিতে লাগিল, তাইত, কি করা যায় ? ক্ষণপরে আপনা-আপনি বলিয়া উঠিল, “যা, ভালই হয়েছে, কি করে আধঘণ্ট। কাটাই তাই ভাবছিলেম, ঈশ্বর একটা কাজ জুটিয়ে দিয়েছেন, দেখি ব্যাগের মালিকের সন্ধান করে, একান্ত না পাই, শেষ ষ্টেশন-মাষ্টারের জিম্ম করে দেওয়া যাবে।" কৰ্ম্মপ্রিয় আন্দু কৰ্ম্মের উদ্যমে মৰ্ম্ম-বেদন ভুলিয়, উৎসাহিতপদে প্লাটফরমে আসিল । প্লাটফরমে রীতিমত সজীব চঞ্চলতা ; মোট পুটুলী ঝোড়াখুড়ি বাক্স ট্রাঙ্ক লইয়া, যাত্রীগণ ইতস্তত: বিশৃঙ্খল ভাবে ছড়াইয়া রহিয়াছে। नूद्र श्८ऊ याएँौ८नद्र श्रदशान भन्म ८मथा३८ड८छ् ना, किड़ কাছাকাছি হইলে বিষম বিসদৃশ ঠেকিতেছে। আলু আসিয়া একটা আলোক-স্তম্ভের নীচে পুটুলী ও লাঠিটি ফেলিল। তারপর –যতদূর সৃষ্টি চলে—উত্তমরূপে নিরীক্ষণ করিয়৷ দেখিল, ষ্টেশনে অধিকাংশই ইতর শ্রেণীর হিন্দুস্থানী ; ভদ্রপরিচ্ছদধারী কতকগুলি যাত্রী ছিল, তাহাদের একবার ভাল করিয়া পৰ্য্যবেক্ষণ করিতে আন্দু অগ্রসর হইল। প্রথমেই একজন সম্রাস্ত ধরণেব প্রৌঢ় হিন্দুস্থানীকে পাইল। কাছে গিয়া সেলাম বাজাইয়া আন্দু বলিল “জী, —আপকে মনিবাগ হায় ?” "জী"-চিহ্নিত লোকটা গঞ্জিকা-রঞ্জিত চক্ষু যুৱাইয়। তাহার পানে চাহিল, মেজাজটা তখন দস্তুরমত রংচংয়ে ভোর ছিল, স্বতরাং কথাটা বোধগম্য হইল না। দ্বিতীয় প্রশ্ন নিম্প্রয়োজন বোধে আন্দু সেথান হইতে সরিয়া গেল । তাহার পরই একজন নব্যসভ্যতা-মণ্ডিত চশমাওয়াল বাঙ্গালী-যুবকের পালা। যুবকটি শ্বশুরবাড়ীর ফেরং পিত্ৰালয় যাইবে, স্বতরাং পরিচ্ছদের জাকজমক খুব । আন্দু কাছে গিয়া, পকেট হইতে বহুদিনের পুরাতন একটা পাইপ-যুদ্ধ সিগারেট বাহির করিয়া, পাইপটা খুলিয়া পুনশ্চ পরাইতে পরাইতে বলিল “বাৰু আপনার কাছে দেশলাই আছে ?” বাৰু এপকেট ওপকেট হাতড়াইয় দেশলাই বাহির ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ করিয়া তাহার হাতে দিলেন, আন্দু বুঝিল তাহার পকেটের জিনিসপত্র সবই যথাস্থানে আছে,—আন্দু সিগারেট ধরাইয়। সেখান হইতে চলিয়া গেল। আসলে সে সিগারেট থাইত ন, স্বতরাং আলোক-স্তম্ভের অন্তরালে গিয়া দেয়ালের গায়ে খসিয়া সেটা নিৰ্ব্বাপিত করিয়া ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের অনিশ্চিত সস্তাবনায় পুনরায় পকেটে ফেলিল । ব্রাউন রংয়ের বুট পরিয়া, চুড়িদার পাঞ্জাবী গায়ে, টেরি এবং ছড়িযুক্ত এক ইংরেজীনবিশ হিন্দুস্থানী যুবক, প্রবল গাম্ভীর্ষ্যে প্লাটফরমের ধারে পাদ-চালনা করিতেছিল। আন্দু