পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] রাপিতে হইবে। স্মৃতিভাণ্ডারের মূলধন যাহাতে বৃদ্ধি হয় তাহা করিতে হইবে। বাঙ্গলায় একটা চলিত কথা আছে যে, “জলপুর্ণ কলসী থেকে যদি প্রত্যেক দিন একটুখানি ক'রে জল ব্যবহার করা হয় এবং কলসী পূর্ণ করিবার জন্ত যত্ন করা না হয়, তা হ’লে সময়ে কলসী শূন্ত হয়।” ভারতে জনসাধারণের কল্যাণের জন্ত ও জাতীয় অভু্যদয়ের জন্য কয়েকটা স্মৃতিভাণ্ডার স্থাপিত হইয়াছিল ; কিন্তু তাহাদের অবস্থা আজ শোচনীয়। জাতীয় ভাণ্ডার, তিলক স্বরাজ্য ফণ্ডের টাকা সব প্রায় খরচ হইয়। গিয়াছে—কাজ কিছুই হয় নাই—এবং ভবিষ্যতে কাজের আশা নাই। কিন্তু যখন স্বগীয় তারকনাথ পালিত মহাশয় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান-বিভাগের জন্য একটি ফণ্ড স্থাপন করেন তখন উহার প্রধান সর্ব এই হয় যে, কেহ মুলধন খরচ করিতে পারিবে না। মূলধন খরচ করিতে পরিবে ন—এই সত্ত না রাখিলে হয় ত উক্ত টাকা বিজ্ঞান-বিভাগের বাড়ী বা যন্ত্রাদি ক্রয়ের জন্য এতদিন শেষ হইয়া যাইত এবং বিজ্ঞানচর্চার কাজ বন্ধ হইত । হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ক্রোড়াধিক টাকা উঠান হইয়াছে ; উহার অধিকাংশ টাকা বাড়ী তৈয়ার করিতে ব্যবহার করা হইয়াছে। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় দেনায় জড়িত এবং নানা প্রকারের শিক্ষপ্রচারের কাজে হাত দিতে পারে না । কাজেই আমার মনে হয়, কেবল মুলধন রক্ষার জন্ত যত্ন করিলেই হইবে না। মূলধন বাড়াইবার জন্ত পন্থা অবলম্বন করিতে হইবে। রাজা রামমোহন রায়-স্মৃতিভাণ্ডার যদি স্থাপিত হয় তাহার মূলধন বৃদ্ধির জন্য কি করা প্রয়োজন ? প্রথমতঃ স্মৃতিভাণ্ডারের মূলধন দ্বারা খুব ভাল ব্যবসায়ের শেয়ার বা গভর্ণমেণ্ট কাগজ ক্রয় করা দরকার। অর্থাৎ মুলধন হইতে যাহাতে ভাল আয় হয়, অথচ মুলধন নষ্ট হইবার ভয় নাথাকে তাহার জন্ত যত্ন করা দরকার। দ্বিতীয়তঃ—মুলধনের আয়ের দশমাংশ প্রত্যেক বৎসর মূলধন বৃদ্ধির জন্ত মূলধনে জমা দেওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। তৃতীয়তঃ– প্রত্যেক বৎসর রাজা রামমোহন রায়ের জন্মদিনে ভারতে ও বিদেশে অর্থ সংগ্ৰহ করিয়া উহা ফণ্ডে জমা দেওয়া চাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, যদি ব্রাহ্মসমাজের শত বৎসরের উৎসব উপলক্ষে তিন লক্ষ টাকা মাত্র রাজা রামমোহন রায় ృచి-నీరి ভবঘুর্যের চিঠি brఫిలి S S S S S S S S S S S SAAAA SAS S S AAAAAJiAAMMMMAASzSMAMMAAAA স্বতি-ভাণ্ডারের জন্ত উঠান যায় এবং মূলধন বৃদ্ধির জন্ত পুৰ্ব্ব প্রস্তাবিত পন্থ অবলম্বন করা হয় তাহা হইলে দশ বৎসরের মধ্যে উক্ত মূলধন পাচ লক্ষ হইতে দশ লক্ষ বা ততোধিক হইবে। মূলধন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আয় বৃদ্ধি হইবে এবং নানা প্রকারের সৎকাৰ্য্য বাড়িবে। এখন কথা উঠিবে, যে, যদি রাজা রামমোহন রায়স্বতিভাণ্ডার স্থাপিত হয় তাহ হইলে উক্ত ভাণ্ডারের মূলধনের আয় কি ভাবে ব্যবহার করা উচিত । ভারতের কল্যাণের জন্ত শত পন্থায় কাজ করা যাইতে পারে। তবে রাজা রামমোহন রায়ের জীবনে তিনি যে-কাৰ্য্যের জন্ত প্রাণপণে ষত্ব করিয়াছিলেন সেই কাৰ্য্যগুলির জন্ত এই স্মৃতিভাণ্ডারের আয় ব্যয় করা উচিত। রাজ রামমোহন রায়ের জীবনে তিনটি প্রধান কাৰ্য্যপন্থা দেখা যায় । প্রথমতঃ, তিনি একজন ধৰ্ম্মবীর ; তিনি বর্তমান হিন্দুধৰ্ম্মের মধ্যে নূতন জীবন আনেন এবং তিনি সৰ্ব্বধৰ্ম্মের সার বুঝিবার জন্ত জীবন উৎসর্গ করিয়াছিলেন। দ্বিতীয়তঃ, তিনি ভারতের সর্বপ্রধান সমাজ-সংস্কারক, র্তাহার যত্নে সতীদাহ বন্ধ হয় ; তিনি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে, স্ত্রীশিক্ষার জন্ত বাল্যবিধবা-বিহারের জন্য শত বৎসর পূৰ্ব্বে যত্ন করিয়া গিয়াছেন। তৃতীয়তঃ—তিনি ভারতবাসীকে বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডব্যাপী কৰ্ম্মক্ষেত্র অনুসরণ করিবার ব্যবস্থা দেখিয়া গিয়াছেন। তিনি পতিত দিল্লীর বাদসাহের উকিল হইয়া, ভারতবাসীর প্রতিনিধিস্বরূপ প্রথমে ইংলণ্ডের রাজদরবারে ভারতের দাবী বুঝাইতে যত্ন করেন এবং ভারতের সেবায় বিদেশে প্রাণ দেন। আজ ভারতের হিন্দু যুবক ও যুবতীর “কালাপানীর পারে” গিয়া বিদ্যাভ্যাস করিয়া নিজেদের এবং দেশের কল্যাণের জন্ত কাজ করিতেছেন এবং ইহা শক্ত কাজ বলিয়। বুঝিতেও পারেন না। কিন্তু শতাধিক বৎসর পূৰ্ব্বে ব্রাহ্মণ রাজা রামমোহন রায় হিন্দু সমাজের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করিয়া পথ দেখাইয়। গিয়াছেন তাই আজ এসব কাজ মুসাধ্য। রাজা রামমোহন বুায় বর্তমান ভারতের ইতিহাসে সৰ্ব্বপ্রথম ও সৰ্ব্বপ্রধান বৃহৎ-ভারতপস্থী। মোট কথায় রাজা রামমোহন রায় স্মৃতি-ভাণ্ডারের আয় হইতে উক্ত তিন প্রকার কাজ করিতে হইবে।