পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\S2 বংশ-পরিচয় । হয়, তাহার পরিধানে হলুদ রঙ্গের পোষাক ছিল, যুবরাজ আপনি পরিচ্ছদের সহিত সেই ব্যাধের পরিচ্ছদের বিনিময় করেন এবং ব্যাধের কমণ্ডলুটি লইয়া তিনি মগধের রাজগৃহে উপস্থিত হন। এই পথ তিনি পদব্ৰজেই আসিয়াছিলেন। রাজগৃহ তখন রাজা বিশ্বিাসারের রাজধানী। তিনি বাড়ী বাড়ী খাদ্য চাহিলেন, গৃহস্থ্যগণ এই নবীন সন্ন্যাসীর অসামান্য রূপসৌন্দৰ্য্যদর্শনে মুগ্ধ হইয়া তাহাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করিতে লাগিল । কেহ কেহ বলিতে লাগিল, “সুৰ্য্যদেব নিশ্চয়ই ছদ্মবেশে ভূতলে অবতীর্ণ হইয়াছেন।” কেহ কেহ বা রাজা বিম্বিসারের নিকটে গিয়া বলিল, “আপনার রাজধানীতে এক অপূৰ্ব্ব সুন্দর সন্ন্যাসী আসিয়াছে, সেই সন্ন্যাসীকে দেখিলে একেবারে মোহিত হইয়া যাইতে হয়, কোটি চন্দ্ৰ যেন তাহার দেহে মূৰ্ত্তিমান হইয়৷ প্ৰকাশিত হইয়াছে।” রাজা এই কথা শুনিয়া এই নবীন সন্ন্যাসীর গতিবিধি পৰ্য্যবেক্ষণের জন্য লোক নিযুক্ত করিলেন, লোকেরা সিদ্ধার্থের পশ্চাদনুসরণ করিয়া পাণ্ডব পৰ্ব্বতের গুহা পৰ্য্যন্ত গেল । সে দেখিল, দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া যে খাবার লইয়াছেন সিদ্ধার্থ সেই গুহায় গিয়া তাহ খাইলেন। রাজার প্রেরিত লোকেরা এইসমস্ত দেখিয়া রাজার নিকট সংবাদ দিল এবং রাজা বিম্বিসার এই নবীন সন্ন্যাসীকে দেখিবার নিমিত্ত তথায় আগমন করিলেন। সন্ন্যাসীর রূপলাবণ্যদর্শনে রাজা। এতদূর মোহিত হইলেন যে, তিনি তঁহাকে রাজগৃহে থাকিবার জন্য অনুরোধ করিলেন এবং একথাও বলিলেন, “আপনি যদি রাজগৃহে অবস্থান করেন। তবে আপনাকে আমি অৰ্দ্ধেক রাজত্ব দিব।” বোধিসত্ত্ব সিদ্ধাৰ্থ বলিলেন, “আমি বুদ্ধত্ব লাভ করিব-এই আশাতেই হিমালয়ের পাদদেশস্থ কপিলাবস্তু রাজ্য ছাড়িয়া এখানে আসিয়াছি, অতএব আমাকে রাজ্যের প্রলোভন আর দেখাইবেন না, আমি এখন বুদ্ধত্ব-লাভের জন্য বেড়াইব, তার পর বুদ্ধত্ব লাভ করিলে আপনার রাজধানীতে আসিব ।”