পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-no AAAA SAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASJMMASAASAAAS যাত্রীর ভিড় এখনকার চাইতে বোধ হয় বেশী হইত। এখন যতগুলি ট্রেন প্রতিদিন গোয়ালন্দ হইতে কলিকাতায় আসে সেকালে তাহার ব্যবস্থা ছিল না। বোধ হয় দিনে একখান। ও রাত্রিতে একখানা—এই দুইখান ট্রেনই গোয়ালন্দ হইতে কলিকাতায় যাতায়াত করিত। সেকালের রেলের যাতায়াতের কথা মনে করিলে এবিষয়ে যাত্রীদের সুখসুবিধা কতটা বৃদ্ধি পাইয়াছে ইহা অনুভব করিয়া ভবিষ্যতের অনেক আশী হয়। কলিকাতায় প্রথম প্রবেশ কলিকাতার প্রথম দর্শনে মনে কি ভাব জন্মিয়াছিল বলিতে পারি না । তবে বিলাতের পল্লীগ্রাম হষ্টতে আসিয়া প্রথম লণ্ডনের আলো দেখিয়া ইংরেজ-বালকের মনে ঘেসকল ভাবের উদয় হয়, কেতবে পড়িয়াছি,~—কলিকাতার প্রথম দর্শনে আমার অন্তরে সেরূপ কোন ভাব জন্মে নাই, একথা বলিতে পারি। শিয়ালদহ হইতে একখানা তৃতীয় শ্রেণীর গাড়ীতে চাপিয়া সুন্দরীমোহনের সঙ্গে শ্রীহট্টের ছাত্রাবাসে যাইয়। উঠিলাম। সেকালে তৃতীর শ্রেণীর গাড়ীই সচরাচর পাওয়া যাইত। ছোট ছোট্ট ঘোড়া আর নড় ঝড়, গাড়ী ; ইহাই, এখন যেমন তখনও প্রায় সেরূপই, কলিকাতার সেকৃড়া গাড়ীর লক্ষণ ছিল। দ্বিতীয় শ্রেণীর গাড়ী বোধ হয় রাজপথে বেশী বাহির হইত না। কুক্‌ কোম্পানীর আড়গড় ছাড়া প্রথম শ্রেণীর গাড়ী কোথাও পাওয়া যাইত না । আর বিবাহের মিছিল ব্যতীত কেহ কুকের বাড়ীর গাড়ী ভাড়াও করিত না। £eraúts of Toro City of Palaces of কিন্তু প্রথম কলিকাতায় প্রবেশ করিয়৷ ইহার প্রাসাদাবলী দেখিয়া আমার মনে কোনো বিশেষ বিস্ময় বা উল্লাস জন্মে নাই । তখন কলিকাতার এখনকার চেহারাও ছিল না । অধিকাংশ রাজপথেই সারি সারি খোলার-ঘর ছিল । শিয়ালদহ হইতে বাহির হইয়া বহুবাজারের রাস্ত দিয়া কলেজ ষ্ট্রীটে পড়িয়া মেডিকেল কলেজের দক্ষিণে নিমু খানসামার লেনে শ্রীহট্টের ছাত্রদের মেসে ( mess ) যাইয়া উঠিলাম। এখন এ-রাস্তায় দুধারেই পাকা বাড়ী হইয়াছে। সুসজ্জিত দোকান-পাটে রাজপথের নূতন ঐ ফুটিয়াছে। সেকালে প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড এরূপ ছিল না। নিমু খানসামার লেন বহুদিন কলিকাতার মানচিত্র হইতে ধুইয়া মুছিয়া গিয়াছে। কেবল তাহার নাম লোপ পাইয়াছে, তাহ নহে ; বস্তুরও শেষ চিহ্ন পৰ্য্যন্ত আজ আর নাই। নিমু খানসামার লেন এখন মেডিকেল কলেজের ভিতরে আত্মবিসর্জন করিয়াছে। মেডিকেল কলেজও তখন এত বিস্তৃতি লাভ করে নাই। পুরাতন বড় বাড়ীটা মাত্র ছিল। উত্তরে ও দক্ষিণে খালি জায়গা পড়িয়া ছিল । উত্তরে সে-জায়গায় এখন শু্যামাচরণ লাহার চোখের হাসপাতাল হইয়াছে। দক্ষিণে আগেকার হাতার বাহিরে অনেকগুলি নূতন বাড়ী উঠিয়াছে। এইরূপে মেডিকেল কলেজ উত্তরে কলুটোলার রাস্ত হইতে দক্ষিণে বর্তমান ইডেন হাস্পাতাল রোড পর্য্যন্ত ছড়াইয় পড়িয়াছে । এই ইডেন হাস্পাতাল রোডের পূর্ব নাম ছিল চাপাতলা সেকেণ্ড লেন । এই চাপাতলা সেকেণ্ড লেন পশ্চিম মুখে যাইয়া চুনাগলিতে পড়িয়াছিল। চুনাগলির নামও বদলিয়া গিয়াছে। এখন ইহা ফিয়ার লেন হইয়াছে । সহরের রাস্তায় এই নামবিপৰ্য্যয়ে কলিকাতার প্রাচীন সামাজিক ইতিহাসের কতটা যে নিশ্চিহ্ন হইয়। মুছিয়। যাইতেছে এখনকার সহরের মিউনিসিপাল কৰ্ত্তার। তাহ কল্পনাও করিতে পারেন না । চাপাতলা নামের পিছনে একট। পুরাতন ইতিহাস ছিল। চুনাগলির নামের পিছনেও একটা ইতিহাস ছিল। চুনাগলি বলিতে আমরা সেকালের কলিকাতার ফিরিঙ্গিপাড়া বুঝিতাম। চুনাগলির সাহেব, বাঙ্গালা সাহিত্যে একটা বিশেষ পরিভাষা ছিল। ফিয়ার লেন সে-স্মৃতিকে জাগায় না। নিমু খানসামার লেন নামের পিছনেও সেরূপ একটা স্থানীয় সামাজিক ইতিহাস লুকাইয়া ছিল। গানসাম হইলেও নিমু একদিন কলিকাতার ঐ পল্লীতে একজন সমাজপতি ছিল। এইরূপ কত অলিগলির প্রাচীন নামের সঙ্গে কলিকাতার পুরাতন সামাজিক ইতিহাস জড়াইয়া ছিল। নূতন বাবুদের আত্মীয়-স্বজনবর্গের নাম জাহির করিবার বলবতী পিপাসাতে সে-সকল ঐতিহাসিক চিহ্ন লোপ পাইতেছে। যারা এমন সস্তায় আত্ম-প্রতিষ্ঠা বা স্বজন-প্রীতির পরিতৃপ্তি সাধন করিবার চেষ্টা করিতেছেন তারা একথা ভাবেন না যে, তাদের পরে যার কলিকাতা মিউনিসিপালিটীর কর্তা হইবেন তারাও আবার নিজেদের