পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাতেও ভয়ে মরে। বলে ‘জানাজানি হ’য়ে যাবে।' কি যে করব বুঝতে পারছি না। আমার এখানে লুকিয়ে নিয়ে এলে দ্যায়। বলেছে, "কাদের মেয়ে কি বৃত্তান্ত নী ব’লে আপনি ওকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। কিন্তু আমি যদি আনি, তাহলে আমার মেয়েদের অভিভাবকের গোলমাল করবে।” সঞ্জয় বলিল, “আচ্ছ, আমরা আপনাকে একটা ঘর ভাড়া ক'রে দেব। আপনি দিন কতক তাকে নিয়ে সেইখানে থাকৃবেন চলুন।” মাসিম বলিলেন, “আমার মেয়েগুলোকে কার কাছে ফেলে যাব ?” অপূৰ্ব্ব হঠাৎ বলিল, “আচ্ছা, দিনের বেল আপনি থাকৃবেন। রাঞ্জের জন্যে আমি ভাড়া করা নাসের বম্বোযস্ত ক'রে দেব। আপনার বাড়ীর খুব কাছেই ঘর দেখে দিচ্ছি—যাভে আপনার যাওয়া-আসার কোনো অস্ববিধা না হয় ।” শঙ্কর হাসিয়া বলিল, “সঞ্জয়, ত একটা নাস্টিং ব্রাদারহস্ত ও খাড়া কম্বুবার চেষ্টায় আছে ; একটা সিষ্টাৰ্বহুড করতে পারলে আর পয়সা খরচ হয় না।” মাসিম বলিলেন, “আমার মেয়েদের মধ্যে অনেকের কিন্তু সত্যি সত্যি এসব দিকে ঝোক আছে। কিন্তু এসব জায়গায় তাদের আমিও যেতে দিতে পারি না, বাপ মাও দেবে না ।” সঞ্জয় বলিল, “আপনার বাড়ীতেও ত একটি রুগী আছে। সে রুগীর খবর কি ?” মাসিম বলিলেন, “সে বেচারা ত যতদিন সুস্থ ছিল, খেটে খুটে খাচ্ছিল, আমারও অনেক কাজে লাগ ছিল। এখন রোগে পড়েছে, কি ক’রে যে খরচ চলবে জানি না। স্বামীর খোজ ত অনেক ক’রেও পেলাম না। আর পেলেই বা কি ? যে ইচ্ছা ক'রে ফেলে পালিয়েছে তাকে ধ’রে আনলেই কি আর সে মাথায় তুলে নেবে ? তোমরা জাছ—তাই ওর ঔষধ-পথ্যট। জুট্‌ছে।” . স্বাক্স বলিল, “মাসিম, আপনার অনেক গুণ আছে, কিন্তু একটা মন্ত দেব যে, নিজেকে আপনি প্রবাসী-বৈশাখ, ১৩৩৪ ২৭শ ভাগ,১ম খs কোথাও দেখতে পান না। আপনি যদি ওকে ঠাই না দিতেন তা হ’লে ঔষধ-পথ্য আমরা ত শূন্যে ঢালতে পারতুম না। যা দেখছি ওত চিরক্কল্পই হবে এবং আপনারই পোষ্য থাকবে। কিন্তু আপনি চিরকাল কি ক’রে ওকে বইবেন ?” মাসিম বলিলেন, “চিরকাল যদি বাচ তাম, বাবা, তা হ’লে না হয় চেষ্টা করা যেত, কিন্তু ম’রে গেলে কার ঘাড়ে ফেলে যাষ তাই ভাবছি। যেচারীর পৃথিবীতে কোনে আশ্রয় নেই। ওকে নিয়ে কি করুব ভাবতে ভাবতে রাত্রে ঘুম শুদ্ধ ভেঙে যায়। পঞ্চাশ বছর বয়স হ’ল, বাঙালীর মেয়ে আর ক'দিনই বা বঁচিব ? এখন থেকে সব ব্যবস্থা ত ক’রে যাওয়া উচিত। তার উপর চপল আর চঞ্চল! আছে ; লেখাপড়া কাজকৰ্ম্ম অবশু সাধ্যমত শিখিয়েছি, ক’রে খেতে পারবে। কিন্তু বয়স অল্প, মেয়ে হ’য়ে জন্মেছে, একটা যদি নিজের সংসার না গ’ড়ে দিতে পারি, বড় একলা পড়বে বেচারীরা।” অপুৰ্ব্ব বলিল, “একলা থাকাই ত ভাল। পৃথিবীতে বন্ধন যত কম হয়, দুঃখও তত কম হবে । ছেলেবেলায় দুঃখ পেয়েছে ঢের, বড় হ’য়ে একটু সুখভোগ ক’রে নেবে ।” মাসিমা হাসিয়া বলিলেন, “তুমি নিতান্ত ছেলেমাস্থ্য, তাই ওকথা বলতে পার্ছ, অপূৰ্ব্ব । এখনও তোমার বন্ধনের বয়স আসেনি। আর একটু বড় হ'লেই দেখবে স্বেচ্ছায় যাদের জন্য দুঃখ বহন করতে চাও, তারাই তোমার প্রাণের স্বথের কেন্দ্র এবং এই দুঃখ ও মুখ দেষার মানুষ জগতে যদি না থাকে তবে জীবনট একেবারে শূন্ত বোধ হবে।” শঙ্কর বলিল, “তাই বুঝি, মাসিম, বহু কস্তাদায়ের দুঃখ পাবার জন্য এতগুলি বোঝা সংগ্রহ করেছেন। আপনি নিজের আদর্শে সবাইকে বিচার করেন ব'লেই অমন কথা বলছেন। না হ’লে আপনার মত এই ‘পরের বোঝার’ ভিতর থেকেও অন্য লোকে স্থখ সংগ্ৰহ করতে পাবৃত না।” 岐 মাসিম বলিলেন, “ওটা একেবারে ভুল ৰখা।. ষ্ট্রে