পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাঙ্গ বর্ষণয় ٩سواوs “সেটার শেষ ছিল একটা সামান্ত চিঠি । একদিন নয়নতারা আমায় অক্ষন্ধের নামে একটা চিঠি ডাকে ফেলে আসতে দিয়ে হঠাৎ থমকে মুখের দিকে চেয়ে বললে— ই্যা রে, তুই চিঠি খুলে পড়ি নে তো? খবরদার ; আর এই ৭৪ দেওয়া রইল, –বুকে ব্যথা হবে।

  • আমার ধে বুকে একটা ব্যথা ছিলই নয়নতারা সে খবর রাখত না ।

“এর আগে কখনও কারুর চিঠি খুলি নি, কিন্তু সেদিন আমি পোষ্টাপিসের রাস্তাটা একটু ঘুরে বাড়ী এলাম এবং একটা নির্জন জায়গ বেছে নিয়ে চিঠিটা খুললাম।

  • ৭৪ এর দিব্যিটা আমার হাতে হাতে ফলল। সে যে কি বিনিয়ে-বিনিয়ে লেখা চিঠি—কভ ব্যাকুলতা, কত অাদর, কত আশ্বাস, ফিরে আসবার জন্তে কত মাথার দিব্যি ! —এবার নয়নতারা তাকে বুকে করে রাখবে, যে শত্রুতা করেছে তার সমস্ত অত্যাচার নিজের সর্বাজে মেখে নেবে ; অক্ষয় ফিরে আস্বক, —নয়নতারার চোখে ঘুম নেই—কেঁদে কেঁদে অন্ধ হয়েছে—এসে একবার দেখুক অক্ষয়, একবার দেখুক এসে তার অত আদরের নয়ন কি হয়ে গেছে.

