পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুস্তক-পরিচয়ের সমালোচনার সমালোচনা ন ছাপাত আমাদের নিয়ম হালুম বুড়ো—গ্রপ্যারীমোহন সেনগুপ্ত প্রীত। প্রবাসীকাৰ্য্যালয়, ১১ নং আপার সারকুলার রোড, কলিকাতা । মূল দশ पश्रॉम { সুকবি প্যারীমোহন-বাবু ইতিপূর্বে “কাফ্রিদের দেশ আফ্রিকায়" নামক পুস্তকে আফ্রিকার জঙ্গল-মরুভূমিতে জীব-জন্তুদের লড়াইয়ের কথা লিখিয়া শিশুদের আপনার জন হইয়াছিলেন। ছেলেদের উপযোগী রচনায় উপহার যথেষ্ট দক্ষতা আছে। এবারে তিনি প্রবাসী, মৌচাক, সন্দেশ প্রভৃতি মাসিক পত্রে প্রকাশিত তাহার লিখিত শিশুদের উপযোগী কবিতাগুলি সংগ্ৰহ করিয়া ডাহার “হালুম বুড়ো” পুস্তক বাহির করিলেন। এই বহুচিত্রিত মজাদার বইএ শিবঠাকুরের বিয়ে ও উপর ভূতপেত্নী বরযাত্রীদের কথা, ছেলে-যাত্রার দুর্য্যোধনের উরুভঙ্গের হাসির কবিতা, বাঘ-ভালুকের ছেলেচুরির কাহিনী, কাঠের পুতুলের ঝগড়ার গল্প ও ঘুমপাড়ানীয় গান, বর্ষার ছড়া ইত্যাদি কবিতাগুলি ছেলেমেয়ের খুব উপভোগ করিলে ও হাদিয়া গড়াইবে। কবিতাগুলি নানা ছন্দে লেখা : সমস্ত ছমাই ছেলেদের উপযোগী : তাহারা নাচিয়া নাচিয়া হয় করিয়া পড়িবে ও মাডিয়া যাইবে। মলাটের চিত্রটি ও ভিতরের ছবিগুলি খুব স্বল্পর হইয়াছে। পূজার সময় ছেলেমেয়েরা এই মজাদার কবিতার বই পড়িয়া আনন্দ পাইবে । ঘ বীরত্বে বাঙালী ; ব্যায়ামে বাঙালী-দুইখানিকই প্রণেতা শ্ৰীঅনিলচন্দ্র ঘোষ। প্রকাশক শ্ৰীহুরেশচন্দ্র সেন, এম-এ, ১৩ বাংলাবাজার, ঢাকা । প্রত্যেকখানির মূলা এক টাকা । সুপুষ্ট শরীরে সুস্থ মনের যদি অবস্থান ঘটে তাহা হইলেই মানসিক উৎকর্মের সস্তাবনা অত্যধিক । আমাদের বাংলা দেশে কয়েকটি মনীষী ও মহাপুরুষের জন্ম ঘটলেও আজ অবধি বাঙালী জাতিটা হাট জ্ঞানে বিদ্যায় ও বুদ্ধিতে সমাক্রূপে সমৃদ্ধ হইয়া উঠিতে পারে নাই । তাহার মুখ্য কারণ, বাঙালীর দেহ সুপরিপুষ্ট নয়,—দুর্বল ও শিথিল। আমরা শরীরবলের যত বেশী উৎকর্ষ সাধন করিতে পারিব, মানসিক কৃষ্টির ক্ষেত্রে আমরা সেই পরিমাণেই উন্নতি লাভ করিতে পারিব। সেউজষ্ঠ জাতিকে শরীরগঠন-চর্চার কার্য্যে র্যাহারা উৎসাহিত করিতেছেন উপহার জাতির গোড়া পত্তন কায়েমি করিতেছেন। আলোচ্য পুস্তক দুইখানি হাতে পাইয়াই আমরা আনন্দিত হইয়াছি, কেননা এই বই দুইটির উদেষ্ঠ শক্তিলাভে বাঙালীকে প্রলুব্ধ করা। বই দুইটিতে পৌরাণিক যুগ হইতে বর্তমান কাল অবধি বাঙালীর শক্তিকীৰ্ত্তি বধিত হইয়াছে। বহু বীর ও কুস্তিগীর বাঙালীর সংক্ষিপ্ত জীবন-কথা ও কৰ্ম্মকথার বিবৃতি ছাড়াও বই দুইটিতে ব্যায়ামে, ক্রীড়া-কৌশলে, ধনুৰ্ব্বিদ্যায়, অসিখেলায় ও লাঠিখেলায় বাঙালীর পারদর্শিত উল্লিখিত হইয়াছে। প্রাচীন ও আধুনিক অনেক বীরের ছবি থাকায় বই দুইটি লোভনীয় হইয়াছে । আমরা বই