পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] ভারতবর্ষের পরাধীনতার স্বরূপ ২২৫ ভারতের নেশা ধরিয়া গেল ধৰ্ম্মবিজয়ে— ; সেই নেশায় ভারতবর্ষ সমগ্র এশিয়া জয় করিয়া তবে ক্ষাস্ত হইয়াছে । নেশা ধরিল কেন ? কারণ, ভারতের সেই রাজষি বিশ্ববিজয়ী সম্রাটু অশোক বলিয়াছেন, “যে চ লধে এতকেন হোতি সবতা বিজয়ে পিতিলসে সে ; লধা সা হোতি পিতি ধৰ্ম্মবিজমুষি ।” অর্থাৎ এই যে বিশ্ববিজয়ের প্রেরণ ভার মূলে রহিয়াছে প্রীতি-রস, আর এই প্রতি লাভ হয় ঐ ধৰ্ম্ম-বিজয়ের দ্বারাই । এই ষে “প্রীতি-রসের” নেশা, এই ষে মৈত্রীলাভের দুর্শিবার কামনা, তাহারই তাড়নায় ভারতবর্ষ বিশ্ব জয়ের জন্য উদগ্রীব হইয়া উঠিল। অfর রাজধি অশোকের অনুপ্রাপনায় ভারতবর্ষ একবার যে প্রীতি রসের স্বাদ পাইল সমগ্র এশিয়া জয় করিয়া তবে তাহার এই স্বাদ-লিপা। চরিতার্থ হইয়াছিল । পূৰ্ব্বেই বলিয়ছি, ভারতবর্ষ কখনও বহির্ভারতে সাম্রাজ্য বিস্তার করিতে প্রয়াস করে নাই ; ভারতবর্ষের সমস্ত ইতিহাস খুজিয়াও এমন একটি দৃষ্টাস্ত পাওয়া যায় না যে, সাম্রাজ্যের তৃষ্ণায় কোনো ভারতীয় নরপতি সৈন্তবাহিনী লইয়। ভারতের বাহিরে দিfথ জয়ে বাহির হইয়াছেন । কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ইহাও দেখিতে পাই যে, ধৰ্ম্মের দ্বারা বিশ্ববিজয়ের আকাজক্ষ। ভারতবর্ষের চিত্তকে কখনই পরিত্যাগ করে নাই ; একটা বিশ্ব বাপ। ধৰ্ম্মসাম্রাজ্য স্থাপনের বৃহৎ কামনা ভারতবর্ষের অস্তরে চিরজাগরূক হইয়া বিদ্যমান ছিল । তাই দেখিতে পাই, যে-সময় শক পহলী কুষণ হুণর দস্থ্যদলের মত পুনঃ পুনঃ আসিয়া ভারতের দ্বারে করাঘাত করিতেছে, ঠিক সেই সময়ই অপর দ্বার দিয়া ভারতের সাধকগণ বিশ্ববি জয়ে বাহির হইতেছেন । যেসময় বৈদেশিক আক্রমপকারীদের অস্ত্রের ব্যঞ্জনায় গৃহপ্রাঙ্গণ মুখরিত হইয়। উঠিয়াছে, ঠিক সেই সময়ই ভারতের ধৰ্ম্মবাণীর উদগীতার ধর্মের বিজয়-কেতন উড়াইয়ু বিশ্বজয়-যাত্রায় অগ্রসর হইয়াছেন । ষে-সময় যুৎস্ব সৈনিকগণের সংগ্রাম-কোলাহলে ভারতের গগন মুখরিত হইয়। উঠিতেছিল, মুম্ষু যোদ্ধার রক্ত-শ্লোভে ভারতের মাটি প্লাবিভ হইতেfছল এবং দারুণ রাষ্ট্রবিপ্লবে দেশে প্রলয়-স্বচনা