পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sలది প্রবণসী $383 আমাদের সঙ্গে। সেখানে এটা-সেটা ক'রে কত ভদ্ধর হুরু করিয়া দিলেন। আর বিলম্ব হইলে হয়ত গাড়ী ধরা লোকের বিধবা দিন চালায়। কাশীর তুল্য কি আর স্থান যাইবে না। আছে ?” এদিকে গেীর কাল্লা স্বরু করিয়া দিয়াছে—কিছুতেই কথা শুনিয়া নন্দ তাহার জ্যেঠামশাই ও জ্যেঠাইমাকে চাপিয়া ধরিল—তাহাকে কাশী লইয়া যাইতেই হইবে । নন্দের কাশী যাওয়া ঠিকৃ হইয়া গিয়াছে। এবার কিন্তু চৈতন্য তাহাকে নিবৃত্ত করিতে পারে নাই । সেদিন নন্দের বিদায়ের দিন । চৈতন্য আজ আর দোকানে যায় নাই—সারাটা দিন নিৰ্ব্বাক, নিস্পন্দ হইয়া বসিয়া আছে । তাহার কাজকর্মের সকল উৎসাহ যেন আজ নিবিয়া গিয়াছে । নন্দ প্রস্তুত হইয়া নৃত্যকালীকে ডাকিয়া বলিল, “একটু বেরোও বউ, যাওয়ার সময় একটা প্রণাম ক’রে যাই ।” কিন্তু নৃত্যকালীর ঘর হইতে বাহির হইবার কোন লক্ষণ দেখা গেল নী । কোথা হইতে গৌর ছুটিয়া আসিয়া নন্দকে জড়াইয়া ধরিল। প্রশ্ন করিল, “তুই কোথায় যাবি ছোটমা ?” নন্দ এই ভয়ই করিতেছিল। তাহাকে কোলে লইয়া চুমু খাইয়া বলিল, “কোথাও যাব না বাবা- তুমি যাও থেলা করগে।” গৌর ভুক্তিল না—বলিল, “না ছোটমা আমি তোমার সঙ্গে যাব।” গাড়ীর সময় হইয়া আসিল-জোঠামশাই ডাকাডাকি কোল হইতে নামিবে না। হঠাৎ ঘর হইতে নৃতাকালী বাহির হইয়া, নন্দের কোল হইতে গৌরকে ছিনাইয়ু লইয়া টানিতে টানিতে ঘরে গিয়া ঢুকিল । চৈতন্য বাহিরের ঘরের দাওয়ায় গুম্ হইয় বসিয়া ছিল। নন্দ কাছে আসিয়া পায়ের ধূলা লইয়া বলিল, “চললাম দাদা— মাঝে মাঝে খবর নিও। আমার গৌরকে দেখে৷ ” বলিয়৷ কাদিম ফেলিল। , কিন্তু চৈতন্য একটা কথাও বলিল না। সেই যে কোন সময়ে ঘাড় ষ্টেট করিয়া বসিয়া ছিল--তেমনি ঠায় বসিয়াই রঙ্গিল । ঘরের ভিতরে নৃত্যকালা তত ক্ষণ গেীরকে ঠেঙাইতে স্বরু করিয়া দিয়াছে । গৌরের চীৎকারে কান পাত দায়— “ছোটমা গে৮–আমায় মেরে ফেললে গে৷ ” তবু নন্দ এক প, এক পা করিয়া বাড়ীর বাহির হইয়া আসিল । তাহার পা-দুখানিতে কে যেন পাষাণ চাপ দিয়া রাখিয়াছে ! জ্যেঠামশাই বলিলেন, “ষ্টেটে আয়ু নন্দ ।” চোথের জল মুছিয়া নন্দ বলিল, “যাচ্ছি—চলুন ।” পুণ্যাহ শাস্তিনিকেতনে চীন-সোঁধের দ্বারোদঘাটন উপলক্ষ্যে শ্ৰীসুরেন্দ্রনাথ মৈত্র মনে পড়ে দেখেছিছু বৈজ্ঞানিক পুথির পৃষ্ঠায় অপূৰ্ব্ব আলোকচিত্র, আঁকাবাকা প্রয়াণ-সরণী। স্বতঃস্ফূর্ত বিকিরণ-কণিকার চরণ-লিখনী। সে পবনঘন মার্গে ক্ষিপ্র রেগে অণুকণা ধায় বিজলী পরাগরাজি পদাঙ্কন-রেখায় বিতরি । প্রবল আবেগভরে প্রাণস্পন্দ ওঠে যেন জাগি জড়বাম্পে । তেমনি যে হিমাচল জলধি উত্তর’ সিদ্ধার্থের মৈীমন্ত্র যাত্রা করেছিল চীন লাগি । অগমের সেতুবন্ধ কি মহামিলন অভিসারে রচিলেন শ্রমণের অন্তগূঢ় প্রেরণার বশে, লুপ্তপ্রায় চিহ্ন তার এথনো বিকীর্ণ চারি ধারে । সেই মরা গাঙে পুন নূতন প্লাবনধারা পণে, প্রেমের তরণী আসে চীনাংশুক উড়ায়ে গগনে বিশ্বভারতীর ঘাটে আজি এই মঙ্গল-লগনে।