পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ) সঙ্গীতে পরিবর্তন సిసిపి খানি ধ্রুপদ স্বরলিপি দ্বারা শিক্ষা করিবার নিমিত্ত গোস্বামী মহাশমের নিকট গিয়াছিলেন। গুরুদেব আমাদিগকেও ভাল ভাল ধ্রুপদগুলি ( অর্থাৎ যেগুলি লয়ে স্বরে ভাল ) গাহিতে বলিলেন। গুরুদেব গানের খাতা বাহির করিয়া দিলেন এবং কৃষ্ণধন-বাবুকে ইচ্ছাকুযায়ী গানগুলি বাছিয়া লইতে বলিলেন। গ্রীষ্মকাল চারিমাস ধরিয়া কৃষ্ণধন-বাৰু ভাল ভাল গানগুলি আমাদিগকে গান করিতে বন্সিলেন এবং নিজে স্বরলিপি করিতে লাগিলেন। মধ্যে মধ্যে তিনি কণ্ঠেও গান করিতেন। তিনি সেতার বাজাইতে পারিতেন বলিয়া যে যে স্থানে স্বরলিপিতে কুলায় না সেখানে কণ্ঠেই দেখিয়া লইতেন। গুরুদেব পূৰ্ব্বেই বলিয়াছিলেন যে, যেখামে মীড়ের কাজ আছে সেখানে গুরু করণ ও কণ্ঠে সাধন ভিন্ন আদায় হওয়া অসম্ভব। কিন্তু কৃষ্ণধন-বাবু 'না-ছোড়-বান্দা' হওয়ায় গুরুদেব তাহাকে ঐ প্রকার অবসর ও সুবিধা দিয়াছিলেন । তথন হাৰ্বমোনিয়ম যন্ত্র বেশী ব্যবহার লোকে করিত না । ক্রমে ক্রমে যেমন যেমন স্বরলিপির প্রচার বৃদ্ধি হইল তেমনি হারমোনিয়ম যন্ত্রের ব্যবহারও বৃদ্ধি হইতে লাগিল। কৃষ্ণধন-বাবু স্বরলিপি করিলেন বটে, কিন্তু গানগুলি কখনো শুনান নাই । তাহার পুস্তকে ধ্রুপদগুলি আছে বটে, কিন্তু কোন গায়ক ঐ পুস্তক দেখিয়া শিক্ষিত হইয়াছে বলিয়া আমার মনে হয় না। ৪০ বৎসর গত হইয়াছে ; গানগুলি পুস্তকেই স্বরলিপি করা রহিয়াছে ; শুধু তাহাই নহে ; এপদ গানগুলিও রাগাস্তর ও ভাষান্তর করিয়া সঙ্গীত বিদ্যাটির মূলে তিনি একপ্রকার কুঠারাঘাত করিয়া গিয়াছেন। যে সমস্ত ধ্রুপদ তিনি স্বরলিপি করিয়া পরে পরিবর্তন করিয়াছেন সে-সবগুলির তালিকা দেওয়া কঠিন ; তবে কতকগুলি সাধারণের জ্ঞাপনার্থে এ স্থানে দিলাম। ১ । “আনন্দী জগবন্দী" ; ইমন কল্যাণ রাগের গান ; গানটি চারি তুকের ( পদের )। কৃষ্ণধন-বাবু স্বরলিপি করিয়াছিলেন। তাহার পুস্তকে সঞ্চারী, আভোগ নাই এবং আস্থায়ী ও অন্তরীতে বোল পরিবর্তিত হইয়াছে। এ গানটি দেশকার রাগেও গাওয়া যায়। গানের ষে স্থান হইতে দেশকার রাগের সম্ভব সে স্থান কৃষ্ণধন-বাবুকে বলিয়া দেওয়া হইয়াছিল, কিন্তু তিনি পুস্তকে এ কথার উল্লেখ করেন নাই । ২ । “ধ ম গ মা গর" ; ইমন কল্যাণের স্বরগ্রাম । ইহার আস্থায়ী, অঙ্গরাতে বোঙ্গ পরিবর্তি স্ত। সঞ্চারীতে তান আছে, কিন্তু পুস্তকে তাহা দেওয়া হয় নাই। অনেকে বলেন ধ্রুপদে তান নাই বা তান চলে না ; আমরা গমক তান শিথিয়ছিলাম এবং দিয়াও থাকি । ৩। “তেরো হি ধ্যান ধরত” ; কল্যাণের গান । ইহার বোল বাণী পরিবর্তিত এবং তানসেন কুত বলিয়া পুস্তকে লেখা হইয়াছে । আমরা গোপাল নায়ক রচিত বলিয়া জানি । ৪ । “তাকত হু তেহারি” ; ইমন কল্যাণের গান । কৃষ্ণধন-বাৰু ভূপালী রাগে কোথা হইতে পাইলেন ? আমরা তাহার সম্মুখে ইমন কল্যাণ রাগেই গান করিয়াছিলাম । ৫ । “আনন্দ ভয়ে মেরে” ; কেদার রাগের গান ; কৃষ্ণধন-বাবু হাম্বির রাগে করিয়াছেন ; বেলিও স্থানে স্থানে পরিবর্তিত। লক্ষ্মীবাবুৎ ( বর্তমানে কাশী নিবাসী ) কেদারাতেই গান করিয়া থাকেন । ৬ । "প্তাম সি ঘনশ্যাম” ; মেঘ রাগের গান এবং কৃষ্ণধন-বাৰু মেঘরাগেই স্বরলিপি করিয়াছিলেন । পুস্তকে গৌড়মল্লার কি করিয়া করিলেন বুঝিতে পারিলাম না। ৭ । “নাদনগর বসায়ো” ; দরবারী টোড়ির গান। এ গানের স্বরলিপি করিবার জন্য কৃষ্ণধন-বাবুকে সেতারের সাহায্য লইতে হইয়াছিল ; ইহাতে মড়ের কাজ অনেক আছে এবং স্বরের ব্যবহার অতিশয় স্বন্দরব্রুপে আছে। তিনি ইহাকে গুর্জরী টোড়ি করিয়াছেন এবং গানেরও বোল পরিবত্তিত করিয়াছেন । ৮ । “বিল্পহরণ বুধ বিনায়ক” ; তিলক কামোদের গান। কৃষ্ণধন-বাৰু ইহাকে কর্ণাট রাগ কেমন করিয়া করিলেন ? এইরূপ অনেক গান আরও আছে যাহার বোল ও স্থর পরিবর্তন করিয়া “রাগের’ নাম ও “গানের সংখ্যা বুদ্ধি করিয়া পুস্তক বোঝাই করিয়াছেন, কিন্তু ধাহার নিকট