পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষার্চ মহাষ্ট্রমী

  • B@

মেজবৌ চাপা গলায় বলিল, অতুল ক'নে ? —তিনি ত আজ সকালের মোটরে কলকাতা চলে গেছেন । মেজবোঁ এইবার একটু সামলাইয়া লইল, যাক অতুলকে ত সাক্ষী মানিতে পারিবে না । মেজবে ভৈরবের দুটি হাত ধরিয়া এবার আবদার করিয়া কহিল, এটুটা অনুরোধ রাপতি হবি ভৈরব, চিরকাল আমি কেনা হয়ে থাকৃবে। ভৈরব হাসিয়া বলিল, কি ? মেজবোঁ বলিল, ঠাকুরপো আজ এই মাত্র বাড়ী আইছে । আমি কাল ঠাকুরপে পূজোয় আসপে না শুনে বাড়ী যা’য়ে ঠাট্টা ক'রে বুলিছিলাম—তার জেল হইছে। —তা”তে আর কি হইছে ? --না কিছু হয় নি, ঠাকুরপে আবার জিজ্ঞাসা করতি আসতি পারে কি না ! —ত, আসে আমুক ! –তাই ত কfচ্ছ,—যদি আসে তা’fল তোমার একটা কাজ করতি ইবি । —fক, বলে—ভৈরব মেজবৌয়ের অবস্থা দেখিয়া হাসিয়া ফেলিল । মেজবোঁয়ের বুকটা কঁপিয়া উঠিল, যদি না’ বলে ! তাহার পর জোর করিয়া ভৈরবের হাত ধরিয়া বলিল,— যদি আ'সে জিগগেস করে, দিদি লক্ষ্মী,—বলো—অতুলের কথা, বলে উনার বন্ধু কি না—উনি ঠাট্টা ক'রে কইছিলেন— জেল হইছে—বৌদি তাই সত্যি মনে করে গেছেন । ভৈরব হাসিয়ু বলিল, আচ্ছা। —আচ্ছা না, বল দুগ্গার কিরে । ভৈরব বলিল, দুগ্গার কিরে। মেজবৌ এবার ষ্টাফ ছাড়িয়া বাfচল । দুর্গামগুপে সংস্কাত শুদ্ধবসনা মেয়ের পূজার নৈবেদ্য লইয়া ভিড় করিয়া দাড়াইয়াছে—আজ মহাষ্টমী । মেজবেী গলায় কাপড় দিয়া এক পাশে নত হইয়া প্রার্থনা করিল, মা আজ মহাষ্টমী, যে যা কামনা করে তার সেই বাঞ্ছা পূরণ ক'রো তুমি । ছোটবেী যে জলে ডুবে মরিছে—এতে যেন 8 ـسـ و 8 আমাগারে কোন অমঙ্গল হয় না, মা ! তুমি ত জান সে মরবি বুলে এমন কথা কই নি আমি। প্রার্থনা নিবেদনকালে মেজবে এক মুহূৰ্ত্ত থামিল, তার পর বলিল, আর— আর ছোটবেী যখন আর এ জগতে নেই, তখন ঠাকুরপোর মন শাস্ত করে দাও তুমি, আর—আর মা জগজ্জননী গে—আমার ছোট বোন নীলি যেন আমাগারে ঘরে আসে–এবার যেন ঠাকুরপে তারে বিয়ে করতি আর 'ন' না করে –ভাবাবেশে মেজবোঁয়ের চোখ হইতে দু-ফোট জল মাটিতে গড়াইয়া পড়িল । প্ৰণাম শেষ করিয়া মেজবে যখন বাড়ী রওয়ান হইল, তথন তাহার শরীর কাপিতেছে। এত বড় একটা সঙ্কট হইতে ম। তাঁহাকে রক্ষা করিলেন, সঙ্গে সঙ্গে মনের গোপন কোণে নীলির আগমনী-মুর ধ্বনিত হইতেছিল। সৌভাগ্যের কথা—মুহাসের জন্য এ বাড়ীতে কঁাদিবার কেহ নাই, তাহার পর বেড়া ভাঙিয়া মাটি ধ্বসাইয়া ঘটনার ধে রূপ সে গড়িয়া তুলিয়াছে তাহাতে বংশের একটু কলঙ্ক হইলেও দোষট হইবে মুহাসের—তাহার নহে, দেবরের মনটাও স্বহাসের স্মৃতির উপর বিরূপ হইয় উঠবে। মেজবেীয়ের মনটা যেন বেশ স্বচ্ছন্দ হইয়া উঠিল । কিন্তু বাড়ীর উঠানে পা দিতেই তাহার দুই চোখ কপালে উঠিয় গেল। সে কি স্বপ্ন দেখিতেছে! বাড়ীতে যেন আনন্দের মেলা বসিয়াছে, সত্য ও কুমুদ দক্ষিণের ঘরে বসিয় প্রাণ খুলিয়া গল্প করিয়া চলিয়াছে, স্বামী তাহার পোড়া তামাক ঢালিয়া আবার নূতন করিয়া সাজিতে বসিয়াছেন, মুখখানা তার আনন্দে ভরিয়া গিয়াছে। মেজবোঁকে দেখিয়াই তিনি বলিয়া উঠিলেন, তুমি কি ভয়ডাই দেখাইছিলে, মেজ বৌ! তাই ত বুলি—বেীমা আমার সতীলক্ষ্মী—এমনডা কি ক’রে হবি ?—ম্বরম রাত্তিরে আ'সে বেীমারে নিয়ে গেছে । আচ্ছা দেখ দেখি পাগলীটার কাও !—নিয়ে যাবি ত বলে যাতি হয় ! উত্তরের ঘরের খোলা জানালার মাঝ দিয়া স্বহাসের আঁচল দেখা যাইতেছে । সুরমা তাহার পাশে বসিয়া ফিস ফিস্ করিয়া কি যেন বলিয়া চলিয়াছে। মেজবেীকে আসিতে দেখিয়াই সে ছুটিয়া বাহিরে আসিল—বোঁদি, কি খাওয়াবেন ক’ল ?