পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●ፃ © থেকে ঝাপিয়ে তোমার আরণীর উপর পড়ল ত আমি কি করব ?” “কি আর করবে, আদরের জ্যাঠার কোলে উঠে নালিশ করে গিয়ে আমার নামে,” বলিয়া রাগে গরু-গর করিতে-করিতে লবঙ্গ নিজের কাজে চলিয়া গেল । কাতু খেলার সার্থীর সন্ধানে বাহির হইল, বৃন্দাবন একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া আবার ছকায় মনোনিবেশ করিল। বৃন্দাবনের ছোটো ভাই নিবারণ ও তাহার স্ত্রী বছরছয় আগে কলেরায় প্রায় একই দিনে দেহত্যাগ করে । তাহাদের চার-বছরের মেয়ে কাতায়নী জ্যাঠার কাছে তাহার পর হইতে মানুষ হইতেছে । একটি বুড়ী ঝির সাহায্যে কিছু কাল কাজ চালানোর পর সেও যখন হঠাৎ ধরাধাম হইতে বিদায় গ্রহণ করিল তখন পাড়া-প্রতিবাসীর পরামর্শে এবং নিজেও উপায়ান্তর না দেখিয়া, বৃন্দাবন পুনৰ্ব্বার বিবাহ করিতে রাজি হইল। পাশের গায়ের পরাণ মণ্ডলের মেয়ে বয়সেও বড় এবং দেখিতেশুনিতেও মন্দ নয় বলিয়া শোনা গেল, সুতরাং দিন-ক্ষণ দেখিয় তাহাকেই বিবাহ করিয়া আনিয়া বৃন্দাবন গুহে অধিষ্ঠিত করিল। কিন্তু কাতুকে মাতুম্ব করিবার জন্য যাহাকে বিশেষ করিয়া আনা হইল, দেখা গেল বিশেষ করিয়া কাতুর প্রতিই তাহার বিরাগ সৰ্ব্বাপেক্ষ বেশী । একে ত বাপের বাড়ীতে কিছু আদরে পালিত বলিয়া লবঙ্গের মেজাজ একটু অসহিষ্ণু এবং আরামপ্রিয় ছিল, তাহার উপর ষে দেওবুঝিটির ভার তাহার হাতে দেওয়া হইল, সেটিও অলিমাত্রায় আদর পাইয়া একেবারে শাসনের বাহিরে গিয়া পড়িয়াছিল। কাজেক্ট জ্যাঠাষ্ট এবং দেওর-ঝির কলহ ও মারামারির চোটে শীঘ্রই বৃন্দাবনের বাড়ী মুখর হইয়া উঠিল। বৃন্দাবন-বেচারা হিতে বিপরীত দেপিয়া হকার শরণ লইল, তাহাও যখন আর সাত্বনা দিতে অক্ষম হইল, তখন বাড়ী ছাড়িয়া বাহির হইয়া পড়িতে লাগিল কাজে এবং অকাজে । নববিবাহিতা পত্নীর সঙ্গিত প্রেমালাপের সুযোগমাত্র তাহার কপালে ঘটিয়া উঠিল না। এমন-একটা হাড়জালানী পাজী মেয়ে প্রবাসী-আষাঢ়, ১৩৩২ [ २८* छान, >ञ थs তাহার ঘাড়ে তুলিয়া দেওয়ার জন্য পত্নীটিও তাহার প্রতি খুব যে খুলি হইয়া রহিল, তাহাও নয়। হকায় কয়েকটান দিতে না দিতেই বাইরের দরজায় ধাক্কা দিয়া কে উচুগলায় হাক দিল, “বৃন্দাবন আছ হে ?” বৃন্দাবন ত্রস্ত হইয়। ফিস্-ফিসূ করিয়া ডাকিল, “কাতু, কাতু!” কাতু আসিয়া চীৎকার করিয়া বলিল “কি বল্‌ছ ?” “চুপ কর, অত চেচাসনে, বাইরে নবীন-খুড়ো এসেছে, ব’লে আয় জ্যাঠামশায় বাড়ী নেই।” - কাতু বাহির হইয় গেল, এবং উচ্চকুণ্ঠে আগন্তুককে খবর দিল “জ্যাঠামশায় বাড়ীতে নেই গে৷ ” নবীন আসিয়াছিল স্বদের টাকার খোজে, সুতরাং সহজে হাল না ছাড়িয়া সে বলিল, “বাড়ী নেই কি ? আমি এইমাত্তর যে তা’কে বাড়ী আসতে দেখলাম । কোথা গেল সে ?” “অত-শত জানিনে বাপু, আমাকে বলতে বলেছে বাড়ী নেই,তাই বললাম,” বলিয়া কাতু উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড়িয়া পলায়ন করিল ; নবীন আরো কয়েকবার বুন্দাবনের নাম ধরিয়া বৃথা হাক-ডাক করিয়া আপন-মনে গজ-গজ করিতে-করিতে প্রস্থান করিল। সে যে চলিয়া গিয়াছে, এ-বিষয়ে যখন আর কোনো সন্দেহ রঙ্গিল না,তখন বৃন্দাবন আস্তে-আস্তে আসিয়া সদর দরজার কাছে দাড়াইল । লবঙ্গ চেচাইয়। উঠিল “এখুনি বেরোও যে ! গিলতে-কুট তে হবে না,বেড়িয়ে বেড়ালেই চলবে ?” “আর গেলা-কোটা ! তোদের জালার ঘরেও আমায় দুদণ্ড বসবার জো নেই । বাইরে গেলে নব নে পথেঘাটে অপমান করে, আর ঘরে এলে তোরা জালাস, না মরূলে, আমার হাড় আর জুড়বে না।” স্বামীর অবস্থা দেখিয়া লবঙ্গ একটু নরম হইয়া গেল । অপেক্ষাকৃত শান্তকণ্ঠে বলিল “ত হ’লে এখুনি বেরুচ্ছ কেন ? নবীন-খুড়ো এখনও হয়ত রাস্তার মাঝে দাড়িয়ে एषi८छ्-** - “না গিয়ে আর করি কি ? মেয়ে দেখতে-দেখতে মস্ত হয়ে উঠল, এর পর বিয়ের চেষ্টা না করলে শেষে কি একঘরে হয়ে থাকৃতে বলিস্ ?”