পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రీe প্রবাসী—বৈশাখ, తిరి [ ২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড কানাই ও বলাইএর মধ্যে ইতর-বিশেষ হইল দেখিয়া তাহার নেত্র-ছুটি আর্দ্র হইয়া উঠিল। তারিণী কাৰ্য্যতঃ যাহা করিল, তাহা মুখে প্রকাশ করিয়া বলিতেও মহেশ্বরীর লজ্জা হইতে লাগিল। তাহার ব্যথিত চক্ষু-দুটি ওই পাষাণভিত্তিকে অবলম্বন করিয়া কেবল ইহাই ভিক্ষা করিতে লাগিল যে, “তুমি আমার কানাই ও বলাইয়ের মধ্যে আমন ইতর-বিশেষ জানিতে দিও না ।” বলাইও কেমন কুষ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছিল। সে কহিয়, "হাড়িতে এত রসগোল্লা রয়েছে,—অজা মশাই, কানাষ্ট-দাকে আর কিছু দাও না ?” মহেশ্বরী কহিলেন, “সারারাত থাকবে ত । ওরা যে যা খেতে পারে দাও, মামা ! ঝিাঁকড়গাছায় না হয় বনগীয় আবার কিন্‌লেই হবে।” তারিণী কহিল,"ণ্ডর ধাতে সইবে কি না, তাই দিইনি। fচড়ে-চাপাটি হ’লে বেশী বেশী খেতে পাবৃত্ত—দিতুমও ” অম্লান কুঙ্কমের উপর তারিণীর এই নিয়ত নিষ্ঠুর পদক্ষেপে মহেশ্বরী শঙ্কিত হুইয়া উঠিতেছিলেন। কানাইলালের দৈন্য ফুটাইয়া দেখাইবার জন্ত এমন সংশ্ৰব লইয়া তাহাকে তীর্থভ্রমণে বাহির হইতে হুইবে জানিতে পারিলে তিনি আসিতেন না। হায়! হায় ! যিনি মায়া স্বষ্টি করিয়াছেন, তিনি নিষ্ঠ রতীকে দুষ্প্রাপ্য করেন নাই কেন ? দীনের নয়নাশ্র মুছাইতে মানুষের • প্রাণের শুভজাগরণ কেন এমন নিদ্রিত হইয়া থাকে ? কানাইলালের ভাগে সেই চারিটা রসগোল্লাই বরাদ্ধ স্থির রাখিয়া তারিণীচরণ যখন আপনার ক্ষুন্নিবৃত্তি করিবার জন্য মনোনিবেশ করিল, তখন মহেশ্বরী স্বয়ং উঠিয়া যাইয়৷ হাড়ি হইতে রসগোল্লা বাহির করিয়া কানাই ও বলাইকে আরও কিছু-কিছু দিলেন । তারিণী কটমট দৃষ্টিতে কানাইলালকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। মহেশ্বরী জিজ্ঞাসা করিলেন, "মামা ! আর চাই ?” তারিণী কহিল, “জ্ঞা দাও । বনগায়ে যখন কেনা হবে, তখন ভাবনা কি ? হাড়িতে গোটা-চারেক রাখলেই হবে। পথে-ঘাটে ছেলে-পিলে নিয়ে চলা—ভাড়ারটা সঞ্চিত রাখাই যুক্তি।” মহেশ্বরী আরও গণ্ডা-সাতেক তারিণীচরণের থালায় দিলেন। খাওয়া শেষ হইলে তারিণীচরণ নিদ্রার আয়োজন করিল। মহেশ্বরী ছেলেদেরও শুইতে বলিলেন। তাহারা বসিয়া-বসিয়া গল্প করিতে লাগিল এবং গাড়ীর দ্বারপথে চারিদিকে চাহিয়া-চাহিয়া দেখিতে লাগিল । বনগ্রাম পার না হওয়া পৰ্য্যস্ত তারিণীর নিদ্র হইল না । এক-একটা ষ্টেশনে গাড়ী ধরে, আর সে চমকিয়াচম্কিয় উঠে। বলে, “বনগীয় এল নাকি ?” বলাই একবার বিরক্ত হইয়া বলিয়া উঠিল, “আজ মশাই, আপনি স্বচ্ছদে নিদ্রা যান। বনগী পেরিয়ে গেলেও ক্ষতি হবে না। খাবারের জায়গাতেই ত যাচ্ছেন। ভীমনাগেং, সন্দেশ-নবীন ময়রার রসগোল্লা---এসব শোমেনি ? বনগার চেয়ে কলকাতায় ভালো ভালো খাবার পাবেন।” তারিণী কহিল, “আর লোভ দেখাস্নে! মা কি ততটা সময় কলকাতায় দাড়াবেন ? আমার জন্যে কি ভাবি ? তোদের যে ক্ষিধে পেলেই দিতে হবে । তা পাওয়া যাকু—আর নাই যাকু ।” বলাই কানাইলালের গা টিপিয়া হাসিল । যাহা হউক বনগ্রামের কিছু বাচ-গোল্লা ভাণ্ডার-জাত হইলে তারিণীচরণ নিশ্চিন্তমনে নিদ্রাদেবীর সেবায় নিযুক্ত হইল! ছেলেরাও গল্প করিতে-করিতে ঘুমাইয়া পড়িল । কেবল মহেশ্বরীর ঘুম হইল না। তাহার এই প্রবাস-যাত্রার পথে কানাইলালের প্রতি তারিণীচরণের হিংস্র চক্ষুন্থটি যে কি উপায়ে শোধন করিয়া লইবেন তিনি তাহাই ভাবিতে লাগিলেন । (क्लभत्र:)