বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. ২য় সংখ্যা । ] শিকড়ের नानां বিকৃতি দেথিয়া পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ উদ্ভিদের অঙ্গ বিশেষে যে পৃথকৃ পৃথক্ ধৰ্ম্মের কল্পনা করিয়া আসিতেছিলেন, তাহা বাস্তবিকই অমূলক। আঘাত উত্তেজনার মাত্রা ও প্রয়োগ স্থান ভেদে কথনো রসপ্রবাহ এবং কখনো প্রকৃত উত্তেজনার প্রবাহ প্রাধান্ত লাভ করিয়া, উদ্ভিদের শাখামূলকে যে কত বিচিত্রভাবে বাকাইয়া বাড়াইতে পারে, তাহা আচার্য্য বস্তু মহাশয় শত শত পরীক্ষায় প্রত্যক্ষ দেখাষ্টয়াছেন। ইঙ্গ হইতে স্পষ্টই বুঝা যায়, উদ্ভিদের মূল ও কাণ্ডের ধৰ্ম্ম পৃথক নয়, উভয়েই আঘাত উত্তেজনায় একই প্রকারে সাড়া দিতে পারে। এখন ভুমধ্যাকর্ষণের উত্তেজনায় গুড়ির উপরদিকে যাওয়া ও শিকড়ের নীচে নামার কারণ প্রসঙ্গে আচাৰ্য্য বস্তু মহাশয় কি বলেন দেখা যাউক । বলা বাহুল্য এসম্বন্ধে আধুনিক উদ্ভিদতত্ত্ববিদগণ গুড়িও শিকড়ে এক একটা বিশেষ ধৰ্ম্মের আরোপ করিয়া যে সিদ্ধান্ত প্রচার করিয়াছিলেন, আচাৰ্য্য বস্তু মহাশয় তাহাতে মোটেই আস্তা স্থাপন করেন নাই । ইনি বলিতেছেন শাখা ও মূলের ধৰ্ম্ম একই —মধ্যাকর্ষণের উত্তেজনায় উহাদের একটায় রসপ্রবাহের সাড়া, এবং অপরটিতে আণবিক উড্রেজনার সাড়া কাজ করে বলিয়া, আমরা উদ্ভিদের ঐ দুই অংশে ভিন্ন ভিন্ন কাজ দেখিতে পাই। মনে করা যাউক, কিঞ্চিৎ দূরবর্তী স্থান হইতে কোষসামগ্রীর (Statoliths) ভারজনিত মৃত্যু উত্তেজনা একপাশ্ব বহিয়া শিকড়ে আসিয়া পৌছিল। এস্থলে প্রকৃত সাড়া প্রবাহ আসা অসম্ভব; কারণ মৃত্যু উত্তেজনায় কেবল দ্রুততর রসপ্রবাহের সাড়া চালিত হয়। কাজেই এখানে দূরবর্তী মৃদু উত্তেজন দ্বারা শিকড় যে বাকিয়া বুদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া, মাটির ভিতর প্রবেশ করবে, তাহাতে আর আশ্চৰ্য্য কি ! আবার মনে করা যাউক, বৃক্ষের গুড়ির সর্বাঙ্গে পরিব্যাপ্ত কোষসামগ্রীর চাপে, যেন সেটি প্রত্যক্ষভাবে উত্তেজিত হইয়া পড়িল । এস্থলে রসপ্রবাহের সাড়া কাজ করিতে পারিবে না, + কেবল প্রকৃত সাড়াই প্রাধান্ত লাভ করিয়া গুড়িকে বাকাইয়া দিবে। আমরা পূৰ্ব্বেই

  • কারণ আহত স্থানের কোষ হইতেই জল বহির্গত হইয়া দূরবর্তী স্থানে গ্লসপ্রবাহের সাড়ার উৎপত্তি করায়। এজন্য ঠিক আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে কেবল-প্রকৃত সাড়াই দেখা যায়।

মাথায় ঘোল । | "به ن দেখিয়াছি, প্রকৃত সাড়া ও রসপ্রবাহের সাড়া উদ্ভিদদেহকে ঠিক্‌ বিপরীত দিকে বাকাইয়া দেয়। সুতরাং সেই পুৰ্ব্বের উদাহরণে রস প্রবাহের সাড়ায়, শিকড়টা যে দিকে বাকিয়াছিল, এখানে প্রকৃত সাড়ায় গুড়িটা যে তাহার ঠিক্‌ বিপরীত দিকেই বাকিবে তাহাতে আর আশ্চর্য্য কি । শিকড়ের নীচের দিকে নামা ও গুড়ির উপরদিকে উঠাকে বৃক্ষদেহের দুইটি সম্পূর্ণ পৃথক ধৰ্ম্ম কল্পনা করিয়া, off častfāzēs: Geotropism, ar Apo-geotropism প্রভৃতি যে সকল শব্দ রচনা করিয়াছিলেন, সেগুলি যে কত নিরর্থক, আচার্য্য বস্থ মহায়য়ের পূর্ববর্ণিত আবিষ্কারগুলি হইতে- আমরা তাহ বেশ বুঝিতে পারি। নীচের দিকে নামা ও উপরের দিকে উঠা, শিকড় ও শাখার বিশেষ ধৰ্ম্ম নয়। জড়দেহে আঘাত উত্তেজনা দিলে, তাহার যে আণবিক বিকৃতি হয়, তাহাই একমাত্র জড়ের মূল ধৰ্ম্ম । উদ্ভিদের অঙ্গবিকৃতি উঠা নামা বঁকাচোরা সকলই জড় ও শক্তির সেই এক মহাধৰ্ম্ম দ্বারা সৰ্ব্বদাই নিয়মিত হইতেছে। শ্রীজগদানন্দ রায়। “মাথায় ঘোল।” কোন অপকৰ্ম্ম করিলে মাথায় ঘোল ঢালার কথা আমাদের দেশে প্রসিদ্ধ আছে। বৌদ্ধ জাতকগ্রন্থে এ বিষয়ে একটি গল্প পাওয়া যায়। নিম্নে তাহ অনুদিত হইতেছে— ভগবান (বুদ্ধ) যখন জেতবনে বিহার করিতেছিলেন, তখন তিনি আয়ুষ্মান লিকুণ্টক’ ভদ্রিকের বিষয় ইহা বলেন। আয়ুষ্মান লিকুণ্টক বৌদ্ধশাসনে প্রজ্ঞায় প্রসিদ্ধ, মধুরম্বর মধুরধৰ্ম্মকথক, তত্ত্বনির্ণয়োচিত জ্ঞানসম্পন্ন ও অত্যন্ত ক্ষীণাসব ছিলেন ; কিন্তু অশীতি স্থবিরের মধ্যে (দেহ) প্রমাণে নিকৃষ্ট, ও ‘সামনেরের (সামনের-প্রথম শিক্ষার্থী, শৈক্ষ, novice) স্তার ক্ষুদ্র ছিলেন,–যেন ক্রীড়ার জন্ত নিৰ্ম্মিত হইয়াছেন । এক দিন তিনি তথাগতকে বন্দনা করিয়া জেতবনের অন্তগূহে প্রবেশ করিলে, “দশবলকে (বুদ্ধকে) বন্দনা করিব”— এই মনে করিয়া ত্রিশজন জানপদ ভিক্ষু জেতবনে প্রবেশ পূর্বক বিহারের অন্তগূহে স্থবিরকে (লকুণ্টক) দেখিতে