হইতেছিল, ঠিক সেই সময়ই ما جاكسوية : ভারতবর্ষ এশিয়ার ধৰ্ম্ম ক্ষেত্র বা তীর্থ-ক্ষেত্রে পরিণত হইয়াছিল ; এষং বিদেশগামী ভারতীয় সাধক ও ভারতগামী বৈদেশিক তীর্থযাত্রীদের পাদম্পর্শে বিশ্ব মৈত্রীর পথ প্রশস্ত হইতেছিল। এইরূপে চীন, জাপান, তিব্বত, কোরিয়া, শ্ৰাম-কাম্বোজ, বলী-সুমাত্রা, ববদ্বীপ, ব্ৰহ্মদেশ ও মধ্য এশিয়ায় ভারতের ধৰ্ম্ম, ভারতের সভ্যতা চির প্রতিষ্ঠিত হইয়া গেল । ভারতবর্ষ বিশ্বজগতের সহিত, মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হইয়৷ রহিল । এমন-কি, ষে দুৰ্দ্ধৰ্ষ শত্রুরা ভারতবর্ষকে শুধু অস্ত্রাঘাতই করিয়াছিল, ভারতবর্ষ তাহাদিগকেও ধর্মদানের দ্বারা অাপন করিয়া লইল । কারণ ভারতের সেই ধৰ্ম্মবিজয়ী ঋষি-সম্রাট প্রিয়দশী অশোক ভারতবর্ষকে বলিয়াছিলেন— “নাস্তি এতারিসং টুং যারিশং ধংমদানং* * ধংমসম্বন্ধোবা” অর্থাৎ ধৰ্ম্মদানের ন্যায় দান আর নাই, ধৰ্ম্ম সম্বন্ধের ন্যায় সম্বন্ধ আর নাই । ভারতবর্ষ তাহার শ্রেষ্ঠ সম্রাটের এই মহাবাণী ভুলিতে পারে নাই । তাই শক্রকেও অস্ত্রাঘাতের বিনিময়েও ধৰ্ম্ম দান করাই তাহার সাধনার অঙ্গ এবং বিশ্বের সঙ্গে ধৰ্ম্ম-সম্বন্ধ স্থাপন করাহ ছিল তাহার অাদর্শ । তাই সমগ্র এ শgা একদিন ভারতবর্ষকে পরম আত্মীয় বলিম গ্রহণ করিয়া লইয়াছিল ; সেই মৈত্রীকে সত্য করিয়া তুলিবার জন্তই ভারতবর্ষে আসিয়াছিলেন চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়ান,হিউএন্থসাঙ, ইৎসিঙ ; আর ভারত হইতে গিয়াছিল কাপ্ত পমাতঙ্গ ও ধৰ্ম্ময়ক্ষ, কুমার জীব ও গুণ বৰ্ম্মন, পরমার্থ ও দীপঙ্কর । আর ভারতের ঐ ধৰ্ম্মলানের নিকট পরাভব স্বীকার করিয়া ডারতবর্যেরই সেবায়ু আত্ম-নিয়োগ করিয়াiছল আমাদের বৈদেশিক শত্রু মীনন্দার ও হেলিওডোরাস, কণিষ্ক ও বাসুদেব, উপবদাত ও রুদ্রলামন । এই “ধৰ্ম্মদান” ও “ধৰ্ম্মসম্বন্ধের’ ভিতর দিয়াই ভারতবর্ষ বহু দিন পরাজয়কেও শুয়ে পরিণত কারতে পারিয়াছিল, বিজয়োল্লাসকেও লজি ভ করিয়া দিয়াছিল এবং অধীনতার মধ্যেও কল্যাণকে মানিমুক্ত করিয়া রাধিতে সমর্থ হইয়াছিল । কিন্তু তার পর একদিন আসিল যখন ভারতবর্ণের অন্তরে কলুষ প্রবিষ্ট হইল, ভারতবর্ষ তাহার উচ্চ আদর্শ t