পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৫২ প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৪ [ २१* छोभ, >ञ थ७ এবং তাহার পত্নীর নামে উহার নাম রাজকুমারী কুষ্ঠাশ্রম রাখা হয়। যোগীন্দ্রবাবু যখন মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনচরিত লিখিতেছিলেন, তখন কিছুদিন বৈদ্যনাথে কলেজের ছুটির সময় তাহার বাড়ীতে ছিলাম। তখন উনবিংশ শতাব্দী নব্বইয়ের কোঠায় চলিতেছে । সেই সময় তাহার শ্রমশীলতা, স্বশৃঙ্খল ভাবে কাজ করিবার রীতি, এবং নানা শ্রেণীর লোকের উপকার করিবার প্রবৃত্তি লক্ষ্য করিয়াছিলাম। তখন বৈদ্যনাথে কলিকাতার ও বঙ্গের অন্ত অনেক জায়গার অনেক বাঙালী বাড়ী তৈয়ার করাইতেছিলেন। কেহ কেহ তাহার ভার দিয়াছিলেন বস্থ মহাশয়ের উপর । তিনি প্রত্যেকের হিসাব আলাদা আলাদা করিয়া রাখতেন, এবং রোজকার হিসাব এমন সম্পূর্ণ করিয়া রাখতেন, যে, যে-কোন সময়ে কেহ হিসাব চাহিলে আধপয়সাটির পর্ষ্যস্ত হিসাব ধেইত পারিতেন । মধুসূদনের জীবনচরিতের অনেক উপাদান তখন র্তাহার নিকট দেখিয়াছিলাম। কাহারও জীবনচরিতের জন্ত যত উপাদান সংগৃহীত হয়, সমস্ত প্রকাশিত হয় না ; কারণ পুস্তকের কলেবর একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখিতে হয়, এবং তদ্ভিন্ন এমন অনেক জিনিব থাকতে পারে যাহা স্বত ও জীবিত অনেকের গ্লানিকর। যাহারা উপকরণ দিয়াছিলেন, তাহদের মধ্যে মধুসূদনের বাল্যবন্ধু গেীরদাস বসাক অন্যতম। ইহার বন্ধুপ্রীতিতে বিস্মিত হইয়াছিলাম। ইনি যখন মধুসূদনের সহিত হিন্দুস্কুলের নীচের ক্লাসে একত্র পড়িতেন, তখন হইতে আরম্ভ করিয়া তারিখ অনুসারে পর পর তাড়া বাধা সমুদয় চিঠিপত্র তিনি যোগীন্দ্রবাবুকে দিয়াছিলেন । তাহার মধ্যে লেফাফার কোণছেড়া চীরকুটে ক্লাসে বসিয়া লেখা দুই বন্ধুর ইয়ারকিও ছিল । ইহা হইতে যেমন বসাক মহাশয়ের বন্ধুপ্রীতির ও কৰ্ম্মশৃঙ্খলার প্রমাণ পাওয়া যায়, তেমনি ইহাও বুঝা যায়, যে, মধুসূদনের প্রকৃতিতে এমন কিছু ছিল যাহাতে নানা ভিন্ন প্রকৃতির লোকে তাহার গুণমুগ্ধ অকপট বন্ধু হইয়াছিলেন। রাজেন্দ্রলাল মিত্র, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বস্থ প্রভৃতি খ্যাতনামা ব্যক্তি মধুসূদনের বন্ধু ছিলেন। যোগীন্দ্রবাবু গদ্যে রাণী অহল্যাবাঈর জীবন-চরিত, ' তুকারামের জীবনচরিত এবং কয়েকটি বিদ্যালয়পাঠ্য পুস্তকও লিখিয়াছিলেন। বিদ্যালয়পাঠ্য কবিতার পুস্তকও তিনি কয়েকখানি লিখিয়াছিলেন। পৃথ্বীরাজ, শিবাজী ও মানবগীতা তাহার রচিত বৃহৎ তিনখানি কাব্য । প্রথম দুইখানির একাধিক সংস্করণ হইয়াছে। কবিতার পুস্তক রচনা করিয়া তিনি কবিভূষণ উপাধি লাভ করেন। এই সকল কবিতার বহি ছাড়া "একাদশ অবতার" নামক তাহার একটি ব্যঙ্গ কাব্য আছে। তাহা যৌবনকালে রচিত। তিনি রিপন কলেজে, দেওঘর স্কুলে এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্টগ্রাজুয়েট বিভাগের বাংলার ক্লাসে শিক্ষকতার কার্ষ্য করিয়াছিলেন। এই সকল কাজ ভিন্ন অন্য একদিকেও কৃতী বালয় তিনি পরিচিত হন। কালীকৃষ্ণ ঠাকুর মহাশয়ের পৌত্র প্রফুল্লনাথ ঠাকুরের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হইয়া তিনি কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠ ও স্নেহের সহিত এই কাজ সুচারুরূপে নিৰ্বাহ করেন। পরে প্রফুল্লনাথের বিস্তৃত জমিদারীর তত্ত্বাবধান কাৰ্য্যও তিনি নিপুণতার সহিত করিয়াছিলেন । ধৰ্ম্মবিশ্বাসে তিনি একেশ্বরবাদী ছিলেন। সামাজিক ক্রিয়াকলাপ হিন্দু সামাজিক রীতি অনুসারে করিতেন । স্বদেশপ্রীতি র্তাহার হৃদয়ের ভূষণ ছিল। জ্যোতিভূষণ সেন জ্যোতিভূষণ সেনের নাম বাংলা দেশে অল্প লোকেই জানে। তিনি একজন প্রকৃত অকপট ও উৎসাহী দেশসেবক ছিলেন। তিনি এম এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইবার পর গোখলে-প্রতিষ্ঠিত ভারতভৃত্য সমিতির (The Servant of India Society;) footola Ts; হন। এক বৎসর শিক্ষাধীন থাকিবার পর সমিতি তাহাকে পাক সভ্য করিতে চান। কিন্তু তিনি আরে। দীর্ঘকাল ধরিয়া বিবেচনা করিবার অল্পমতি চান। তাহী র্তাহাকে দেওয়া হয়। চারি বৎসর পরে যখন আবার র্তাহাকে সভ্য করিবার কথা উঠে, তখন তিনি বলেন,