পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৯৮ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড রাধুনী ব্রাহ্মণ-তনয়টি যে অতুলের মায়ের বা পায়ের ক’ড়ে আঙ্গুলেরও যোগ্য নয়, একথা সে সত্যের খাতিরে স্বীকারই করিল। আর এখানকার পুকুরের মাছের সঙ্গে রাজধানীর বিদেশাগত বরফবিহারী মৎস্তবৃন্দের যে তুলন। হয় না, তাছাও ন মানিয়া উপায় নাই। পরদিন ভোর হইতে-না-হইতেই অতুল বন্ধুকে ক’নে দেখাইবার জোগাড়ে লাগিয়া গেল। সোজাস্থজি বাপের কাছে গিয়া ত আর একথা বলা যায় না। কাজেই একটু বঁাক পথ ধরিতে হইল। সৌভাগ্যক্রমে তাহার দিদি তখন বাপের বাড়ী বাস করিতেছিলেন, সে র্তাহার দরবারে হাজির হইল। দিদি কথার ধরণে বুঝিলেন, ভাইয়ের আবার মতি ফিরিয়াছে, এখন বিবাহটা ঘটিলেও ঘটিয়া যাইতে পারে। একটুখানি হাসিয়া তিনি পিতার সম্মতিটা আদায় করিয়া দিলেন। - क'ेन ८झञ्झंझ नेिन ङेरठ,ानि 5ं निशं लैिरु ट्ट्रेभ्र গেল। গিরীশ ত আর একলা যাইতে পারে না, কাজেই অতুলের এক বৃদ্ধ খুড়া তাহার সঙ্গী হইলেন। বাড়ী হইতে বাহির হইবার আগে গিরীশ অতুলকে জিজ্ঞাসা করিল, “দেখ, মেয়ে হয়ত খুব কুৎসিত নাও হতে পারে। যদি চলনসই গোছের হয়, তুই বিয়ে কবি ?” অতুল বলিল “তাহ’লে না হয়—” কিন্তু তৎক্ষণাৎ স্থর বদলাইয়ু বলিঙ্গ, “না, না, অসম্ভব ? অার এক জায়গায় নিজের কাছে আমি সত্যবদ্ধ, আমি আর কাউকে বিয়ে কবৃতে পারব না ।" গিরীশ অতুলের বৃদ্ধ খুড়ার সহিত বাহির হইয়া পড়িল । ক’নের বাড়ীর কাছাকাছি আলিয়া তাহার বুক ধড়াশ, ধড়াশ করিতে লাগিল। হয়ত বা ক’নের বাড়ীর মেয়ে-মহলে সেও আছে। যথাস্থানে পৌছিবামাত্র সে যে সাদর অভ্যর্থনা পাইল, তাহাতে তাহার মনের ভিতরটা খুসি ন হইয়া পারিল না। বাঙালীর ছেলের ভাগ্যে রাজসমাদর এই একবার মাত্রই আসে, কাজেই সেট পুরোপুরি উপভোগ করিবার জন্ত গিরীশ মনটাকে অন্যদিক হইতে ফিরাষ্টয়া আনিল । মেয়ের পক্ষের কয়েকটি যুবক তাহার সহিত আলাপ করিতে অগ্রসর হইল, সেও শীঘ্রই নানা গল্পে ডুবিয়া গেল। কিন্তু চোখ দুইটা তাহার দরজা জানলার ফঁাকে ফাকে কেবলি কাহার যেন সন্ধান করিয়া ফিরিতে লাগিল । কিন্তু সে কি ধরা দিল ? অনেক হরিণনয়ন ললিননয়ন যে অন্ধিসন্ধি দিয় তাহার উপর দৃষ্টিপাত করিতেছে, তাহ সে বুঝিতেই পারিল, কিন্তু তাহার দৃষ্টি ও কি আছে ইহার মধ্যে ? হঠাৎ গহনার রিনিঝিনি তাহার কানে আসিয়া পৌছিল, ঘরখানি যেন শত সহস্ৰ ফুলের সৌরভে ভরিয়া উঠিল। গিরীশ চকিত হইয়া চাহিয়া দেখিল, ক’নে ঘরের ভিতর আসিয়া পড়িয়াছে। বাহিরের আকাশে তখন গোধূলি ছিল কি না জানা নাই, কিন্তু আমাদের যুবকটির বুকের ভিতর যে গোধূলির বর্ণচ্ছট ঝলমল করিতেছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। সে চিরজীবন এইক্ষণটিকে তাহার জীবনের শ্রেষ্ঠ শুভক্ষণ বলিয়া স্মরণ করিত। তাহার সামনে দাড়াইয়া কে এ ? এ কি রমা ? না ললিতা ? পরণে তার পদ্মরাগ মণির রঙের শাড়ী, গলায় ফুলের, মালা, কপালে চন্দনের অলকাতিলকা। দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হইবামাত্র তাহার মুখখানি ফুল্ল গোলাপের লালিমায় ছাইয়া গেল । গিরীশ একেবারে অভিভূত হইয়া পড়িল। সৌভাগ্যক্রমে তাহার বৃদ্ধ সঙ্গীটিই ক’নেকে পরীক্ষা করার ভার নেওয়াতে সে বাচিয়া গেল। তাহা না হইলে সে কিসের উত্তরে যে কি বলিত তাহার ঠিকানাই নাই। মেয়ের নাম, সে কি পড়ে, ঘরের কাজ জানে কি না, শেলাই করিতে পারে কিনা, ইত্যাদি প্রশ্নের সদুত্তর দিয়া মেয়ে যখন ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল তখন গিরীশ বেন আশমান হইতে মাটিতে নামিয়া আসিল । কনের বাপ বলিলেন, “মেয়ের আমার, আপনাদের আশীৰ্ব্বাদে পাত্রের অভাব নেই, অনেকগুলো সম্বন্ধই এসেছে। একটি ছেলে তার মধ্যে বেশ উপযুক্ত। কিন্তু কথা দিয়ে কথা ভাঙবার মাহব আমি নই। মহেশবাবু যদি কথা রাখেন, আমিও রাখব। অন্ততঃ তার কাছে সোজা জবাব পাবার আগে আর কোথাও মেয়ে পৰম্ভ করছি না।”