পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ স্বধাও ব্যস্ত হইয়া বলিল, “সত্যি হৈমন্তী, এ তোমার অন্যায়। ওঁর অমন মুন্দর গল, কেন তুমি ওঁকে যা তা বলছ ? আপনাকে আজ গান করতেই হবে দেখুন। আপনি গান না করলে আমরা কিছুতেই ছাড়ব না।” তপনের অনুরোধ নিখিল বিশেষ ধর্তব্যের মধ্যে আনে নাই, কিন্তু স্বধার অনুরোধে সে আনন্দে ও লজ্ঞায় একটু যেন বিব্রত বোধ করিতে লাগিল । এতগুলা কথা একসঙ্গে বলিয়া স্বধাও ঘামিয়া উঠিবার যোগাড়। কিন্তু যখন একটা অন্তরোধের ভার স্বেচ্ছায়ু গ্ৰহণ করিয়াছে, তথম মাঝপথে ত থামিয়া যাওয়া ষায়ু না। নিখিল এক তাড়া চিঠি লষ্টয়া সতরঞ্চির উপর উপুড় হইয় পড়িয়া লাল কালিতে কলম ডুবাইয় মহা উৎসাহে ঠিকানা লিখিতে আরম্ভ করিল, দেখিয় স্বধা আবার বলিল, “ওকি, এখন ত আপনার ঠিকানা লেথার পাল নয়, আপনাকে এখন গান শোনাতে হবে। চিঠির ভাড়াট। আমায়ু দিন দেখি ।” নিখিল স্বধাকে এমন জোরজবরদস্তি করিতে কখনও দেখে নাই, সে কতকটা নিরুপায় হইয়া এবং কতকটা খুশী হইয়াহ কলমটা নামাইয়া রাখিল । বলিল, “আমি ত ভাল গান কিছুই জানি না। কি গাইব বলুন।" স্বধা বলিল, “আপনি ত সত্যেন দত্তর খুব ভক্ত, তার একটা গান করুন না ।” নিখিলের গলাটা ছিল ভালই, কিন্তু তাহার একটা অপবাদ বন্ধুসমাজে ছিল যে, সে কখনও সঙ্গীত-রচয়িতার স্বরের শাসন মানিত না । সকল গানের স্বরই নাকি তাহার স্বরচিত। এই জন্যই তাহার গান বন্ধুবান্ধবদের ঠাট্টার বিষয় ছিল। কিন্তু আজ স্বধাকে নাছোড়বাম্বা দেখিয়া সে গান ধরিন্স, “( স্থায় ) তোমার আমি কেউ নহি গো, সকল তুমি মোর । চাইলে তোমায় পাই যে কাছে নাই ৰে তেমন জোয় । (ওগো ) হৃদয় তবু হাহাকারে ( .কন । কেবল ডাকে চায় তোমারে ( आशाब) श्राकून चैंषि डांभाद्र ८र्षाएख খোজে আঁখির লোর । ( व्याख ) অলখ-বোরা ২তল ( এই ) ভুবন-ভরা পুস্তত। আর সইতে পারি নে অন্ধ-কর। অন্ধকারের অস্তু হেরি নে, ( আমি ) সকাল বেলা কেবল ভাবি কোথাও কিছু নাইক দাবী ( হায় ) বিনি সুতার মালা মোদের ( মাঝে ) নাইরে ৰাধন ডোর ।” স্বধা ও হৈমন্তী এক সঙ্গে বলিয়া উঠিল, “কি চমৎকার গানটা ?” নিখিল বলিল, “কবির চোখের দৃষ্টি যাবার উপক্রম হওয়ার সময় এ গানটা লিখেছেন শুনেছি।” মহেন্দ্র বলিল, “কিন্তু মনে হচ্ছে তুমি যেন, লাজুক হৃদয় যে কথাটি লাঠি কবে, স্বরের ভিতর লুকাইয়া কহ তাঙ্গারে।” মিলি বলিল, “যদি তাই হয়, তাতে আপনার কি ? মানুষকে অকারণে খোচা দিতে আপনার এত ভাল লাগে কেন ?” মহেন্দ্র ও নিখিল এক সঙ্গেই লাল হইয়া উঠিল। মহেন্দ্র তাহার ভিতরেই বলিল, “আপনার এলাকায় খোচাটা একটু লেগেছে বলে বুঝি আপনার এত রাগ ?” তপন বলিল, "ওহে মহেন্দ্র, শুভদিনে মূৰ্ত্তিমান মারদের মত তুমি যত তিক্ত রসের আমদানি করছ কেন বল দেখি ?" মহেন্দ্র বলিল, “আমার দূরদৃষ্ট ! আমি ষ বলি তাই তোমাদের কানে তেতো শোনায় । একজন গণৎকার আমার হাত দেখে বলেছিল যে আমি মানুষের মনোহরণবিদ্যায় খুব পারদর্শী হব । এটা বোধ হয় তারই প্রথম ধাপ ” সকলে হাসিয়া উঠিল। পালিত-গৃহিণী থেরো-বাধানো একটা লাল খাত হাতে করিয়া ঘরে ঢুকিতে ঢুকিতে বলিলেন, "ওরে, আজ যে গমনা-কাপড় আনতে যাবার দিন, তোরা চিঠিপত্রগুলো থানিক সেরে একবার বেরুবি ?” মিলি নাকিমুরে বলিল, “আমি যেতে পারব নাম " মা বলিলেন, “ভোর কি সব তাতে অনাছিটি কাও ! আজকাল ত সবাই যায় বাপু । নিজের জিনিষ নিজে পছন্দ করে নিতে দোষ কি ?”