তাহাকে গিয়া পাকুড়াইল । সৌজন্যের সহিত বিনীত ভাবে বলিল “দোস্ত সাহেব, আপকে মনিবাগ ঠিক রাথিয়ে, টশন ভির এক আদমী-কে বেগ, হেরায়া।" তীক্ষুবুদ্ধি দোস্ত সাহেব এই অপরিচিত লোকটির অযাচিত উপদেশে সস্ত্রস্ত হইয়া একবার বুক পকেটে হাত দিলেন, তারপর তাচ্ছিল্যুভরে মুখ ফিরাইয়া চলিয়া গেলেন। আন্দু দেখিল ব্যাগের জন্য এ লোকটির কিছুমাত্র দুশ্চিন্তা নাই । - ੇ মনিব্যাগ রাখিবার উপযুক্ত যতগুলি লোককে আন্দু দেখিল, সকলগুলিকেই ঘুরাইয়া ফিরাইয় প্রশ্ন করিয়া জানিল, ব্যাগের জন্য তাহার কেহই ব্যস্ত নহে। বিফলপ্রয়াস আন্দু তথাপি হাল ছাড়িল না। ট্রেন আসিতে আরো দশ মিনিট দেরী আছে দেখিয়া, সে পাচ মিনিট আরো ব্যাগের মালিককে খুজিতে মনস্থ করিল। নবোদ্যমে পুনরায় সেই আলোকোম্ভাসিত কোলাহল-মুখরিত ষ্টেশনের আদ্যোপান্ত চাহিয়া দেখিল। তারপর দ্রুতপদে অগ্রসর হইল । প্লাটফরমের পশ্চিমে কোলাহল-বিরল স্বল্পালোকিত স্থানে, দুইজন ইংরেজ-মহিলা পাদচালন করিতেছিলেন, একজন প্রৌঢ়, অপর তরুণী ; সম্ভবতঃ মাত কন্যা। সহসা আন্দু ব্যস্তভাবে কাছে আসিয়া দাড়াইতেই শ্বেতাঙ্গনাদ্বয়ও দাড়াইলেন। আন্দু কুর্নিশ করিয়া কহিল"মেম-সাহেব, আপলোক্‌-কে রূপেয়া ভলানী চাহিএ।" | "নেহি!—মেম-সাহেবরা চলিয়া যাইতে উদ্যত হইলেন। উদ্বিগ্ন আন্দু বলিয়া উঠিল “নোট নোট, দাশ, রূপেয়াকা । নোট ভাঙ্গানী ?” [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড - দাড়াইয়া ছিল । ৫ম সংখ্যা] SAMS MJSJMSMSMSMSMSMSMS "নোট”–মাত, কন্যার মুখপানে চাহিলেন। "ও, হ্য—তাতে অবশ্ব স্থবিধা আছে, কন্য। ইংরেজীতে বলিলেন। পরক্ষণেই ব্যস্তসমস্ত হইয়া জামার ভিতর দিকে খুজিতে লাগিলেন। “যা, কোথা গেল, কোথা গেল, আমার মনিব্যাগট। কোথা গেল”—কন্যা ক্রস্ত চকিত নয়নে ইতস্তত: চাহিতে লাগিলেন । "ব্যাগ! সেকি, ব্যাগ নাই !"—মাতা ও উৎকণ্ঠিত। আন্ধুর মুখ প্রফুল্প হইল। “নিশ্চয় সে নিশ্চয় এই প্লাটফরমেই পড়ে গেছে, আমি সিড়ি পৰ্য্যন্ত সেটা দেখছি,”-- - "যা: ! চল চল দেখা যাক, এখন পাওয়া গেলে হয়।" ."ট্রেনট। বোধ হয় মিস কৰ্ত্তে হবে, সেটা কিন্তু ঠিক এইখানেই পড়েছে।” “চল চল”—উভয়ে দ্রুতপদে চলিলেন। “আপকো ব্যাগ হেরায় মেমসাহেব ?” আন্দু স্বধাইল। “ছ৷ ই চুড়কে দেখে, যিসকে মিলেগী—” “কম্বর মাপ কিজিয়ে মেম সাব, এইঠো দেখনেকে। মরজি—” আন্দু বয়স্কার হাতে ব্যাগ দিল । "ই৷ ই এই আমার ব্যাগ, বহু ধন্যবাদ ”—আনন্দোংফুল্ল যুবতী, তাড়াতাড়ি মাতার হাত হইতে ব্যাগটা লইয় খুলিয়া ফেলিলেন। তাহার অভ্যস্তরে কয়েকখানি নোট, এবং দুইখানি ভাগলপুর হইতে টুভূল জংসন পৰ্য্যস্ত রেলওয়ে টিকিট, এবং কয়েকটি টাকা ও দুটি সিকি।