পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- - >8० বিভিন্ন প্রদেশে আকৃপিজেনের বিভিন্ন নাম হয়, তাহা হইলে এক ইংরেজী নাম স্থানে পচিশ নাম আসিয়া জুটিবে। যদি অধিকাংশ প্রদেশে অক্সিজেন কিংবা ইহার কিঞ্চিং রূপান্তরিত নাম চলে, তাহাতে আমাদের সকলের স্ববিধা। প্রদেশভেদে বিভিন্ন নাম না হইলে মাতৃভাষা ছাড়িয়া ইংরেজী পড়িতে গেলে নূতন নাম শিখিতে হয় না। - ইয়ুরোপের বিভিন্ন ভাষার মধ্যে বৈজ্ঞানিক নাম কিন্তু এক রহিয়াছে। যে নাম পূৰ্ব্ব হইতে প্রচলিত ছিল, সে নাম আছে, বৈজ্ঞানিক নামও আছে। লোহা না বলিয়া সব - - স্থানে যে আয়রন কিম্বা অয়স বলিতে হইবে, তাহা নহে। ছেলের ডাকনাম রাখার মতন দুই পাচটা ইংরেজী নামের বাঙ্গলা ডাকনাম রাখিলে ক্ষতি নাই। জাপানীরা বৈজ্ঞানিক নাম জাপানী ভাষায় অনুবাদ করে নাই, কাজ বেশ চলিতেছে। যখন আমরা কোন দ্রব্য আবিষ্কার করিব তখন বিশেষ কারণ না থাকিলে আমাদের প্রদত্ত নাম ইয়ুরোপেও চলিবে । - - একটা কথা এই, কোন কোন ইংরেজী নাম আমাদের - মুখে সহজে উচ্চারিত হয় না, আমাদের কানে ভাল শোনায় না। বড় বড় শব্দ, সংস্কৃত শব্দ, ইংরেজী শব্দ, আরবী ফারসী শব্দ বাঙ্গলাতে কিছু কিছু বিকৃত হইয় পড়ে। কিন্তু - বিকারের স্বত্র জানা আছে। সেই স্বত্র ধরিয়া ইংরেজী নাম-শন্ধের কিছু পরিবর্তন করিয়া লইলে বাদল ভাষায় স্বচ্ছন্দে মিশিয়া যাইবে । যিনি ইংরেজীতে বিজ্ঞান ন, বাঙ্গালায় যাহা কিঞ্চিৎ পরিবর্ধিত আকারে দেখিয়াছেন, তাহাই পূর্ণ আকারে পাইবেন। এমন কি ইংরেজী নামের :* কাটিয়া দিলে যৌগিক নাম রচনায় স্থবিধা হয়। অক্সিজেন—অকসি, সলফর—সলফ, পটাসিয়ম-পটাসি করিলে ক্ষতি দেখি না। ইংরেজী নাম লইলে আপত্তি হয় যে নামটা একেবারে সঙ্কেত থাকিয়৷ যায়। কিন্তু আমরা কয়টা শব্দের ব্যুৎপত্তি স্মরণ করিয়া মনে রাখি কিংবা প্রয়োগ করি? রুপাকে কেন রুপা বলি, डाश জানি না , গন্ধক নাম কেন দেওয়া হইয়াছিল তাহ অন্বেষণ না করিয়াও আমরা বাজার হইতে গন্ধক কিনিয়৷ আনি। দ্রব্যের গুণ লক্ষ্য করিয়া নাম রচিত হইলে মনে প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২২ S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S S SJJ S S S MMMMMM MMMMMMMMS রাখার স্ববিধা হয় বটে, কিন্তু অন্য অসুবিধ ঘটে। ইংরেজীতেও । অনেকগুলা রাসায়নিক মূল পদার্থের নামের অর্থ নাই । নামকৰ্ত্তার সখ বই আর কিছু নাই। গুণবাচক শব্দ সংজ্ঞা করিতে সংস্কৃত ভাষা অদ্বিতীয় ছিল। প্রাণী ও উদ্ভিদের ৷ এমন সংস্কৃত নাম প্রায় নাই যদ্বারা লক্ষণ প্রকাশিত হয় । না। এখন সংস্কৃতের কাল নহে, অপর এক ভাষারও অম্লজান, হাইড্রোজেন উদজান, জলজান, ইত্যাদি না । বাঙ্গালা না-সংস্কৃত না-ইংরেজী এমন অদ্ভুত নাম রচিত হইয়াছিল। কিন্তু কেবল রসায়ন বিজ্ঞানের অক্সিজেন হাইড্রোজেন নহে, ইহাদের অসংখ্য যৌগিক দ্রব্যের নাম । আছে । এই এক