পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] সত্তর বৎসর ২৩ ছিলেন। কলিকাতার আধুনিক শিক্ষার ইতিহাসে ডেভিড, হেয়ারের যে-স্থান শ্ৰীহট্টের ইংরেজী শিক্ষার ইতিহাসে প্রাইজ সাহেবেরও সেই স্থান। শ্রীহট্টের ভূতপূৰ্ব্ব স্কুলডেপুটী ইনস্পেক্টর স্বৰ্গীয় নবকিশোর সেন, উকিল সরকার স্বৰ্গীয় দুলালচন্দ্র দেব, ইহারাই শ্ৰীহট্টের ইংরেজী শিক্ষিতদের প্রথম পথ-প্রদর্শক ছিলেন । নবকিশোর সেন সিনিয়ার স্কলারশিপ পরীক্ষা পাস করিয়া ডেপুটী ইনস্পেক্টর হন। দুলালচন্দ্র দেব মহাশয় ইহার কিছুদিন পরে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইলে, বি এ, ও পরে বি-ল, উপাধি প্রাপ্ত হইয়া শ্রীহট্টে যাইয়া আইন ব্যবসায় আরম্ভ করেন । ইহার দুই জনেই শ্ৰীহট্টের প্রথম ইংরেজী-নবীশদিগের সর্বজনপ্রিয় নেতা ছিলেন । আর ইহারা দুজনেই নিজেদের জীবনের ও চরিত্রের শ্রেষ্ঠতম প্রেরণা প্রাইজ সাহেবের শিক্ষা ও সস্নেহ সহবাস হইতে লাভ করিয়াছিলেন। কলিকাতার শিক্ষিত সমাজে স্বপরিচিত, বাংলার খৃষ্টিয়ান সমাজের অন্ততম অধিনায়ক, হাইকোর্টের উকীল এবং ইণ্ডিয়ান্‌ খৃষ্টিয়ান হেরল্ড কাগজের সম্পাদক, পরোলকগত জয়গোবিন্দ সোম মহাশয় শ্রীহট্টেরই লোক ছিলেন । ইনিও প্রাইজ সাহেবের শিষ্য ছিলেন । কলিকাতায় আসিয়৷ ফ্রি চার্চ কলেজ হইতে একই বৎসরে বি এ ও এম্-এ পাশ করেন। বোধ হয় ডাফ, সাহেবের নিকটে ইনি খৃষ্টধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়াছিলেন । কিন্তু জীবনের প্রথম প্রেরণ ইনি প্রাইজ সাহেবের নিকট হইতেই পাইয়াছিলেন ( . ) আমি যখন সেথঘাট স্কুলে যাইয়া ভৰ্ত্তি হই, প্রাইজ সাহেব তখন বৃদ্ধ হইয়াছেন। স্কুলে আর রীতিমত পড়াইতেন না। তবে উচ্চতম শ্রেণীর ছাত্রের র্তাহার বাড়ীতে যাইয়া তাহার নিকটে ইংরেজী সাহিত্যাদি পড়িতেন ইহা মনে পড়ে। জয়গোবিন্দ সোম মহাশয় একই বৎসরে বি-এ, ও এম-এ পাশ করিয়া, বি-এল, পরীক্ষা দিবার পূৰ্ব্বে, ঐহটে যাইয়। সেখঘাট স্কুলে প্রধান শিক্ষক হয়েন। তবে নিম্নতম শ্রেণীর ছাত্রদের ঙ্গে তাহার কোন সাক্ষাৎ সম্বন্ধ ছিল না। জয়গোবিন্দ-বাবু বশীদিন শ্ৰীহট্টে শিক্ষকতা করেন নাই। বি-এল পরীক্ষা দিবার জন্য অল্পদিন পরেই কলিকাতায় ফিরিয়া আসেন । ইহার স্থানে স্বৰ্গীয় দুর্গাকুমার বন্ধ মহাশয় সেখঘাট স্কুলের প্রধান শিক্ষক হইয়া যান। সেখঘাট স্কুলে আমি কতদিন পড়িয়াছিলাম, মনে নাই। তবে বছরখানেকের বেশী বোধ হয় নহে। এই সময়ে, কি উপলক্ষে ঠিক মনে নাই, সহরের খৃষ্টিয়ান পাস্ত্রীদের সঙ্গে হিন্দু সমাজের শ্রেষ্ঠাদিগের একটা বিরোধ বাধিয়া উঠে। খৃষ্টিয়ান পাদ্রীর হিন্দু ধৰ্ম্মের অপমান করিতেছেন বলিয়া হিন্দু অভিভাবকের তাহাদের বালকদিগকে পাত্রী স্কুল হইতে তুলিয়া লয়েন এবং নিজেদের একটা স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেন । আমিও তখন সেখঘাটের স্কুল ছাড়িয়া এই হিন্দু স্কুলে যাইয়া ভৰ্ত্তি হই। (セ) সেখঘাটের স্কুলের প্রাঙ্গণে একটা ‘স্থধ্যঘড়ি ছিল । স্বর্ষ্যের গতি দিয়া এই ঘড়িতে সময় নিরূপণ হইত, কিন্তু মেঘলা দিনে ইহা সম্ভব হইত না । এইজন্য স্কুল-বাড়ীর ভিতরে একটা "জল-ঘড়ি'ও ছিল। তখনও দেশে কলের ঘড়ি বেশী আমদানি হয় নাই । দামও এত বেশী ছিল যে, লোকে সচরাচর কিনিতে পারিত না । এই জল-ঘড়িতে একটা ইড়ি ও একটা পিতলের বা র্কাসার বাটি ছিল। এই বাটিতে একটা ছোট ছিদ্র ছিল। হাড়িতে জল । পূরিয়া তাহাতে বাটিটা ভাসাইয়া রাখা হইত। বাটির ছিদ্র দিয়া জল উঠিয়া বাটিট। ভরিতে ঠিক এক ঘণ্টা সময় লাগিত। আর বাটি ডুবিয়া গেলেই ঘণ্টা পূর্ণ হইয়াছে বুঝা যাইত। এই হাড়ি ও বাটি স্কুলের লাইব্রেরী ঘরের এক কোণায় থাকিত। বৈকালে ৪টার সময় স্কুল ছুটি হইত। তখন ছোট ছোট ছেলের ছুটি পাইবার জন্য অধীর হইয়া উঠিত এবং মুহুর্ভে মুহূৰ্ত্তে নানা ছল করিয়া ঘড়ির জল ভরিতে কত দেরী আছে দেখিতে যাইত ; আর এদিক ওদিক দুষ্কর্মের সাক্ষী কেহ নাই দেখিলে পেন্‌সিলের ८थेंक लिग्ना घफ़िद्र शृङि बाफ़ाहेझ निङ । जांबूल निशा দিত না, কেননা ভিজা আঙ্গুলই দুষ্কর্থের সাক্ষী থাকিত। আর ছুটির সময় আসিলে স্কুলের চৌকীদারকে ডাকিয়৷ ঘড়ির কাছে দাড় করাইত, যেন ঘড়ি ডুবিবামাত্র ছুটির ঘণ্ট। বাজাইতে পারে।