পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ব্যায়ামচৰ্চণর সীমানা RSNరి ৭,০০০,০০০ নিপুণ ব্যায়ামী সরকারী তালিকাভুক্ত । নব্য ইতালী সংস্কার করবার সময়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করবার মত সারা দেশে ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠা করেছিল । সুস্থ শ্রমিক ধনীর বা কলকারখানার মালিকদের অন্যতম প্রধান বিত্ত। ফোর্ড-প্রমুখ ধনীদের প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যকর ও চিত্তবিনোদনকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা আছে } ૨ আমাদের দেশে জনস্বাস্থ্য গড়ে তোলা বর্তমান সময়ে সব চেয়ে বড় সামাজিক বা জাতীয় প্রয়োজন । যে-সব আস্তরায় বা যে-সকল অসুবিধা আছে এ স্থলে তার বিবৃতির কোন প্রয়োজন নেই, কারণ শিক্ষিত ব্যক্তি মাত্রেই সে-সব কথ! জালে• } আমাদের যুবক-সম্প্রদায়ের এক অংশের স্বাস্থ্য সঞ্চয়ু করবার উপযুক্ত মানসিক ভাব গ’ড়ে উঠেছে, এই ভাবটি নতুন । কিন্তু বুহত্তর অংশটিতে এখনও পুৰ্ব্বের উদাসীনতা আছে । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ও আজকাল কিছু উদ্যোগ দেখা যায়। আন্দোলনের যতটুকু বেসরকারী তাতে কিছু উৎকর্যের চিহ্ন আছে, যতটুকু সরকারী তাতে উৎকর্ষ নেই। প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধভির যে-সব সমালোচনা হয়ে থাকে তার মধ্যে এইটাই প্রধান যে আমাদের শিক্ষার ধারার সঙ্গে জীবনের যোগ নেই, ব্যায়ামশিক্ষার বিষয়েও ঠিক সেই কথাটাই বলা চলে। মানসিক শিক্ষা শারীর শিক্ষার চেয়ে বড় জিনিষ, সেটার যেকালে আজকাল কোন মূল্য নেই, শারীর শিক্ষার মূল্য কি হতে পারে । এই কারণে দেশের চিন্তাশীল যুবকদের এতে মন নেই। আমাদের সমাজের কাছে স্বম্ব দেহের কোন মূল্য নেই, রাষ্ট্র স্বস্বদেহসম্পন্ন যুবকদের দেশরক্ষা করার কাজে লাগায় না। শ্রমিকেরা মুস্থ হ'লে কাজে পটুতা বাড়তে পারে বটে কিন্তু তাতে তাদের অর্থ বাড়ে না, কষ্টও ঘোচে না । কাজেই, স্বাস্থ্যসম্পন্ন হ’লে আপাততঃ মাত্র দুটো সুবিধা হতে পারে ; এক, জীবনযুদ্ধে যোগ দেবার জন্য অপেক্ষাকৃত বেশী বল পুজি করা, এবং দ্বিতীয়, জাতির স্বাস্থ্যের মাপকাঠিটাকে আরও একটু ভদ্র করা। এ ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। উদ্ভূত্ত শক্তি আমাদের কাজে লাগবার কথা নয়, কারণ আমাদের সঞ্চারক্ষেত্র অপরিসর, এবং কোথাও কোথাও সেই শক্তি বিঘ্ন ঘটিয়ে থাকে। একটা বস্তু থাকলেই তাকে ব্যবহার করতে হবে, দেশে লোকের স্বাস্থ্য গড়ে উঠলে জাতিকে সেট কাজে লাগাতে হবে তার পূর্ণতম বিকাশের জন্য, তা না হ’লে সেটার অপচয় হয়ে লোপ পাবার সম্ভাবনা থাকে। বাংলা দেশের ইতিহাস বাঙালীর স্বাস্থ্যের বলাতে এই সাক্ষ্যই দেয় । জীবন চার দিক দিয়ে খৰ্ব্ব হ’লে তার প্রথম প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্যের ওপর । ধৰ্ম্মের গোড়ামি, শিক্ষার গোড়ামি এবং ধারানিবদ্ধ ( organised ) আমোদ-প্রমোদ আমাদের স্বাস্থ্যহীনতার মূলগত কারণ। পারিপাশ্বিক হয়ত বদলানে যায়, বাহিরের নিবাৰ্য্য ধা-কিছু মন দিলে তা নিবারণ করা যায়, কিন্তু অন্তরের দারিদ্র্য ও রোগ নিবারণ করা যায় না । সভ্যতার এই যুগে স্বথ ও আনন্দ কোথাও স্বতঃস্ফৰ্ত্ত নয়, আমাদের ত নয়ই । মন আমাদের একস্তি আবশ্যক যা তা আহরণ করাতেই ব্যাপৃত ও ক্লাস্ত, অবাস্তর যা, তা সংগ্রহ করবার প্রেরণ আসবে কোথা থেকে ? U3 নিজের দেহ গড় অত্যন্ত সোজা, অপরের দেহ গড়াও অপেক্ষাকৃত সহজ যদি গোটা কয়েক বস্তুর সমন্বয় ক’রে নেবার ক্ষমতা থাকে। আশাবাদী মানুষের স্বাস্থ্য ও বল সহজেই গ’ড়ে ওঠে, নিরাশাবাদীদের হাজার চেষ্টাভেও হয় না । মনের গড়ন দেহের গড়নের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে । কিন্তু দেহগঠন করাই কি সামাজিক মানবের জীবনের শ্ৰেষ্ঠতম কথা ? দেশের চিন্তাশীল ব্যক্তিরা শুধু এই কথাটাই জানেন যে যে-কোন উপায়েই হোক জনস্বাস্থ্য গড়ে তোলা দরকার, কিন্তু স্বাস্থ্যের এই লক্ষ্যের সীমানা কোথায়, তার দোষই বা কি এ কথা তাদের জানা নেই। আমি সেইগুলি নির্ণয় করব । আমার বিশ্বাস এই সীমানা নির্দেশ করার প্রয়োজন আছে ; কারণ বাংলা দেশের ব্যায়ামান্দোলনের এখনও শৈশব অতিক্রাস্ত হয় নি, বিবেচক ব্যক্তিরা সাবধান হতে পারবেন। ইউরোপের ধারা ব্যাপক ব্যায়ামচচ্চার বিরুদ্ধতা করেন