বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وا سراج তবু প্রবীণ গৃহিণীরা তাহাকে নিতান্তই খৃষ্টানী বলিয়া অগ্রাহ করিতেন। আনন্দময়ীর স্বামী কৃষ্ণদয়াল বাৰু কমিসেরিয়েটে কাজ করিতেন, আনন্দময়ী তাহীর সঙ্গে ছেলেবেলা হইতে পশ্চিমে কাটাইয়াছেন, তাই ভাল করিয়া গা ঢাকিয়া গায়ে কাপড় দেওয়া যে লজ্জা বা পরিহাসের বিষয় এ সংস্কার তাহার মনে স্থান পায় নাই। ঘর দুয়ার মাজিয়া ঘষিয়া ধুইয়া মুছিয়া, রাধিয়া বাড়িয়া, সেলাই করির, গুণতি করিয়া, হিসাব করিয়া, ঝাড়িয়া, রৌদ্রে দিয়া, আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশীর খবর লইয়া তবু তাহার সময় যেন ফুরাইতে চাহে না । শরীরে অসুখ করিলে তিনি কোনোমতেই তাহাকে আমল দিতে চান না—বলেন—“অমুখে ত আমার কিছু হবে না, কাজ না করতে পেলে বাচব কি করে ?” গোরার মা উপরে আসিয়া কহিলেন—“গোরার গলা যখনি নীচে থেকে শোনা যায় তখনি বুঝতে পারি বিনু নিশ্চয়ই এসেচে। ক'দিন বাড়ি একেবারে চুপচাপ ছিল— কি হয়েচে বল ত বাছ ? আসিস্নি কেন ? অমুখ বিমুখ করেনি ত ?” বিনয় কুষ্ঠিত হইয়া কহিল—“ন, মা, অসুখ না,—যে বৃষ্টিবাদল!” গোরা কছিল—“তাই বই কি ! এর পরে বৃষ্টিবাদল যখন ধরে যাবে তখন বিনয় বলবেন যে রোদ পড়েচে । দেবতার উপর দোষ দিলে দেবতা ত কোনো জবাব করেন না—আসল মনের কথা অন্তর্যামাই জানেন।” বিনয় কহিল—“গোরা তুমি কি বাজে বক্‌চ !” আনন্দময়ী কহিলেম—“তা সত্যি বাছা, অমন করে বলতে নেই। মানুষের মন কখনো ভাল থাকে কখনো মন্দ থাকে, সব সময় কি সমান যায়! তা নিয়ে কথা পাড়তে গেলে উৎপাত করা হয় । তা আয় বিমু, আমার ঘরে আয়, তোর জন্তে খাবার ঠিক করেচি।" গোর জোর করিয়া মাথা নাড়িয়া কহিল—“ন, মা, সে হচ্চে না, তোমাৰ ঘরে আমি বিনয়কে খেতে দেব না ।" আনন্দময়ী। ইস্তাই ত! কেন, বাপু, তোকে ত আমি কোনো দিন খেতে বলিনে-এদিকে তোর বাপ ত उग्नकङ्ग ७कांकांग्रेौ श्रछ ॐप्%एकन-वभांक न श्रण थांन न । প্রবাসী । ৭ম ভাগ বিষ্ণু আমার লক্ষ্মী ছেলে, তোর মত ওর গোড়ামি নেই, তুই কেবল ওকে জোর করে ঠেকিয়ে রাখতে চাস। w গোরা । সে কথা ঠিক, আমি জোর করেই ওকে ঠেকিয়ে রাখব। তোমার ঐ খৃষ্টান দাসী লছ মিয়াটাকে না বিদায় করে দিলে তোমার ঘরে খাওয়া চলবে না। আনন্দময়ী। ওরে গোরা, অমন কথা তুই মুখে আনিসনে। চিরদিন ওর হাতে তুই খেয়েছিস্—ও তোকে ছেলেবেলা থেকে মাস্থ্য করেচে। এই সেদিন পর্যন্ত ওর হাতের তৈরি চাটুনি না হলে তোর যে খাওয়া রুছত না ! ছোটবেলায় তোর যখন বসন্ত হয়েছিল লছমিয়া যে করে তোকে সেবা করে বাঁচিয়েচে সে আমি কোনে দিন ভুলতে পারব না । - গোরা। ওকে পেনসন দাও, জমি কিনে দাও, ঘর করে দাও, যা খুসি কর, কিন্তু ওকে রাখা চলবে না মা ! আনন্দময়ী। গোরা, তুই মনে করিস্ টাকা দিলেই সব ঋণ শোধ হয়ে যায়! ও জমিও চায় না, বাড়িও চায় না, তোকে না দেখতে পেলে ও মরে যাবে। গোরা। তবে তোমার খুস ওকে রাখ। কিন্তু বিমু তোমার ঘরে খেতে পাবে না। যা নিয়ম তা মানতেই হবে, কিছুতেই তার অন্যথা হতে পারে না। মা, তুমি এত বড় অধ্যাপকের বংশের মেয়ে তুমি যে আচার পালন করে চল না এ কিন্তু— - - আনন্দনয়ী । ওগো, তোমার মা আগে আচার পালন করেই চলত ; তাই নিয়ে অনেক চোখের জল ফেলতে হয়েচে–তখন তুমি ছিলে কোথায়? রোজ শিব গড়ে পুজে করতে বস্তুম আর তোমার বাবা এসে টান মেরে ফেলে ফেলে দিতেন। তখন অপরিচিত বামুনের হাতেও ভাত খেতে আমার ঘেন্না করত। সেকালে রেলগাড়ি বেশি দুর ছিল না— গোরুর গাড়িতে, ডাক গাড়িতে, পান্ধীতে, উটের উপর চড়ে কতদিন ধরে কত উপোস করে কাটিয়েটি—তোমার বাবা কি সহজে আমার আচার ভাংতে পেরেছিলেন ? তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন, বলে তার সায়েব মানবরা তাকে বাহব দিত, তার মাইনেই বেড়ে গেল— ঐ জম্ভেই তাকে এক জায়গায় অনেক দিন রেখে দিত— প্রায় নড়াতে চাইত না । এখন ত বুড়ে বলে চাকুরি