পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७रैरे প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৪ [ २१* छां★, sञ थe দেখিয়া বলিলেন, “ভয় পেয়ে গিয়েছ দেখি মা লক্ষ্মী । কিছু ভাবনা নেই। এ ত আর অসুখ-বিমুখ নয়, সাধারণ জিনিষ, ঘরে ঘরেই হচ্ছে।” ভানুমতীও হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল, “মাঝরাত্রে আপনার ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম, খুব অল্পবিধা হয়েছে নিশ্চয় আপনার ?” লেডী ডাক্তার আর একপাল! আপ্যায়নের হাসি হাসিয়া বলিলেন, “কিসের অসুবিধা মা ? আমাদের কাজই হ’ল এই । বাচ্চারা কি আর আমার টাইম দেখে আসবে, তারা নিজের টাইমেই আসবে। শীতকাল হ’লে একটু অন্ধবিধা হয় বটে, না হ’লে আর কি ? এইত দিন দুই আগে একটা কেস ক’রে এলুম মাঝ রাতে । সে বেটী বড় ভূগিয়েছে। তাকে শেষ অবধি—” তিনি আরো কি বলিতে যাইতেছিলেন, হঠাৎ কি মনে হওয়ায় থামিয়া গেলেন। বসন্তকে তাড়া দিয়া বলিলেন, “নে নে চটু ক’রে সব গোছগাছ করে নে,সঙের মত দাড়িয়ে রইলি কেন ? ভবানীকে জিগগেস কর না কোথায় কি আছে। ঘরথানা একবার ফিনাইল জলে ধুয়ে নিলে হয় ; তা এত রাত্রে কি সুবিধা হবে ?” ভবানী বলিল, “কেন হবে না মা ? যা যা দরকার তুমি বল, এখনি সব করাচ্ছি। বাঘের দুধ দরকার হয় মেয়ের জন্যে তাও এনে দেব . তোমার উপরই ভরসা ম, দেথ আমার বাছার যেন কোন বিপদ-আপদ না ठूख्न !' মিসেস মিক্স বলিলেন, "বিপদ হবে কিসের দুঃখে ? নিজের মুখে নিজের কথা বলতে নেই বাছ, কিন্তু এই পচিশ বছর প্রাকৃটিশ করছি, কখনও একটি কেস বিগড়ামনি আমার হাতে। তবে প্রথমবার একটু টাইম্‌ নিতে পারে এই ধা। তাতে ঘাবড়াবার কি আছে ?” বাকি রাতটুকু দেখিতে দেখিতে কাটিয়া গেল । রঘুয়া খবর লইয়া শোভাবতীর শ্বশুরবাড়ী গেল। ফিরিয়া আসিল একলাই। ভবানী ছুটিয়া আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কি রে মেজদিদি এল না ?” রঘুয়া বলিল, “না বুড়ী মাইজিষ্ট বড় অস্থখ, তাকে ফেলে আসতে পারল না। আবার বিকেলে খবর দিতে বলেছে, জামাইষাবুও আস্যেন বিকালে খবর নিতে ।” “তবে ত কেতাখ হলুম,” বলিয়া ভধানী রাগ করিয়া চলিয়া গেল। দু-মিনিট বাদে ফিরিয়া আসিয়া আবার জিজ্ঞাসা করিল "পিলিমার বাড়ী গিয়েছিলি ?” রঘুয়া জামাইল যে সে গিয়াছিল। মাইজি অল্প পরেই আসিবেন । সমস্ত দিনটা আশায় উৎকণ্ঠায় একরকম কাটিয়া গেল। মহেশষাবু কস্তার মমতায় তাহার ঘর হইতে বেশী দূরে যাইতেও পারিতেছিলেন না, আবার তাহার কাতরানিতে ঘরের কাছে টিকিতেও পারিতেছিলেন না, পাগলের মত কেষল এ-ঘর ওঘর উপর নীচ করিয়া বেড়াইতেছিলেন । ভবানী একলাই দশটা মামুষের কাজ করিতেছিল, এবং সবাইকে বকিয়া ভূত ছাড়াইতেছিল । পিসিমা আসিয়া একবার দেখিয়া গিয়াছেন, শোভাবর্তী আসিতে পারে নাই। মাথার দিব্য দিয়া তাহাকে কখন কি হয় খবর দিতে বলিয়। দিয়াছে। সন্ধ্যাবেল মিসেস মিত্র ও বসন্ত খাইম্বা দাইয়া আসিলেন বাড়ী গিয়া। ভবানীকে চুপিচুপি বলিলেন, “রাতটাও নেবে হয়ত বাছা, এখানেই আমার বিছানা ক’রে দাও।” রাত একটা প্রায় হইবে। আঁতুড় ঘরের স্ত্রীলোক ক’টি ছাড়া সবাই শ্রাস্ত হইয়। ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। সেই সময় ধাত্রী ঝি সকলে ব্যস্ত হইয়া উঠিল। মিসেস মিত্র বলিলেন,"ধাকু, শিগগির হয়ে গেলেই ভাল, কষ্টে মেয়েটার আর জ্ঞান নেই। ভয় পেয়োন বাছ, ভয়ের কিছু নেই।” হঠাৎ শিশুর ক্ষীণ ক্রমান শোনা গেল । ভবানী ঝুকিয়া পড়িয়া দেখিল, তাহার পর মাথায় হাত দিয়া মাটীতে বসিয়া পড়িল । অক্ষুটকণ্ঠে বলিল, “হায় ভগবান শেষে মেয়েই হ’ল।” লেডী ডাক্তার ভবানীর মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন, "ওকি বাছা ! মেয়ে ছেলে কি সস্তান নয় ? সবে জন্ম নিয়েছে, তাকে দেখে ওরকম করতে আছে ? এই বেঁচে থাকু, দেখো মায়ের কত অাদরের ধন হবে । কি