কারণে সংস্কৃত নাম-করণ ব্যর্থ হইবে। কি ? গাছপালা জীবজন্তুর নাম কি হইবে ? লেটিন নামের করিতে হইবে ? প্রয়োজন অনুসারে দেশী গাছপালা পশু-পক্ষীর দেশী নাম বাঙ্গলা নাম না থাকিলে গড়তে হইবে কিন্তু সকল স্থলে নহে, কিম্বা শ্রেণীবিভাজনে নহে। ] ইংরেজীতেও ডাকনাম ও বৈজ্ঞানিক নাম আছে। উদেখ । ও অধিকারীভেদে কোথাও ডাকনাম কোথাও বৈজ্ঞানিক লেটিন নাম করিতে হয়। এখানেও, বোধ হয়, দীর্ঘ । লেটিন নামগুলা বাঙ্গলায় সংক্ষিপ্ত করিতে হইবে। ইহাতে । বৰ্দ্ধন, লৌহ পিত্তলাদি ধাতুর প্রভেদকরণ, প্রভৃতি হয় না। দোষ হইবে না, কারণ বাঙ্গলাতে লেটিন নামের অর্থ কিংবা । ব্যাকরণ কিছুই জানা থাকিবে না। আকাশের তারার ' গণ-নাম ও জাতি-নাম যোগে ইংরেজী নাম হয় নাই। । তারার নামে সে রীতি চলিতে পারে না। বোধ হয়, নক্ষত্র নাম বাঙ্গলায় করিয়া তারার নাম প্রভা ধরিয়া এক দুই তিন অঙ্ক দ্বারা রচনা করিতে হইবে। সংজ্ঞ শম্ব ব্যতীত গুণ ক্রিয়া আবশ্ব বাদলায় বলিতে হইবে। কদাচিৎ ইংরেজী শব্দও লইতে হইবে। এ বিষয় বহুবার বহুস্থানে আলোচিত হইয়াছে। আমার বিশ্বাস, যদি সাহিত্য-পরিযাং উপযুক্ত লেখক দ্বারা এক এক বিজ্ঞান বিষয়ে উংকৃষ্ট প্রামাণিক পুস্তক লেখাইয়া প্রচার করিতেন, তাহা হইলে এতদিন একটা পথ দেখা যাই । লেখার গুণে দ্বন্ধ । - বিষয় স্থবোধ হয়। সংজ্ঞা বুঝাইয়া দিলে বুঝিতে পাৱ৷ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সংখ্য। ] -


থাকিলে সংজ্ঞায় ভয়ুসঞ্চার


দোষ | & സി. যায়, কিন্তু লেখার করে। এখন উপসংহার করি। আপনাদের নিকট পিষ্ট-পেষণ করিলাম, পেষণ শব্দে কৰ্ণপীড়াও জাইলাম। গ্রামবাসীর - নিকট গ্রামের সংবাদ ব্যতীত অন্য কিছু আশ। করিলে I আপনাদের ভূয়োদৰ্শিতা দোষ স্পশিবে। সময়ে অসময়ে बामह। কলা, বিজ্ঞান প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করি। সব সময় বুঝিয়া করি না। এই হেতু কলার লক্ষণ, কলার সহিত বিজ্ঞানের সঙ্গন্ধ, বিজ্ঞান শব্দের অর্থ স্থিতি মার্গ মহিমা অহুবোধন করিয়াছি। দেখিয়াছি প্রাচীনে ও নবীনে বিজ্ঞানের মার্গ এবং তর্ক-বিদ্যা এক। অতএব আধুনিক বিজ্ঞানে আমাদের অগ্রসর হইবার বিঘ্ন দেখা যাইতেছে না। ভূ-বিজ্ঞানের অসংখ্য মণির নাম বাঙ্গলায় রচিত হইবে । তথাপি দেশে বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হইতেছে না। আমার অনুভবসিদ্ধ প্রতিকার জ্ঞাপন করিয়াছি। বছর নিমিত্ত সঙ্গে-সঙ্গে কি এক-একটা সংস্কৃত বৈজ্ঞানিক নাম রচনা | মৃত-বিজ্ঞানের প্রয়োজন দেখাইয়াছি। শেষে কৃষিবাৰ্ত্ত উপলক্ষা করিয়া দেশের সকলকে, বৈজ্ঞানিক অবৈজ্ঞানিক, গ্রামবাসী ও পুরবাণী, সকলকে সম্বোধন করিয়াছি। মানবসমাজ যেমন হউক, তাহার আয়ুৰ্ব্বেদ নিশ্চয় থাকে, বাৰ্ত্তাও থাকে। আমাদেরও ছিল ও আছে। চরক লিপিয়াছেন, বায়ু বিনা অগ্নি জলে না, মেঘের স্বষ্টি হয় না, জলের বর্ষণ হয় না, পুষ্প ফলের