পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

θΨb' প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে হিন্দুর উপর অত্যাচার পঞ্চাবে রঙ্গীলা রম্বল নামক একখানা উৰ্দ্দ, বহি এক জন হিন্দু লিখিয়াছিল। তাহাতে মুসলমাণদিগের ধৰ্ম্ম প্রবর্ত ক মহম্মদের প্রতি বিন্দ্রপাদি ছিল । তাহার লেখক হাইকোর্ট পৰ্য্যস্ত লড়িয়া খালাস পায় । তাহার জন্য মুসলমানের জজকে বরখাস্ত করিবার জন্য বা তাহাকে ইস্তফা দেওয়াইবার জন্য আন্দোলন চালাইয়৷ আসিতেছে। *রসিলা বর্তমান” নামক খবরের কাগজে ঐ পঞ্জাবেই “নরক-যাত্ৰা” নামক এক প্রযুদ্ধ বাহির হয় । তাহাতে নরকে মহম্মদ ও তাহার পত্নীদের যন্ত্রণ প্রভৃতি বর্ণিত আছে । লেখকের শাস্তি হইয়াছে। এই ফুট। জিনিষের কোনটাই আমরা দেখি নাই। জঙ্গদের রায় এবং মুসলমানদের আন্দোলনের বৃত্তাস্ত হইতে যতটুকু জানিয়াছি, তাহা হইতে ঐ দুটাতে লিখিত বিষয়ের কিছু ধারণা জন্মিয়াছে। লেখক দু-জনকে সমগ্র ভারতবর্ষের বা ভারতের কোন অংশের হিন্দুরা এরকম জিনিব লিখিতে বলে নাই। তাহারা হিন্দু-সমাজের বা তাহার কোন অংশের প্রতিনিধি নহে, তৎকর্তৃক অঙ্কুরুদ্ধ হইয়াও লেখে নাই। জজদের রায়ে বা অন্ত কোথাও এরূপ কোন প্রমাণ নাই, যে, তাহদের কাজের জন্য সমগ্র হিন্দুসমাজ বা তাহার কোন অংশ দাপ্পী । হাইকোটের যে জঞ্জ দলীপ সিংহ "রঙ্গীলা রন্থলে’র লেখককে আপলে থালাস দিয়াছেন, তিনি খুষ্টিয়ান। অথচ পঞ্জাবে ও অন্যন্ত্র এরূপ আন্দোলন হইয়া আলিতেছে, যেন হিন্দু সমাজ লেখা ফুটার জন্য এবং ঐ লেখকের খালাস পাওয়ার জন্ত দায়ী। উত্তেজনা-প্রবণ মুসলমানদের মধ্যে এই আন্দোলনের ফল উত্তরপশ্চিম-সীমাস্ত প্রদেশের হিন্দুদের পক্ষে ভীষণ হইয়াছে। তথাকার হিন্দুর আবালবৃদ্ধযনিত সকলে নিগৃহীত হইয়া ধনপ্রাণমানধৰ্ম্ম সবই যাইবার ভয়ে ঘর-বাড়ী সম্পত্তি সব ছাড়িয়া দলে দলে পঞ্চাবে পলাইয়। আসিতেছে। উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের মুসলমানের যে কিরূপ অসভ্য, উত্তেজনাপ্রবণ এবং কাৰ্য্যকারণ সম্বন্ধে বিচারবিহীন, তাহা পরিষ্কার বুঝা যাইতেছে। পঞ্জাবের মুসলমানদিগের কোন কোন প্রকৃত পরিচালক এই সকল বৰ্ব্বর লোকদিগকে ক্ষেপাইয়া অতি দুষ্কৰ্ম্ম করিয়াছে। এই আন্দোলনের প্রকৃত কারণ ষে ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় নহে, অর্থলোভপ্রস্থত, তাহাও বুঝা যাইতেছে। তাহার অনেক প্রমাণের মধ্যে দুটির উল্লেখ করিতেছি । আন্দোলকদের এক দাবা এই, ষে, জজ দলীপ সিংহকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হউক, এবং একজন মুসলমানকে জজ নিযুক্ত করা হউক। দ্বিতীয় প্রমাণ, উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের হিন্দুদের ধনসম্পত্তি লুষ্ঠিত হইতেছে। পরের ধন লুণ্ঠন করা কি ইসলামের উপদেশ ? মুসলমানদের নেতাদিগের মধ্যে র্যাহারা সুশিক্ষিত ও দ্যায়পরায়ণ, র্তাহার। হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন প্রশমিত করিলে স্ববুদ্ধির কাজ হইবে, প্রতিষেশীর উপযুক্ত কাজ হইবে । উত্তরপশ্চিমসীমাস্তে মুসলমানের সংখ্যায় খুব বেশী, এবং গবন্ধ টও হিন্দুদিগকে রক্ষা করিতে তৎপর নহে । স্বতরাং হিন্দুদের উপর অত্যাচার করা সহজ । কিন্তু ধীরভাবে ভাবিয়া দেখিতে হইবে, এরূপ অত্যাচার দ্বারা লাভ কি হইবে । সমগ্র মুসলমান সমাজকে এই অভ্যাচারের জন্য আমরা দায়ী মনে করি না বলিয়াই ধীর চিস্তার প্রয়োজনের কথা লিখিতেছি । উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ হইতে যদি সমুদয় হিন্দু বিতাড়িত হয়, তাহা হইলেও তথাকার মুসলমানের লাভবান হইবে না। অঙ্ক জায়গার মুসলমানেরাও লাভবান হইবে না। ভারতবর্ষে হিন্দুর সংখ্য। এত বেশী, যে,তাহাদিগকে নিৰ্ম্ম ল কর যাইবে না। যদি উত্তরপশ্চিম সীমাস্তে হিন্দুদের বর্তমান সম্পত্তি লুষ্ঠিত হয়, তাহা হইলেও এই লুষ্ঠিত ধন কয়দিন টিকিবে ? ধনী হইতে হইলে তথাকার মুসলমানদিগকে উপার্জক ও সঞ্চয়ী হইতে হইবে ; তাহারা হিন্দুদিগকে ন৷ তাড়াইয়াও তাহা হইতে পারে। কারণ, হিন্দুর তথায় শতকরা সাতজন মাত্র এবং ইংরেজদের মত দেশের প্রভুও নহে । উত্তরপশ্চিমলীমান্তে হিন্দুর উপর অত্যাচার হওয়ায়, প্রতিহিংসাবশতঃ হিন্দুবহুল প্রদেশসকলে মুসলমানদের ' উপর ঐন্ধপ অভ্যাচার হইষার কোন সম্ভাবনা নাই । স্বতরাং অন্যত্র সংৰ্ম্মীদের উপর অত্যাচারের ভাবনায়