"এত চায় সে অক্ষয়কে ?—ক্ষোভে, ঈর্ষায় অসহায়তায় আমার বুকের মধ্যে একটা অসহ যন্ত্রণা ঠেলে উঠতে লাগল। সেদিন ঢ়িল কুড়বার সময় কি ক’রে একটা পুরনো ভাঙা শাবল হাতে উঠেছিল। কি ভেবে সেইটেরই সদ্ব্যবহার করি নি। সেই আপশোষে ছটফট করতে লাগলাম । “বোধ হয় সেদিনকার ঢ়িল ছোড়বার কথা মনে হওয়ার জন্যেই মনে পড়ে গেল যে অক্ষয় সমস্ত কাণ্ডটা ভৌতিক মনে ক’রেই তাড়াতাড়ি পালিয়েছিল । আমার মাখায় একটা স্ববুদ্ধি এসে জুটল। “আমি আস্তে আস্তে উঠে গিয়ে কালি-কলম নিয়ে এলাম এবং আমার লেখার খাতা থেকে খানিকটা কাগজ ছিড়ে খুব জোরে ঢ়িল ছুড়তে পারে এই রকম জবরদস্ত ভূতের হাতের উপযোগী মোটা মোট অক্ষরে, চন্দ্রবিন্দুসংযুক্ত ভূতোচিত শুদ্ধ ভাষায় লিখলাম—খবরদার এবার এলে একেবারে ঘাড় মটকে তোর রক্ত খাব—এবং আমি যে ভূত এটা প্রমাণ দিয়ে ভাল করে বিশ্বাস করাবার জন্তে জুড়ে দিলাম—ষ্ঠামি খামের মধ্যে ঢুকে সব পড়েছি। অামার সঙ্গে চালাকি ? “তোমরা হাসছ ? কিন্তু এর পরেই আমার অবস্থা অতিশয় করুণ হয়ে উঠল, কেন-ন, এ-ভূতের নামধাম পরিচয় বের করতে খুব বেশী রকম বিচক্ষণ রোজার দরকার হ’ল না। তার ভূতপূৰ্ব্ব কীৰ্ত্তিও সব ধরা পড়ে গেল—ভূতপূৰ্ব্বই বল কিংবা অভূতপূৰ্ব্বই বল ।...বৃষ্ট্রিট কি থেমে আসছে ?” GBBD DDD BDD BB DDBB BAAA AAAAA बलिण, “भग्न करइक निनगरब्र ऋन बाबा चावtइ लिक তার কৰ্ম্মস্থানে নিয়ে গেলেন। তার পর আর নানগরীর সঙ্গে দেখা নেই।” তারাপদ বলিল, কিন্তু কি যেন অফুরন্ত অধ্যায়ের কথা বলছিলে ?” শৈলেন বাহিরের ম্ৰিয়মাণ বর্ষার বিলম্বিত মৃদঙ্গ কান পাতিয়া শুনিতেছিল, আত্মসমাহিত ভাবে বলিল, “হ্যা, তবে একটু ভুল হয়েছিল,—অধ্যায় নয়, সর্গ,—জীবনের পাতা একটির পর একটি পূর্ণ ক’রে ভালবাসার করুণ গাখী সর্গের পর সর্গ সৃষ্টি ক’রে চলেছে...” রাধানাথ বলিঙ্গ—“তুমি কবি, হিসাবের গদ্যকে নিশ্চয় এড়িয়ে চল ; তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি তোমার আট বৎসরের সময় নয়নতারার বয়ুস-ঘদি পনর বংসর ছিল তো তোমার এখন পয়ত্রিশ বৎসরে সে বিয়াল্লিশ বৎসর অতিক্রম করে. --” শৈলেন উঠিয়া বসিল, বলিল, “ভুল বলছ তুমি,— নয়নতারার বয়স হয় না। আমার প্রেম তার স্ফুটনোন্মুখ যৌবনকে অমরত্ব দিয়েছে । তার পরের নয়নতারীসে তো আমার জীবনে নেই। আমার নয়নতারা এখনও সেই পুকুরঘাটটিতে সর্থীপরিবৃত হয়ে বসে ; রূপে, রসে, পূর্ণতায় উজ্জল । তার কত দিনের কত কথ, ভঙ্গী, তার আশ্চর্ধ্য চোখের পরমাশ্চৰ্য্য চাউনির থও খণ্ড স্মৃতি আমার জীবনে এক-একটি অর্থগু কাব্যের মধ্যে রূপ ধ'রে উঠেছে । যখন আমি থাকি প্রফুল্প —ত্রিশ বৎসরের দীর্ঘ ব্যবধানের ওপারে দেখি নয়নতারা হাসিতে, কপট গাম্ভীর্ষ্যে কিংবা অকপট কৌতুকপ্রিয়তায় ঝলমল করছে ; তার চিঙ্কণ চুলের নীচে, ঘোরাল গালের প্রাস্তে পারসী মাকড়িটা চঞ্চল হয়ে উঠেছে ;—অামি মূখন থাকি মৌন, বিমর্ষ, তখন বিকেলে নয়নতারার আকাশ ঘিরে বর্ষ নামে—রেলের ধারের ঘরটিতে মেঘের উপর চোখ তুলে নয়নতারা নিৰ্ব্বাক হয়ে চেয়ে থাকে, মেঘবিলুপ্ত সান্ধ্য স্মধ্যের মত কানের পারসী মাকড়ি কেশের মধ্যে ঢাকা,অামার দিকে ফেরান গালটিতে একটা অশ্রুবিন্দু টলমল করছে... “আমি জীবনে আর কাউকেই চাই নি, আমার জীবনের চিত্রপটে নয়নতারাকে অবলুপ্ত করে আর কারুর ছবিই ফুটতে পায় নি। পলর বৎসরের অটুট যৌবনঞ্জতে প্রতিষ্ঠিত করে তারই ওপর নিবন্ধ দৃষ্টি আমি তাকে অতিক্রম ক'রে আমার পদ্ধত্রিশ বৎসরে এসে পড়েছি— স্বধ্য যেমন যৌবনপ্তামলা পৃথিবীকে অতিক্রম করে অপরাঃে হেলে পড়ে। আজকের এই বর্ষায় কি তোমরা কথাটা অবিশ্বাস করতে পারবে ?” তারাপদ বলিল, “আমরা স্বয়ং তোমার বিশ্বাসের জন্তে ভাবিত হয়ে উঠছি—কেন-না, বর্ষাটা গেছে খেমে।”