পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२२ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রচারের মূলে বিদেশীর স্বার্থও ছিল—এবং এখনও আছে —ইহা কেবলমাত্র অবজ্ঞা-প্রস্থত নহে। কেননা ইয়োরোপীয়ের মুঘলদিগের স্থায় এদেশে বসবাস করিতে আসে নাই, সুতরাং এদেশের সমৃদ্ধ ও সৌন্দর্য্য বিস্তারের জন্য শিল্প ও কলাবিদ্যায় উৎসাহ প্রদানের কারণ রূপ যাহা কিছু স্বার্থ মুঘলfদগের ছিল, তাহা ইহাদের নাই । ইহাদের উদ্দেশু, স্বদেশজাত স্থলভ ও অপকৃষ্ট শিল্প ও পণ্য শ্ৰব্যাদির বিনিময়ে এদেশের স্বভাবজাত ধনসম্পদ আহরণ “প্যারিফ্যাসন অত্যাধুনিক স্বল্পমূল্য ও বহুমূল্য উপকরণের সংমিশ্রণ (Fibule-Odyx, aquamarine and brilliants) করা । ফলে এদেশের শিল্পের অবনতি ইয়োরোপীয়দিগের আমলে অতি দ্রুত হইয়াছে। গহনাশিল্পে যে এই অবনতি চরমে পৌছিয়াছে, তাই। বঙ্গ যাহুল্য। আদিতে অবিমিশ্র হিন্দু গহনাশিল্প কিছু ছিল কিনা এখনো বলা যায় না । আসীরীয় বা গ্ৰীক প্রভাব গহন শিল্পে প্রবেশ করিয়াছিল কি না এবং করিলে কখন ও কতটা প্রবেশ করে, তাহাও বলা কঠিন । কিন্তু ইহা সত্য যে, অজণ্ট হইতে কোনার্ক ভুবনেশ্বরের সময় পৰ্য্যস্ত দীর্ঘ পঞ্চদশ শতাবী বা ততোধিক কাল ধরিয়া ভারতীয় গহনাশিল্পের একটি ধারা চলিয়াছিল যাহার মধ্যে পরিকল্পনা, কারুকার্য্য, গঠন-বিন্যাস, বা শিল্প-কৌশল, সমস্তই এদেশের শিল্পিগণের উদ্ভাবিত । মুঘলদিগের সময় এই শিল্পের পুনরুত্থান হয়, যদিও তখন আর তাহাতে বিশুদ্ধ হিন্দুভাব ছিল না, এবং ইহ সম্ভব যে, আকবর হইতে শাহ জহান পৰ্য্যস্ত মুঘলসম্রাটগণ যেরূপ রূপরসাতুরাগী ছিলেন, পরবর্তী সম্রাটের সেরূপ হইলে এবং ঐ সম্রাটগণের ন্যায় সাম্রাজ্যরক্ষায় ও প্রজাপালনে সক্ষম হইলে, হয়ত ভারতীয় গহন এবং অন্ত কলাশিল্পে নব্য মুঘল ও প্রাচীন হিন্দু এই দুই প্রভাবের মিশ্রণে একটি নূতন ধারা আসিত, যাহার ফলে প্রাচীনই নবজীবন প্রাপ্ত হইয় পুনরায় নিজগুণে জগতে শ্রেষ্ঠ আসন গ্রহণ করিত । বর্তমান সময়ে ভারতীয় গহনাশিল্পের অবস্থা কি ? কবির কথায় তাহার উত্তর— “গতগৌরব, হৃত আসন, নতমস্তক লাঞ্জে” কোন গহনাটি বিশুদ্ধ হিন্দু, কোনটি বিশুদ্ধ অহিন্দু, কোনটি বা উভয়ের মিশ্রণলভূত, তাহার থবর যাহারা এদেশের ললিতকল ও শিল্প সম্বন্ধে উৎসাহী, তাহার পর্য্যস্ত রাখেন না । কোন বাংলা মাসিক পত্রে জনৈক লেখক—যিনি ললিতকলা সম্বন্ধে লিখিয়া থাকেন—কথাপ্রসঙ্গে “শ্রীরাধিকার নাকের নোলক” ইত্যাদি কথা বলিয়াছেন । শ্রীরাধিক। এথনো ঐতিহাসিকের অধিকারে আসেন নাই, তিনি এখনে৷ কবি ও ভক্তের হৃদয়েই বিরাজ করিতেছেন, সুতরাং তাহার বংশানুক্রম ইত্যাদি, নীরস ভূগোল বা জাতিতত্ত্বের নির্দেশের মধ্যে আসে নাই, কিন্তু ইহা বোধ হয় বলা যায়, ষে যদি তিনি স্লেচ্ছ বা অনার্য্যবংশোদ্ভব না ছিলেন, তবে নোলকজাতীয় কোন গহন। তাহার রূপলাবণ্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয় নাই। এখনো আমাদের দেশে বিদেশীর অনুকরণই শ্রেষ্ঠতার পরিচয়, যদিও ক্রমে অতি ধীরে সে মতের পরিবর্তন হইতে আরম্ভ হইয়াছে। কিন্তু জনসাধারণের মত এ