উৎপাদন, উদ্ভিদের উদ্ভেদন শস্তের এ সব কথা নিশ্চয়ই ভূয়োদর্শনের ফল, পরীক্ষার ফল। সংক্ষিপ্ত বর্ণনার ও সময় নাই । আমরা কোন কোন বিষয়ে চারি শত, কোন কোন বিষয়ে দুই-একশত বৎসর ইরোপের পশ্চাতে পড়িয়াছি। এখন আমাদিগকে দৌড়াইতে হইতেছে। তার উপর পাশ্চাত্য বিজ্ঞান অল্প বয়সেই এত লাফাইতেছে এত দৌড়াইতেছে যে আমরা পেছু ধরিতে পারিতেছি না। কিন্তু আমাদিগকে নাকি দ্বিবিধ পাপের ফল ভূগিতে হয়। কালকৃত পাপে আমরা বাধা দিতে পারি না, যদিও ফলভোগ করিতেই হয় । o ইহার উপর, আলস্য ও প্রমাদজনিত পাপ জুটিলে উদ্ধারের আশা থাকে না। - কিন্তু এক বিষয়ে সাবধান হইতে হইবে । সে কালের দেশে বিজ্ঞান-প্রতিষ্ঠ ー、ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘイ এক অসির পরিবর্তে এই যে ইয়ুরোপে শতঘ্ন বাণ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, প্রকৃতির উপর আধিপত্যলাভে আমেরিকার ভোগ-প্রবৃত্তির নাস্তিক্যের প্ররোচনা বর্জন করিয়া শ্রেয়ের হইবে। আমাদের প্রাচীনের এ কথা বিলক্ষণ বুঝিয়াছিলেন। তাই তাহার বিজ্ঞান ও দর্শন এক করিয়াছিলেন। তাহারা জানিতেন প্রকৃতির জ্ঞান বা বিজ্ঞান খণ্ড জ্ঞান। সে জ্ঞান দ্বারা আমাদের সত্তা ও জীবনের পারা যায় না। ইদানী দর্শন হইতে বিজ্ঞান পৃথক করা । হইয়াছে। প্রকৃতির মন্দিরে প্রবেশ-পথে আধুনিক বিজ্ঞান | নিম্ন সোপান ইয়ছে ; দর্শন উচ্চে রহিয়াছে। কিন্তু উভয়ে । বিচ্ছিন্ন হওয়াতে তত্ত্বজ্ঞানের অভাবে, বিজ্ঞান ও দর্শনের । বিজ্ঞান ও ধৰ্ম্মের কৃত্রিম কলহ স্বষ্টি হইয়াছে। আজিকালির । অধিকাংশ বিজ্ঞান-সেবী ধূল-কাদা লইয়া খেলা করিয়া । কদাচিৎ কেহ খেলাঘর ছাড়িয়া । দূরদর্শী হন, প্রকৃতি-বিকৃতি ছাড়িয়া মূল-প্রকৃতি দর্শন । করেন ; ভাগ্যবান কেহ বা ইহারও উদ্ধে প্রকৃতি-পুরুষের । যুগলমিলন প্রত্যক্ষ করেন। ইহারা ধন্য, ইহাদের সাধন ধন্য। বিজ্ঞানকে ধূলাখেলা সার মনে করিলে, প্রকৃতির লীলা-নৰ্ত্তনে আনন্দ পাইলে ও তাহাতে বিমোহিত হইলে, জীবন কাটাইতেছেন। আস্ফালনে দিগন্ত কম্পিত । হইতেছে, তাহা হইতে বিরত হইতে হইবে। যে विना বা বিজ্ঞান বিনয় না দেয়, যাহাতে “জ্ঞান" না জন্মায়, সে বিদ্যা বা বিজ্ঞান পয়োমুখ বিযবুন্তু জানিতে হইবে। এদেশ চিরদিন মোক্ষাভিলাষী। এদেশ নির্বাণের দেশ, বৈষ্ণবের । দেশ । এদেশে শক্তিও বৈষ্ণবী মূৰ্ত্তিতে পূজিত হন। o - o > 8 > - SumitaBot (আলাপ) ০৮:০০, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি) --~~ - ইযুরোপ ও । - - পথে চলিতে । - লক্ষ্য বুঝিতে । | - - - আমাদের দেশের বিজ্ঞান ভুলিলে বিজ্ঞানচর্চা সার্থক । হইবে না। • - শ্ৰীযোগেশচন্দ্র রায় । । - - - ". - - - • বঙ্গীয় সাহিত্য-সম্মিলনের বিজ্ঞানশাখার সভাপতি শ্ৰীযুক্ত রায় সাহেব অধ্যাপক যোগেশচন্দ্র রায়, এম, এ, এফ আর এ এস, এফ আর এম এস, বিদ্যানিধি মহাশয়ের অভিভাষণ । --- - - -- -