দুইটির বহুল প্রচার কামনা করি। ১৩৩৪ { —সম্পাদক ] বিধবা-বিবাহ-ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। প্রকাশক গ্ররাজকুমার ভট্টাচাৰ্য্য। প্রাপ্তিস্থান—৬২ আমহাষ্ট ষ্ট্রীট, কলিকাতা ও সমস্ত পুস্তকালয়। মূল্য পাচ সিকা । পুণ্যশ্লোক মহাত্মা বিদ্যাসাগর মহাশয় বাল-বিধবার দুর্দশ মোচনের জন্য যে দুঃখ ও পরিশ্রম স্বীকার করেন, উপহার জীবিতকালে তাহ সমাদৃত না হইলেও বর্তমানে বাংলা দেশে ও সারা ভারতবর্ষে উপহার সে সংস্কার-চেষ্টা সাফল্য-লাভের পথে অগ্রসর । ইহা আমাদের পরম সৌভাগ্যের কথা । যে-সমস্ত যুক্তি ও শাস্ত্রমীমাংসা প্রয়োগে তিনি বালবিধবার বিবাহ অনুমোদন করেন তাহ আবার দেশবাসীর সমক্ষে উপস্থাপিত করা একান্ত প্রয়োজন। এই প্রয়োজন বোধ করিয়া প্রকাশক মহাশয় গ্রন্থখানির পুনঃ প্রকাশ করিয়া বাঙালী জাতিকে উপকৃত করিয়াছেন। জাতীয়বোধ-জাগ্রত বাঙালী এ পুস্তকের যথাযোগ্য সমাদর করিবে, সন্দেহ নাই । ভিখারিণী—গ্রনলিনীনাথ দাশগুপ্ত। প্রকাশক গ্রশৈলেন্দ্র চন্দ্র ভাদুড়ি, ৩৩ গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেন, কলিকাতা । এক টাকা । কবিতার বই । কবিতাগুলি খুব মনাও নয়, খুব ভালোও নয় । কবিতাগুলিতে সারল আছে । সমাজ–উপাধ্যায় ব্ৰহ্মবান্ধব। বর্শন পাবলিশিং হাউস, ১৯৩ কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীট, কলিকাতা। দাম দশ আনা। ব্ৰহ্মবান্ধবের অপ্রকাশিত রচনাগুলি ক্রমে ক্রমে প্রকাশিত হইতেছে, ইহা অত্যন্ত আনন্দের কথা। প্রবর্তক-কাৰ্য্যালয় হইতে উপহার “আমার ভারত উদ্ধার” প্রকাশিত হইয়াছে। বর্তমান গ্রন্থের প্রকাশকও বাঙালীর কুতজ্ঞতাভাজন । বইটি প্রচারিত হইয়া বাঙালীকে হুচিস্তা প্রদান করুক-ইহাই আমাদিগের কামনা । বঙ্কিম-চিত্র—ন্ত্রীরামসহায় বেদাস্তশাস্ত্রী। প্রকাশক গ্ৰীক্তগদীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কমলালয়, কলেজ ষ্ট্রীট মার্কেট, কলিকাতা । এক টাকা । বেদান্তশাস্ত্রী মহাশয় যখন "প্রাচীন চিত্র" নামক পুস্তকে সংস্কৃত কাব্যাবলীর মনোরম পরিচয় প্রদান করেন তখন জামরা তাহাকে প্তাহার অধিকারক্ষেত্রেই বিচরণ করিতে দেখি, এবং সেখানে উপহার কৃতিত্বে মুগ্ধ হই। এখন হঠাৎ তাহার প্রণীত "বঙ্কিম চিত্র"হাতে পাইয়া উৎসুক হইয়া উঠিলাম তাহার আধুনিকত্বপ্রিয়তার কারণ অনুসন্ধানে । বইটি পড়িয়া দেখিলাম, তাহাৰু চিত্ত একেবারে আধুনিক ভাবে প্রভাবিত। তাহার বেদান্তশাস্ত্রী উপাধিতে ভড় কাইবার হেতু নাই, তাহা নারিকেলের ছোড়ার মত, ভিতরে কোমল শাস ও খ্রিষ্ণ জল বেশ আছে। শৈবলিনী, কুন্দনন্দিনী, রোহিণী, দলনী, গোবিন্দলাল প্রভৃতি কাহারও চরিত্রালোচনায় তিনি পিছ পাও হন নাই। উহার ভাষা সরল, প্রাঞ্চল ও মধুর। চরিত্র-ব্যাখ্যা অতিশয় স্বাভাবিক,