পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○b・ হৈমন্তীদের বাড়ীতে কাটায় নাই, আজ তাহাকে থাকিতেই হইবে । হৈমন্তীর একলার ঘরে পুরু গদি-দেওয়া প্রকাও পালঙ্কের উপর পাখা চলিতেছে, সেইখানে দুই বন্ধুতে শুইয়৷ আজিকার রাত্রিট। গল্পে কাটাইয় দিলে কি আননেরই না হয়। কতক্ষণই বা আর রাত আছে । এই কয়ট ঘণ্টা এমনি গল্পেগুজবে কাটিলে মিলিদিদির বিয়েটা চিরকাল মনে থাকিবে । এই বয়সের গল্প সহজে ত ফুরাইতে চাহে না, তাহা পাখীর মত ডান মেলিয়া কত দেশদেশাস্তরে কাল কালাস্তরে ঘুরিবে । স্বধ রাজী হইল সহজেই। হয়ত এ স্বযোগ আর আসিবে না, দুই দিন বাদে হৈমন্তীরও বিবাহ হইয়া ধাহবে, তখন আর এ-বাড়ীর সঙ্গে তাহার কিসের সম্পর্ক থাকিবে ? জীবনের এই দ্বিতীয় পৰ্ব্বটা শেষ হওয়ার সূচনা যেন আজ হাওয়ায় ভাসিতেছে। শিবু এখন মস্ত ছেলে, সে ঘর-সংসারের কাজ মেয়েদের মতই বুঝিয়া-মুঝিয়া করিতে পারে। সুধা তাহাকে সকাল হইতেই বলিয়া রাখিয়াছিল, আজ যদি তাহার বাড়ী ফেরা না হয়, শিবু যেন সব কাজকৰ্ম্ম একটু দেখে । শিবু বলিল, “ওইটুকু কাজের জন্য এত ভাবছ কেন ? তুমি দু-দিনই থাক না, আমি তোমার তেল ঘি চিনি আটা বেশ সামলাতে পারব। ফিরে এসে দেখো এখন সংসার ছারখার হয়ে যায় নি।” তার পর একটু থামিয়া বলিল, “নিখিল-দার কি সব বলাবলি করছে ; ইচ্ছে কর ত মিলিদির সঙ্গে তোমর দু-জনেও লাগিয়ে দিতে পার, তাহলে আর ভাড়ারের চাবি" ফিরে নিতে হবে না।” স্বধা একবার চম্‌কাইয়া উঠিয়া পরক্ষণেই শিবুকে ধমক দিয়া বলিল, “একরত্তি ছেলের বাদরামি করতে হবে না, ধাম * খাওয়-দাওয়ার পর স্বধা ও হৈমন্তী সেহ দক্ষিণের বারানাওয়াল ঘরখানায় শুহঁতে গেল । বাড়ীতে আঞ্জ বাহিরের লোক আরও আছে, কিন্তু হৈমস্ত বেশীর ভাগকে জ্যাঠাইমার ঘরে চালান করিয়াছে। নিতান্ত যাহাদের কুলায় নাই তাহারা বসিবার ঘরে ঢালা বিছানায় স্থান লইয়াছে। ংৈমষ্ঠীর ঘরে শুধু মৃধা থাকিবে । হলুদ-পঞ্চের পর সকলেই নূতন করিয়া সাজসজ্জা করিয়াছিল, স্বধ প্রবণসী Svo88 তেমন ভাল কাপড় আনে নাই বলিয়া হৈমন্তীরই একথান চাপা-রঙের বেনারসী সে তাঁহাকে সখ করিয়া পরাইয়াছিল। এখান তাহার সব চেয়ে প্রিয় কাপড় । আলমার উপর বেনারসীখানা রাখিতে রাখিতে স্বধ বলিল, “কি মুন্দর শাড়ী ভাই এপান, আমার কেবলই ভয় হচ্ছিল, কথন বুঝি ডাল ঝোল কিছু একটা ফেলে বলি । অনভ্যাসের ফোটায় কপাল চড় চড় করে ।” হৈমস্তা তাহার গাল টিপিয়া দিয়া বলিল, “ও, বড় যে মুখে কথা ফুটেছে তোমার । শীগগির অভ্যেস হবে দেখো । দিদির পালা হয়ে গেল, এই বেল ত তোমার পালা ।” মৃধা একথান ভুরে কাপড় পরিয়া খাটের উপর পা ঝুলাহয় বসিয়া বলিল, “আই, কি যে বল তার ঠিক নেই । তুমি থাকতে আমি আগে ? কোন গুণে শুনি ?” হৈমন্তী স্থধার এলে-খোপার কাটাগুলা খুলিয়া চিরুণী দিয়া তাহার চুলের গোছা আঁচড়াহঁতে আঁচড়াইতে বলিল, *গুণ তোমার বোঝবার দরকার নেই । যে তোমায় নিয়ে যাবে সে ভাল ক’রেই বুঝবে কোন গুণে তার ঘর আলে! হবে। সত্যি ভাই, তোমার ধে বর হবে সে যদি একেবারে সাগর-ছেচা মাণিকও হয় তবু আমার মনে হবে না তোমার উপযুক্ত হয়েছে ।" স্বধা বলিল, “এমন একটি অমূল্য রও কোথায় পাওয় যায় শুনি ? তাও ত আবার একটি হ’লে হবে না । তোমারহ কি আর ধেমন-তেমন একটা হ’লে আমি তার হাতে তোমায় দিতে পারব ? তোমার আগে সংসার সাজিয়ে দিয়ে তবে ত আমি নিজের কথা ভাবৰ ! তুমি কি মনে কর, তোমায় একেবারে ভুলে সাগর-ছোচার সঙ্গে সাগরে তলিয়ে যেতে আমি পারব ?” হৈমন্ত স্বধার লম্বা বিমুনীর আগায় নীল রঙের চওড় ফিতা বাধিতে বাধিতে বলিল, “তবে তোমার আর আমার বিয়ে এক দিনে দু-দিকে ছুটে সভা সাজিয়ে হবে, কেমন । তাতে রাজী আছ ত ?” মৃধা বলিল, “আমার রাজী থাকার উপরেই সব নিডং করছে কি না! যা দেখছি, তুমি একলার সভাই শীগগির সাজাবে। সেদিন মহেশ্রদ্বার সঙ্গে তোমার কি একট মনিভজনের পালা হয়ে গেল! কি বল দিখি ! তাকে