পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-ab চোখ বড় ক'রে ও-কারের গোল সুরট অনেকক্ষ - টেনে চলল। নিস্তার থম্কে’ গেল, যেন মুক্ত নজর দিচ্ছে। মুক্ত বললে—“ছেলের মুখে দি মুড়ে জেলে । আমার হাড় গুড়িয়ে তবে শত্ৰুররা মরেছে...” কিন্তু মনে হল মুক্ত যেন একটি নিঃশ্বাস চেপে’ গেল । ভারি গলায় নিস্তার বললে—“ছেলের মাকে আমন কথা বলিস্নি, মুক্ত।” —“বলব না কেন তাই বল আমাকে। ছেলে— ছেলে--ছেলে-মায়ের গায়ে হাত তোলবার আগে তারা আঁতুড়ে মরে না কেন!”—বলে মুক্ত আঙ্গুল মটুকাতে লাগল। নিস্তারের মুখের দিকে চেয়ে আমি তাড়াতাড়ি অন্ত কথা পাড় লাম। উনি বলছিলেন, “বুড়র পিসির ছেলেদের কি খবর ?” হঠাৎ মনে পড়ে গেল ; বললাম, “ভালো কথা, নিস্তার আগাম্ তিনটি টাকা চেয়েছে, ছেলেরা আসতে চায় ; বলে, দাও বেীমা, বাবুকে ব’লে তিনটে টাকা আমার আগাম ; একবার এসে তারা তোমাদের পায়ের ধুলো নিয়ে যাক।” উনি হাস্লেন, বললেন,—“পায়ের ধূলোর দাম আরো বাড়াও ; ভদর-লোকের ভেতর চালাবার চেষ্টা করে।” কিন্তু টাকাটাও দিতে বললেন। নিস্তার টাকা নিয়ে, খুটে বাধলে ; তারপর আর কিছু দেখিনে বললে—“টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি, বেীমা, ধীরুর নামে পাঠিয়েছি। দু’ভেয়ে ঐ নিয়ে সখের ঝগড়া হবে... ...” নিস্তার সুখের হাসি হাস্লে । ছেলে দু’টি টাকা তিনটে নিয়ে খেলা ক’রে ঝগড় করছে, এ যেন তার মুখের ভাবে আমিও দেখতে পেলাম । প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড রোজই তাগিদ দিতাম—“কই নিস্তার তোমার সুরু ধীরু এল কই ?—” ছেলেরা এসে পৌছুতে দেরী করছে এ যেন তারই বড় অপরাধ। নিস্তার কাতর হয়ে বললে, “কেন যে দেরী করছে—তাই আমিও ভাব ছি বেীমা দিনরাত। আসবে নিশ্চয়। টাকার রসিদ যখন এসেছে।”...ব’লেই সে কাজে চ’লে গেল । আবার তখনই ঘুরে এসে বললে,-“আসবে তারা নিশ্চয়, বেীমা । আমি দেখতে চেয়েছি,-খরচ পাঠিয়েছি, তার! না এসে পারে ছেলেরা এলে যে আনন্দ হবে তারি ঢেউয়ে সে এখনই ভরে উঠেছে। আমার মনের কথা বোধ হয় নিস্তার টের পেয়েছিল ; বললে, “টাক তারা বাজে খরচ করবে না, আমার ছেলেরা তেমন নয় ---” সুরু ধীর এল না। কিন্তু মুক্ত একদিন যাকে নিয়ে এল, সে একেবারে নতুন মানুষ। মুক্ত চেচাতে লাগ ল—“কই ল, নিস্তার, দেখ এসে কে এসেছে", -- আমি বেরিয়ে এলাম । মুক্ত তাকে বললে,—“পেন্নাম কর আবার্গী।” প্রণাম ক’রে মেয়েটি বললে,—আমার বাড়াও গোঁটে, নিস্তারের দেশের মানুষ —” মুক্ত গলা ফাটাতে লাগ ল—“কৈলা নিস্তার-নিস্তার. নিস্তার • • •’ কিন্তু নিস্তারের আর দেখা নেই। আদর-আপ্যায়িত পান-সুপুরি আর একথা-সেকথার পর শুদোলাম,—“তুমি এলে, নিস্তারের ছেলে দুটিকে কেন নিয়ে এলে না ?” - মেয়েটি আমার দিকে হুঁ ক’রে চেয়ে রইল। আমি বলতে লাগ লাম—“নিস্তার তাদের আসার খরচ পাঠিয়েছে তিন টাকা। আমি বললাম বাবুকে, নিস্তার তার ছেলেদের