পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ԳԵ বলিত যে, হাজার শাসনেও তাহাকে বাগ মানান যাইত नी । - এইরূপে সে ম্যাটিক পরীক্ষা দিবার আগেই নিজের ক্রীষ্টিন নাম বদলাইয়া করিল কৃষ্ণ । ফ্রকগুলি নীচের ক্লাশের মেখেদের মধ্যে বিতরণ করিয়া, পকেট মনি’ জমাইর, শাড়ী কিনিয়া পরিগ। সধ করিয়া দিন কতক মাছমাংস শুদ্ধ ছাড়িয়া দিল । মিসেস মিত্র মেয়ের রকম-সকম দেখিয়া তাহাকে খাটি মেম করা সম্বন্ধে বড়ই হতাশ হইয়া পড়িতে লাগিলেন। অবশেষে সে যখন বছর সতেরো বয়সে বলিয়া বপিল, “আমি গীর্জ ফিঙ্গ। যাব না, আমার ভাল লাগে ন,” তখন তিনি একেবারেই হাল ছাড়িয়া দিলেন। ইহার কিছুদিন পরেই কৃষ্ণার এই পালিকা মাতাটি পরলোকে গমন করেন । তাহার পর হইতে জগতে কি একেল সে । নিতান্ত বন্ধুত্বের খাতিরে সে ছুটিতে দিন কাটাইবার একটা স্থান পায় মাত্র, কিন্তু বিশ্বসংসারে তাহার দাবী কোথায় ? কাহাকেও সে জোর করিয়া কি বলিতে পারে, “আমার ভার তোমায় লইতে হইবে, ন৷ লইয়া তুমি যাইবে কোথায় " তাহার জন্মের জন্ত দায়ী র্যাহার, তাহার। ত আজ সকল নালিশের পরপারে। পালনের জন্য দায়ী যিনি তিনিও ইহলোকে নাই, থাকিলেও ত{হার উপর কোনো দাবী চলিত না। সমাজ বা সংসারও তাহাকে এখনও কাহারও সহিত এমন বন্ধনে বঁধে নাই, যাহাকে সে কিছু দিতে পারে বা যাহার কাছে জোর করিয়া কিছু চাহিতে পারে। একেল, একেল, এই মায়ার বন্ধনময় জগতে সে একেবারে বন্ধনহীন । সে কাহারও নয়, তাহারও কেহ নয় । ভাবিতে ভাবিতে, আপনার অজ্ঞাতসারে, কখন তাহার দুই চোখ জলে ভরিয়া উঠিয়াছিল। লীলার ডাকে তাহার চমক ভাঙিল। চোখ মুছিয়া সচেতন হইয়া দেখিল, মৃত্যু জ্যোংস্কার আলো ঘরখানিকে ডরিয়া ফেলিয়াছে । রাস্ত প্রায় জনশূন্ত, অনেক রাত হইয়া থাকিবে। পাশের ঘরে ছোট খোকাকে ঘুম পাড়াইবার চেষ্টা সজোরে এবং সরবে চলিতেছে । --- কৃষ্ণ উঠিয়া পড়িল । ছেলেমেয়েরা এথনি থাইতে বধিবে গৃহিণীকে তখন একটু সাহায্য করা দরকার, তা প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড ন হইলে ছেলে-মেয়ের ভাত খায় যতখানি, মীর খায় তাহার দ্বিগুণ, এবং ঘুমাইতে তাহদের বারোটা বাজিয়া धांभू । "ש পাড়ারই এক ভদ্রলোক সপরিবারে কলিকাতা যাইতেছিলেন। কৃষ্ণরও ছুটী প্রায় ফুরাইয়া আসিয়াছিল, আর সপ্তাহখানিক মাত্র বাকি। সেটুকু এইখানে কাটাইয়া যাইডে পারিলে অবশু সে খুসিই হইত, কারণ কলিকাতায় ফিরিতে বেশী আগ্রহ হইবার তাহার কোনোই কারণ ছিল না। কিন্তু তাহা হইলে আবার , হয়ত স্ববিধ মত সঙ্গী নাও মিলিতে পারে। কাজেই আর সাতট। দিন গিরিধিতে কাটাইবার মায়া ত্যাগ করিয়া লে সকালে উঠিয়াই পথে বাহির হইয় পড়িয়াছিল, র্তাহীদের সহিত যাওয়ার সব ব্যবস্থা ঠিক করিয়া ফেলিতে । তাহার সঙ্গী ছিল লীলা । বেলা সাড়ে সাতটার বেশী হইবে না, কিন্তু এরই মধ্যে রৌদ্রের তেজ বেশ একটুখানি প্রখর হইয়। উঠিয়াছিল। কৃষ্ণর উজ্জল গেীরবর্ণ মুখ থাকিয়া থাকিয় আরক্তিম হইয়া উঠিতেছিল, রেশমী ছাতাতেও তাহার কোনোই সুবিধা হইতেছিল না। লীলা রোদ গরম সব অগ্রাহ করিয়া মনের আনন্দে দৌড়াইয়া চলিয়াছিল, এবং মাঝে মাঝে কৃষ্ণার ডাকে তাহার কাছে ফিরিয়া আসিতেছিল । গিরিধির পথের লাল ধূলা তাহার চঞ্চল চরণাঘাতে উড়িয়া উড়িয়া তাহার মাথার চুল অবধি রাঙা করিয়া তুলিয়াছিল। নিতাস্ত এলোখেলো নিরাড়ম্বর তাবে বাড়ীর বাহির হওয়া কৃষ্ণার কুষ্ঠিতে লেখে নাই। এত সকালেও তাহার চুল বেশ পরিপাটা করিয়া এলো খোপা বাধা। পরণে একটি সবুজ রঙের ভয়েলের রাউজ এবং সবুজ পাড়ের একটি শাড়ী । কঁধে বেশ চওড়া একটি ‘গোল্ড ষ্টোনে'র ব্রেচি, । পায়ে সাদা রেশমী মোজার উপর উচু হীলের সাদা জুতা। পথে যে দুই চারিটি মান্থব তখন চলিতেছিল, প্রত্যেকেই এই রূপসী তরুণীকে বেশ একটু ভাল করিয়া না দেখিয়া গেল না, কারণ তাহার সৌন্দৰ্য্যটী বাঙালী