– "সবই ঠিক আছে, লোকটাকে কিছু বখশীস।” “ই অবগু"–মাত ব্যাগ হইতে দুইটি টাকা তুলিয়৷ লইলেন। আ দু হাত ছয়েক দূরে সরিয়া গিয়া, একটা আলোকস্তস্তে ঈষং হেলিয়া ঠেস দিয়া কোমরে হাত রাখিয়া মেম-সাহেব কাছে আসিয়া বলিলেন "তুমি এটা কোথা পেলে?” সবিনয়ে আন্দু বলিল “সিড়ির নীচে পড়ে ছিল মেম সাহেব। প্লাটফরমের সকল যাত্রীকেই জিজ্ঞাসা করেছি, কারুর নয়, তাই আপনাদের ব্যাগ সন্দেহ করে টাকা ভাঙ্গাবার অছিলায় সন্ধান নিতে এসেছিলুম, মাফ করুন।"

  • মেম-সাহেব বলিলেন “খুব ভাল, তোমার সতত৷ প্রশংসনীয়, আমরা খুনী হয়েছি, এই টাকা দুটি—“

সেখ আন্দু vög “মাফ করুন মেম-সাহেব, আপনাদের খুলীতেই গরীবের আনন্দ, টাকা চাই না।” “না না, আমরা তা হলে বড় দুঃখিত হব।" "আপনার অনুরোধে আমি তার চেয়ে দুঃখিত হলুম। মা, টাকাই কি জীবনের শ্রেষ্ঠ জিনিস ?" - "ধন্যবাদ যুবক, তোমার নাম ?”-যুবতী মেমসাহেব অগ্রসর হইয়া স্মিতমুখে প্রশ্ন করিলেন “তোমার নাম ?” “আমার নাম শেখ আনোয়ার উদ্দীন।” যুবতী নোটবুকে নাম টুকিয়া লইল। "তোমার বাড়ী কোথা ?” “পূৰ্ব্বে ভাগলপুরে ছিল, এখন নির্দিষ্ট কোথাও নাই।" "এখন কোথায় যাবে ?” “সম্ভবতঃ দিল্লী।” “দিল্লী ? কেন ?” “জীবিকা উপার্জনে ৷” “কি কাজ কর ?” দর্জি ছিলাম, এখন মোটরকারের ড্রাইভারি করি।" “ড্রাইভারি কর”—তরুণীর উজ্জল নীলচক্ষু আনন্দে হাসিয়া উঠিল। অর্থস্থচক দৃষ্টিতে কন্যা মাতার মুখপানে তাকাইলেন। মাত বলিলেন “শোনো যুবক, আমি টুতুল যাচ্ছি , যদি আমার দ্বারা কোন উপকার হয় তো বল, 蠶 করতে প্রস্তুত আছি, আমি সেখানকার ম্যাজিষ্ট্রেটের !" ভূমিস্পর্শ করিয়া আন্দু অভিবাদন করিল। সসম্ভ্রমে বলিল, “আপনার অল্পগ্রহের জন্য ধন্যবাদ মেমসাহেব, আমি fRSMCS TffsS,—" অধীর হইয়া ছোট মেমসাহেব বলিলেন, “তুমি যদি টুভূল যাও, তা হলে, আমাদের দ্বারা তোমার ভবিষ্যৎ উন্নতির সম্ভাবনা আছে,—” "সেলাম, ঐ ট্রেন আসছে, আর দেরী নাই, ক্ষম। করুন”—আন্দু নিজের মোট লক্ষ্য করিয়া ছুটিল। যাত্রীর দল তখন যথেষ্ট ব্যস্ততার সহিত মোটঘাট লইয়৷ উৎকণ্ঠিত কোলাহলে ট্রেনে উঠিবার জন্য প্রস্তুত হইতেছিল। ছোট মেমসাহেব পিছন হইতে হাকিয়া বলিলেন “তা হলে তুমি টুধুলা ষ্টেশনে নেমে, নিশ্চয় নেমে, বুঝলে ? নেমো।”