পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] এখনও তাহার আবিষ্কার, মুদ্রাঙ্কন, প্রকাশ ও প্রচার চলিতেছে। যে-সকল গ্রন্থে শিথিবীর ভাবিবার ও চরিত্র গঠন করিবার অনেক বিষয় আছে তাহার প্রচারও পাঠক বিরল। এখন রাজনীতির চর্চাতে যেমন শিশু ও তরুণ, ছাত্র ও বেকার ব্যক্তি সতত নিরত, উদারনীতি লইয় বয়োজ্যেষ্ঠগণ ততোধিক বিব্রত। তাহার বশে অর্থোপার্জনের উদ্দেশ্যে গ্রন্থ রচনা করিতে বসিয়া লেখক বহুপাঠক আকর্ষণের চিন্তাতেই আকুল । সুতরাং দৃষ্টি সেই দিকে থাকায় অন্যদিক তইতে স্বতষ্ট ভ্রষ্ট হইয়াছে। শিক্ষা-দীক্ষার কথা মনে নাই। অবসর-রঞ্জন ও সহজে সাধারণের হৃদয় বিনোদন ও দৃষ্টি আকর্ষণই প্রধান উদ্দেশা হইয়া পড়িয়াছে । হাড়ি চড়াইয়া কলম ধরিলে যাহা হইবার তাহাই হইয়াছে। দোকানদারী বিজ্ঞাপনের বিকৃত-রুচি ছবির অনুকরণে সাধারণের উন্নতি শিক্ষা বা পাঠের জন্য প্রবর্তিত অনেক মাসিক পত্নিক এবং অনেক গ্রন্থও স্বরচি-বিগঠিত বিচিত্র চিত্রে পরিপূর্ণ। পত্রিকার বা গ্রন্থের মলাট উণ্টাইলেই নূতন পঞ্জিকার মত বহু বিজ্ঞাপনপত্র পার হষ্টতে পারিলে তবে আসল পত্রিকার পোল দেখা যায়। এইসকল বিজ্ঞাপনে যে কুরুচিপূর্ণ ছবি বা কুৎসিৎ ভাষা ব্যবহার হয় তাহার কথা দূরে। আসল পত্রিকায় বা গ্রন্থের আচ্ছাদিত কলেবরে তাহারই প্রবন্ধাবলির মধ্যে কচিৎ প্রাসঙ্গিক অধিক স্থলে অপ্রাসঙ্গিক, ভাবে নানা রঙ্গের দৃষ্টি গ্রাঙ্গী চিত্র দেখিতে পাওয়া যায়। অনেক কবিতা কুরুচিরচিত। সুরুচির পরিচয় দুষ্প্রাপ্য । এইরূপ বিধানের উপযোগিতার বিচার কে করিবে ? বোধ হয় কোনও সাধুভাবাপন্ন ব্যক্তি ইঙ্গর নিন্দ করায় একটি মাসিক পত্রিকা এই রুচিবিচারের টিপ্পনি করিতে গিয়া আদর্শ মাতৃমূর্তির চিত্ৰ দিয়াছেন- কেবল মস্তকটি এবং মস্তকেই হস্তদ্বয় ও পদদ্বয় সংলগ্ন-অম্লান্ত অঙ্গ লুপ্ত। কি সুরুচি ও পবিত্রতার পরিচয় ! অনেক দেশে দেবদেবীর পূজা উপলক্ষ্যে দেবালয়ের সন্নিকটে বা প্রাঙ্গণেই মেলা ঘসে । অনেকে দেব-দর্শন ও কলা-বিক্রয় উভয় উদ্দেশ্যেই যায়। অনেকে কেবল দেবদর্শন উদ্দেশ্যেই যায়। অধিকাংশ লোকই কিন্তু নাগরদোলায় চড়িতে, পাপর ভাজা খাইতে, মুখস পরতে বা রস ও রুচি ԳշՏՏ SAASA SAAAAS AAAAA ASAS A SAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASAS AAASASAAA AAASA SAAAAS AAASASASS জুয়া খেলিতে যায়। ইহাদের মধ্যে কাহারও দেব-দর্শনে মতি জন্মে কিনা বলা যায় না, তবে দেব-দর্শকের মধে) অনেকে পাপর ভাজা খায়। দোকানীর কি ? সে ত সাধারণের রুচির অনুযায়ী সামগ্রীর আহরণ করিয়া লাভের জন্তই আসে। লোকের রুচি বুঝিয়াই দোকানদার দোকান সাজায়। লেখাপড়ার বিষয়েও নানা লোকের নানা রসে রুটি । কিন্তু তাই বলিয়া মাসিক পত্রে সকল রসের সমাবেশ কেন ? যাহার যেটাতে রুচি সে সেইটা পাঠ করিবে বলিয়া ? না সকল পাঠকের সকল রসে রুচি জমাইবার জন্য ? শিখিবার পড়িবার অনেক বিষয় আছে। সেইসকল বিষয়ের বিস্তারই সকলের উপকারী। কোনও কোনও প্রবন্ধে ভাষা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, দেশবৃত্তান্ত বা বিজ্ঞানের আলোচনা থাকে। তাহা পাঠ করিয়৷ অনেকের উপকার ও শিক্ষালাভ হয় ও চিন্তাশক্তি জন্মে। কিন্তু তাহার সঙ্গে কুভাব-উদ্দীপক এক নর-নারীর ছবি ছাপার উদ্দেশ্য কি বুঝিতে পারা যায় না। অনেক পত্রিকায় যে কুরুচিপূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয় তাহাতে সাধারণের অপকারসাধন অনিবাৰ্য্য। ভাষার ললিতা, সৌন্দর্য বা ওজস্বিত৷ দেখাইতে অনেক বিষয় আছে। সংসারে নানা চরিত্রের লোক আছে এবং লোকের হৃদয়ে নানা ভাবের ফুলিঙ্গ আছে । কুচরিত্রের চিত্রও তাহার অলঙ্কার ও অঙ্গ-ভঙ্গীর অঙ্কন করিয়া এবং কুভাবের উদ্দীপনা করিয়া লেখক বা সম্পাদক সাধারণের কি উপকার করেন তিনিই জানেন। লেখক তাহার স্বীয় কীর্তি স্বয়ং প্রকাশ ও উপভোগ এবং স্বীয় শিষ্য ও দলভুক্ত ব্যক্তিকে নেপথ্যে তাহার প্রিয় রসের আস্বাদন করাইতে পারেন । কিন্তু সাধারণের জন্ত প্রবর্তিত স্থানে তাহার নিমন্ত্রণ বা আসন সমীচীন বোধ হয় না। সকল দেশেই সকল শাস্ত্র অনুসাবে অমঙ্গল রিপুর দমমই মানুষের প্রধান কর্তব্য ; যিনি তাহা করিতে পারেন তিনিই আদর্শ চরিত্র। সচ্চরিত্রেই স্বরুচির সঞ্চার হয়। কুরুচি অসচ্চরিত্রের পরিচয় দেয়। অসচ্চরিত্র বা কুরুচিগ্রস্ত ব্যক্তির উদ্ধারের জন্ত সুরুচিজনক রস তাহার সম্মুখে ধরা উচিত। সে যদি তাহার প্রিয় রসের অনুসরণ করিয়া লেখক বিশেষের দ্বারে যায় সে স্বয়ং যাইতে পারে।